ফুলগাছ
আমি ভাঙা পাত্রে ফুল গাছ বুনে দেই,
বহু কষ্টে বয়ে আনা বেলে মাটিতে।
আমার সার, কিটনাশক কেনার পয়সা নেই,
মাটিও খুব অল্প দিতে পারি।
এই ইট পাথরের শহরে এতো মাটি কোথায় পাবো?
আর বহুতল ভবনে মাটি টেনে তোলা কি চারটি খানি কথা?
এই সার বিহীন যৎসামান্য মাটিতেই আমার ফুলগাছ বেড়ে ওঠে, আমায় ফুল দেয়।
আমার ফুল গাছেরা জানে, তাদের এই অভিভাবকের সামর্থ নেই তাদের যথেষ্ট পুষ্টিকর মাটি দেবার। তাই তারা অল্পতেই তুষ্ট হয়ে, নিজেদের মতো করে বেড়ে ওঠে।
কিন্তু আমি তুষ্ট হতে পারি না।
আমি আমার ফুল গাছেদের বলি, "একি এতো ছোট কেন তোদের ফুল? এমন দূবল কেন ডালপালা?
ঐ পাশের বাড়ির বারান্দার গাছগুলোকে দ্যাখ!
কতো হৃষ্টপুষ্ট আর বড়ো বড়ো ফুল ফুটেছে পুরো টব জুড়ে, দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।
ওরাও জল খায়, তোদের কি আমি জল দেই না?
শত ব্যাস্ততা অসুস্থতা সবকিছুর মধ্যেও তো আমি প্রতিদিন তোদের জল দেই। তাও কেন তোরা ভালো ফুল ফোটাতে পারিস না?
আমার গাছেরা অভিমানী সুরে বলে,
" শুধু জল দিলেই কি হয়? তুমি জানো, ওদেরকে গার্ডেন সয়েলে লাগানো হয়েছে, তাও কম্পোস্ট সার আর কোকোপিট মেশানো মাটিতে। আর ওরা সবসময় শুধু জল খায় না। মাসে দুবার ওদের খৈল ভেজানো জল দেয়।
আমি বললাম, আমি গার্ডেন সয়েল, কম্পোস্ট সার আর খৈল নাহয় দিতে পারি না। তাই বলে কি তোদের জন্য কিছুই করিনি আমি? এমন অকৃতজ্ঞ তোরা?
ওরা বললো- আমরা অকৃতজ্ঞ নই, বরং তুমিই মধ্যবিত্ত বাঙালি বাবা মায়ের মতো। সন্তানকে যতটুকু দাও তার চেয়ে বেশি প্রত্যাশা করো সন্তানের কাছে।
তারপর আমিও ভাবলাম, সত্যিই আমি আর মধ্যবিত্ত বাবা মায়েরা সন্তানদের পর্যাপ্ত সুযোগ না দিয়েও পর্যাপ্ত সাফল্য প্রত্যাশা করি।
সৌদামিনী (আফিয়া আঞ্জুম সুপ্তি)
০৫/০১/২০২১
আমি ভাঙা পাত্রে ফুল গাছ বুনে দেই,
বহু কষ্টে বয়ে আনা বেলে মাটিতে।
আমার সার, কিটনাশক কেনার পয়সা নেই,
মাটিও খুব অল্প দিতে পারি।
এই ইট পাথরের শহরে এতো মাটি কোথায় পাবো?
আর বহুতল ভবনে মাটি টেনে তোলা কি চারটি খানি কথা?
এই সার বিহীন যৎসামান্য মাটিতেই আমার ফুলগাছ বেড়ে ওঠে, আমায় ফুল দেয়।
আমার ফুল গাছেরা জানে, তাদের এই অভিভাবকের সামর্থ নেই তাদের যথেষ্ট পুষ্টিকর মাটি দেবার। তাই তারা অল্পতেই তুষ্ট হয়ে, নিজেদের মতো করে বেড়ে ওঠে।
কিন্তু আমি তুষ্ট হতে পারি না।
আমি আমার ফুল গাছেদের বলি, "একি এতো ছোট কেন তোদের ফুল? এমন দূবল কেন ডালপালা?
ঐ পাশের বাড়ির বারান্দার গাছগুলোকে দ্যাখ!
কতো হৃষ্টপুষ্ট আর বড়ো বড়ো ফুল ফুটেছে পুরো টব জুড়ে, দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।
ওরাও জল খায়, তোদের কি আমি জল দেই না?
শত ব্যাস্ততা অসুস্থতা সবকিছুর মধ্যেও তো আমি প্রতিদিন তোদের জল দেই। তাও কেন তোরা ভালো ফুল ফোটাতে পারিস না?
আমার গাছেরা অভিমানী সুরে বলে,
" শুধু জল দিলেই কি হয়? তুমি জানো, ওদেরকে গার্ডেন সয়েলে লাগানো হয়েছে, তাও কম্পোস্ট সার আর কোকোপিট মেশানো মাটিতে। আর ওরা সবসময় শুধু জল খায় না। মাসে দুবার ওদের খৈল ভেজানো জল দেয়।
আমি বললাম, আমি গার্ডেন সয়েল, কম্পোস্ট সার আর খৈল নাহয় দিতে পারি না। তাই বলে কি তোদের জন্য কিছুই করিনি আমি? এমন অকৃতজ্ঞ তোরা?
ওরা বললো- আমরা অকৃতজ্ঞ নই, বরং তুমিই মধ্যবিত্ত বাঙালি বাবা মায়ের মতো। সন্তানকে যতটুকু দাও তার চেয়ে বেশি প্রত্যাশা করো সন্তানের কাছে।
তারপর আমিও ভাবলাম, সত্যিই আমি আর মধ্যবিত্ত বাবা মায়েরা সন্তানদের পর্যাপ্ত সুযোগ না দিয়েও পর্যাপ্ত সাফল্য প্রত্যাশা করি।
সৌদামিনী (আফিয়া আঞ্জুম সুপ্তি)
০৫/০১/২০২১