আমি তাকে ভালোবাসিনি শুধু—
আমি তাকে খুঁজেছি জন্ম আর মৃত্যুর মাঝখানে,
যেখানে সময় থমকে দাঁড়ায়,
যেখানে বাস্তবেরা প্রশ্ন করে—
"তুমি কে, আমি কে?"
সে আমার প্রেমিকা নয়,
সে যেন এক দর্শনের প্রশ্নপত্র—
প্রথম পাতায় লেখা:
"তোমার অস্তিত্ব কি কেবলই দেহ?"
আর শেষ লাইনে লেখা:
"সে যদি থাকে না, তুমি কেন এখনও বেঁচে?"
আমি তার চোখে তাকিয়ে আত্মা খুঁজে পেয়েছি,
সে চোখ দুটি যেন ক্যানভাস—
যেখানে ঈশ্বর আঁকেন জীবন আর বিভ্রম।
তাকে ছুঁতে গিয়েছি,
আর ঠেকেছি নিজস্ব অস্তিত্বের শূন্যতায়।
তার ঠোঁট থেকে পড়া একফোঁটা নিঃশ্বাস
আমার চেতনার ভিতর ধর্মীয় ধ্যানের মতো বাজে।
প্রেম তখন আর চুম্বন নয়,
প্রেম তখন প্রশ্ন—
"তুমি কি নিজেকে জানতে চাও, না তাকে?"
আমি ভাবি,
তার স্পর্শে কেন আত্মা কেঁপে ওঠে—
শুধু স্নায়ুর খেলা?
নাকি সত্যিই সে আমার মহাবিশ্বের ছায়া,
যার মাঝে আমি নিজেকে প্রতিফলিত দেখি?
কোনো এক অদৃশ্য চেতনার ঘরে
সে আমার হাত ধরে বলে,
"আমি তোমার প্রেমিকা নই, আমি তোমার বোধ।
যখন তুমি নিজেকে ভালোবাসবে,
তখনই আমাকে খুঁজে পাবে।"
আর আমি বোঝি,
প্রেম মানে কোনো নারীকে ভালোবাসা নয়—
প্রেম মানে নিজেকেই খুঁজে ফেরার যাত্রা,
একটা মুখোশ সরিয়ে
আরেকটা মুখোশের পেছনে ছুটে চলা...
প্রেম মানে তাকে চাওয়া নয়—
প্রেম মানে তার হারিয়ে যাওয়ায়ও অস্তিত্বের অর্থ খুঁজে পাওয়া।
প্রেম মানে নিঃসঙ্গতার মাঝেও
তার নামটি ধ্যানমন্ত্রের মতো উচ্চারণ করা,
যেন সে এক আত্মার নিরব দর্শন—
জীবনের প্রশ্নের মতোই চিরকাল অপূর্ণ, অথচ অপরিহার্য।