পুনের এক ছোট্ট শহরে জন্ম নেয়া গনেশ ছোটবেলা থেকেই অনুভব করত, সে যেন ভুল শরীরে বন্দী। স্কুলে শিক্ষক যখন জিজ্ঞেস করেন, "বড় হয়ে কী হতে চাও?" গনেশ নির্দ্বিধায় উত্তর দেয়, "আমি মা হতে চাই।" এই অপ্রচলিত উত্তর শুনে পুরো ক্লাস হেসে ওঠে, আর শিক্ষক বিরক্ত হন। বাড়িতে গনেশ মায়ের শাড়ি পরে আয়নার সামনে দাঁড়ায়, লাবণী নাচে মগ্ন হয়। কিন্তু পুলিশ অফিসার বাবা এই আচরণ মেনে নিতে পারেন না। মায়ের মৃত্যু ও বাবার অবহেলায় গনেশ বাধ্য হয় বাড়ি ছেড়ে মুম্বাইয়ের পথে পা বাড়াতে।
মুম্বাইয়ে এসে গনেশ নিজের পরিচয় খুঁজে পায়, নতুন নাম নেয় গৌরী। তৃতীয় লিঙ্গের কমিউনিটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সে বুঝতে পারে, তার মতো আরও অনেকেই সমাজের অবহেলার শিকার। গৌরী কেবল নিজের জন্য নয়, পুরো কমিউনিটির অধিকারের জন্য লড়াই শুরু করে। একসময় সে একটি অনাথ শিশুকে দত্তক নেয়, মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করে।
গৌরীর জীবনের সবচেয়ে বড় সংগ্রাম ছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্টে তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি আদায় করা। বহু বাধা, অবহেলা ও কষ্টের পর, ২০১৪ সালে আদালত তৃতীয় লিঙ্গকে স্বীকৃতি দেয়। এই জয় শুধু গৌরীর নয়, পুরো কমিউনিটির।
গৌরীর গল্প আমাদের শেখায়, আত্মপরিচয়ের জন্য লড়াই, সমাজের বাধা অতিক্রম করে নিজের জায়গা করে নেওয়া, এবং ভালোবাসা ও মমতার মাধ্যমে পরিবর্তন আনা সম্ভব।