প্রাপ্তি
৩রা জুন ২০২৫
লোকটা ঠিক সাপের মতো করে কথা বলছিল যেমনটা পেপারের গল্পে পড়া হ্যারি পটারের ছিল এবং তার কথাগুলো সব উল্টো ছিল/ সন্ধ্যেবেলা/ খোলা মাঠের মধ্যে/ঠান্ডা পড়বে পড়বে এমন একটা ভাব আছে/আমার সেখানে যাওয়ার কথা না আমার শরীরটা ভালো লাগছিল না সেই জন্য/ তারপরও আসতে হলো/আমি জানি আমি অসুস্থ তারপর আমার কিছু গাজার প্রয়োজন ছিল/আমি সামনে এসে বস্তির লোকটা তার কথা থামিয়ে দিল/ তখনও সে সাপের মতো করে কথা বলছিল/হঠাৎ আমাকে দেখে প্রসঙ্গ থামিয়ে দিল/মনে হচ্ছিল তার চোখটা জ্বলজ্বল করছিল/ আমি তাকাতেই সেই জিনিসটা আর দেখতে পেলাম না/
সে আমাকে বলল তো শরীর খারাপ তুই এখানে কি করিস?কেন এসেছিস তা আমি জানি অবশ্য/তবে আজকে যেটা আছে সেটা অন্তত চার দিন আগের/তোর জরটা আপাতত তিনদিন থাকবে কিছুদিন আগে আমারও হয়েছিল/এই গ্রামের সবাই কি সেই জ্বর পেয়েছিল/শুধু রাতের দিকে যে জ্বরটা আসে/
আমি বললাম ঘাস দিয়ে দাও তাড়াতাড়ি চলে যাই/
সে বলল আজ তোকে আমি ঘাস দিতাম না তবে তোর চা টা খুব মজার তোর চা খেয়ে যদি ভালো লাগে তবে আমি তোকে ঘাসটা দেব/তোকে আমি আজকে একটা অদ্ভুত জিনিস দেব/ঘাসের সঙ্গে/কোথায় পেয়েছি জানিস গতকালকের রাত্রে যে হালকা বৃষ্টি হলো সেটার সঙ্গে মাঠে কিছু পড়েছিল/দেখতে তো মুক্তার মত/
আমি পাশে গিয়ে চা বানাতে লাগলাম/ একটা জিনিস খেয়াল করলাম আমি যতবার ম্যাচ জ্বালাতে চাই ততবার আগুন নিভে যাচ্ছে/ ম্যাচের কাঠি খুব অল্প ছিল/ খুব কষ্ট করে দিয়ে তারপরে আমি লাকড়িতে জ্বালাবো/ কিন্তু তখনও গোবরের শুকনো গন্ধ/পাত্রটা অনেক পুরনো হাতলের অবস্থা খুবই খারাপ সেটাকে গামছা দিয়ে খুব কায়দা করে ধরতে হবে/ চুলার ভাপে হাত ঘেমে যাচ্ছিল/পাঁচ মিনিটেই হয়ে যাওয়ার কথা আমি জ্বাল দিতে হয়েছে চা টা/যত জাল দেওয়া হয় তত যা ভালো হতো থাকে/চুলার পাশে ছিল ঢাকনা খোলা একটা কনডিস মিল্ক/তাতে একটা মেয়ের ছবি ছিল/অনেকটা দেখতে মধু বালার মত/কিন্তু ছবিটা এমন ছিল খুবই উগ্র মনে কামনা জাগানোর মত/
এই নাও তোমার চা ঘাস দাও তাড়াতাড়ি চলে যাই আর কি যেন দেখাবে সেটা দেখাও তাড়াতাড়ি/সে আমাকে দেখতে ট্যাবলেটের মতন একটা জিনিস দিল যেটা স্বাভাবিক ছোট কেমন মুক্তার মত লাগে/ বলল এটা বাড়িতে গিয়ে জিহ্বার নিচে রেখে দিবি তারপরে দেখবি কি দেখিস/আমার কাছে একটু অবাক লাগল একদম মুক্তার মত/
চা কেমন হইছে?
অতি চমৎকার/তুই যে এলাচি দিলি সেটার আমেজ খুব ভালো লাগে/এখনো কি পকেটে এলাচি রাখিস?
হঠাৎ মনে হল আমার বাম কান চুলকাচ্ছে/ সেটা চুলকাতে চুলকাতে বললাম/ তুমি তো বললে রাখতে/ এটাতে অর্থ-কষ্ট দূর হয়/পকেটে ঘ্রাণটা ঠিকই থাকে টাকা আসুক বা না আসুক/
আমি তার হাত থেকে সেই পাথরগুলো নিলাম ছোট ছোট/পাথর বলা কি ঠিক হচ্ছে দেখতে তো ট্যাবলেটের মত লাগে/
বাসায় এসে স্টাডি টেবিলের চেয়ার তার পাশে বসেছি/আর নিমাইয়ের কথা চিন্তা করছিলাম/ সে আমাকে যা দিয়েছে সেটা আমার একবার চেষ্টা করব কিনা তা নিয়ে একটু দ্বিধা দ্বন্দ্বের মধ্যে আছি/ যদি খারাপ কিছু হয়ে যায় তখন? তার সেই এলাচির তদবির আমার কাছে সব সময় সন্দেহ লাগে/তবে আজব বিষয় হচ্ছে সেদিন ফিরে আসার সময় রাস্তাতে কিছু টাকা পেয়েছিলাম/ কারো ওয়ালেট/ ভিতরে কোন এড্রেস ছিল না/ বেশ কিছু টাকা ছিল/ আমার মোটামুটি তিন মাস চলে যাবে সেই রকম টাকা/আমি অবশ্য টাকাটা নেওয়ার আগে আশেপাশে দেখে নিচ্ছিলাম কেউ কোনো চালাকি করল কিনা/
স্টাডি টেবিলের চেয়ার টেনে কিছুদূর নিলাম এবং তাতে বসলাম/ তারপর পকেট থেকে ঘাসটা বের করে সেখএখান থেকে সেই ট্যাবলেট গুলো গাছ থেকে আলাদা করলাম পরিষ্কার করুন এমন মিক্সড হয়েছিল/
জিহবার নিচে আমি ট্যাবলেটটা রাখার পরেই কেমন যেন খিচুনির মত হল/ মনে হচ্ছিল সারা শরীরে বরফ লাগিয়ে দিয়েছে/বৃষ্টিটা কেমন যেন ঘোলা লাগলো/ মনে হচ্ছিল নৌকাতে আছি/চারিপাশে কেমন ফিসফিসের শব্দ হচ্ছিল/ মনে হচ্ছিল সবাই পরিচিত/ কিন্তু তাদের কাউকেই দেখতে পাচ্ছিলাম না/ একটা চিকন আলোর রেখার মতো চারিদিকে কেমন ঘুরপাক খাচ্ছিল/ ঝড়ের বাতাসের মত/মনে হচ্ছিল আমার সামনেই অনেক পরিচিত কেউ একজন বসে আছে আমি তাকে ভালো মতো দেখার চেষ্টা করলাম কিন্তু তাকে কিছুতেই দেখা যাচ্ছিল না কিন্তু সে যে তাকিয়ে আছে সেটা বুঝা যাচ্ছিল/হঠাৎ সেটা ছায়ার মত হল এবং আমার কাছে আসলো/তার থেকে তখন ছায়াটা দূর হয়ে যাচ্ছিল আস্তে আস্তে তাকে ঘিরে কতগুলো জোনাকি ছিল/রংটা কেমন যেন অদ্ভুত সাধারণত জোনাকির রং এরকম হয় না/ তার শরীর থেকে করা কফির গন্ধ করছিলেন/ সেই সঙ্গে কোন একটা অজানা ফুলএর ঘ্রাণ ছিল/
তার হাতে একটা চকের মত ছিল সে মাটিতে আমার নাম লিখল/তারপরে হঠাৎ একটা বাতাস আসলো তার পোশাকের থেকে নামটা আবার মিশে গেল/সেগুলো দেখলাম লেখা যায় কিনা/সে হঠাৎ করে কিছু বোঝার আগেই আমার একেবারে চোখের সামনে এসে পড়ল/হঠাৎ করে মাথা ঘুরিয়ে সেটার কানের কাছে নিয়ে গেল আস্তে আস্তে বলল সব সময় এত অভাব অভাব করিস কেন?হঠাৎ এ কথা বলেই হাতে একটা কয়লার মত কি যেন দিল/ বলল আবার মানুষ হলে কয়লাটা দিয়ে ছবি আঁকবি/আমার ছবি আঁকবে পারবে না?ভাগ্য ভালো তোমার মুখে আজকে গাজার গন্ধ নেই/
আমার কাছে কথাগুলো প্রলাপের মত মনে হচ্ছিল/
আচ্ছন্নতা কেটে যেতে মনে হচ্ছিল আমি হয়তো স্বপ্ন দেখছিলাম/
আমার হাতে তখনো সেই কয়লাটা/কিন্তু ডিজাইনটা এমন ছিল যেন কালো হীরের মত/আবার তখন মনে হল এটা দিয়ে আমি ছবি আঁকবো না/ এটাকে আমি রেখে দেবো যত্ন করে/তখন মনে হচ্ছিল অবচেতন মন বলছে এটা দিয়ে যদি তুই ছবি আঁকিস তাহলে অনেক বিখ্যাত হতে পারবি/আমার বিখ্যাত হওয়া দরকার নেই আমি কয়লাটা রেখে দেবো আশ্চর্য প্রাপ্তি মনে করে//
Like
Comment
Share