Posts

গল্প

আমাকার স্কুলজীবন

May 24, 2025

nh siyam

82
View

আমার নাম আমাকা। ছোটবেলা থেকেই আমি ছিলাম কৌতূহলী ও স্বপ্নবিলাসী। স্কুলে প্রথম দিনটি আজও মনে পড়ে—সাদা ইউনিফর্ম, নতুন বইয়ের গন্ধ, আর মায়ের হাত ধরে স্কুলের গেট পেরিয়ে যাওয়া। তখন বুঝিনি, এই স্কুলই হবে আমার দ্বিতীয় বাড়ি।

প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সময় আমি খুব লাজুক ছিলাম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুদের সঙ্গে বন্ধন গড়ে উঠল। ক্লাসে আমরা একসঙ্গে পড়তাম, খেলতাম, আর টিফিন ভাগ করে খেতাম। শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছিলেন আমাদের পথপ্রদর্শক। তারা শুধু পাঠ্যবইয়ের জ্ঞানই দেননি, জীবনের মূল্যবান শিক্ষা দিয়েছেন।

স্কুলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতাম। একবার বার্ষিক নাটকে আমি 'রাণী' চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। মঞ্চে দাঁড়িয়ে দর্শকদের করতালিতে যে আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম, তা আজও আমার জীবনের পাথেয়।

তবে সব সময়ই দিন ভালো কাটেনি। অষ্টম শ্রেণিতে গণিতে খারাপ ফল করেছিলাম। খুব মন খারাপ হয়েছিল। কিন্তু আমার গণিত শিক্ষক আমাকে আলাদা করে সময় দিয়ে বুঝিয়েছিলেন। তার উৎসাহে আমি আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই এবং পরবর্তী পরীক্ষায় ভালো ফল করি।

স্কুলের লাইব্রেরি ছিল আমার প্রিয় জায়গা। নতুন নতুন বই পড়তে ভালো লাগত। সেখান থেকেই লেখালেখির প্রতি আগ্রহ জন্মায়। স্কুল ম্যাগাজিনে আমার লেখা প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়, যা আমাকে লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখায়।

দশম শ্রেণিতে উঠে পড়াশোনার চাপ বেড়ে যায়। কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ স্টাডি, শিক্ষকদের সহায়তা এবং নিজের পরিশ্রমে আমি ভালো ফল করি। স্কুলের শেষ দিনটি ছিল আবেগঘন। বন্ধুবান্ধব, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিদায় জানাতে চোখে জল এসেছিল।

স্কুলজীবন আমাকে শুধু শিক্ষিতই করেনি, মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে। শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা, সহানুভূতি—এই গুণগুলো আমি স্কুল থেকেই শিখেছি। আজ আমি যে অবস্থানে আছি, তার পেছনে আমার স্কুলের অবদান অনস্বীকার্য।

স্কুলের স্মৃতিগুলো আজও মনে পড়ে। সেই বন্ধুরা, সেই ক্লাসরুম, সেই হাসি-কান্না—সবকিছুই আমার জীবনের অমূল্য সম্পদ। আমি কৃতজ্ঞ আমার স্কুলের প্রতি, যা আমাকে জীবনের পথে চলার শক্তি ও সাহস দিয়েছে।

Comments

    Please login to post comment. Login