সন্ধ্যা নামছে ধীরে ধীরে। আকাশ জুড়ে সীসার মতো মেঘ, আর তার ভেতর দিয়ে ছিটেফোঁটা করে ঝরছে বৃষ্টি। শহরের ব্যস্ত রাস্তাগুলো কেমন যেন ধুয়ে-মুছে একটুখানি শান্ত হয়ে এসেছে। রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে ধোঁয়া ওঠা কাপগুলো গুনগুন করে গন্ধ ছড়াচ্ছে।
রিমি জানালার পাশে বসে চুপচাপ বৃষ্টি দেখছিল। হাতে একটা পুরোনো ডায়েরি, যেখানে অনেক বছর আগের কথাগুলো ধরা আছে। এইরকমই এক বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় প্রথম দেখা হয়েছিল তাদের।
তখন কলেজে পড়ত রিমি, আর অভি ছিল প্রতিবিপরীত একটা বিভাগের ছাত্র। কিন্তু দুজনের দেখা হতো লাইব্রেরির নিরিবিলি কোণে, বা পুরোনো ক্যাফেটেরিয়ার সেই কোণচেয়ারটাতে বসে। অভি সবসময় বলত, "বৃষ্টি মানেই তো স্মৃতি। তুমি থাকলেই সেটা গল্প হয়ে যায়।"
আজ এত বছর পরেও সেই কথা যেন বাতাসে ভেসে আসে। অভি নেই, কিন্তু স্মৃতি রয়ে গেছে।
হঠাৎ দরজায় টোকা পড়ে। রিমি চমকে ওঠে। দরজা খুলতেই দেখা গেল ছোট্ট একটা বালক—ভিজে গা, হাতে একটা ছাতা।
— "আপনার ছাদ থেকে একটা বল পড়ে গেছে,সেটা দিতেই এলাম।"
রিমি বল হাতে নেয়। কিন্তু ছেলেটির চোখে যেন কোনো অদ্ভুত চেনা ছায়া।
রিমি দরজা বন্ধ করে আবার জানালার ধারে ফিরে আসে। ডায়েরিটা আবার খোলে।
বৃষ্টির ধারা আরও ঘন হচ্ছে। অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া কিছু কথা যেন আবার নতুন করে গল্প হয়ে বেঁচে ওঠে—একটা বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যায়...