অন্তবর্তী সরকারের ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে গত সোমবার। এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। যার ভেতর সরকারের আয় আছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি এবং ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। এই বাজেটেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে, তবে বলা আছে করের পরিমাণটা একটু বেশি দিতে হবে।
কালো টাকা সাদা করা, ব্যাপারটা এমন সুদকে মুনাফা হিসবে অভিহিত করা। অর্থাৎ, আমি চুরি করতে রাজি আছি কিন্তু আমাকে চোর বলা যাবে না। এজন্য তুমি যা করতে বলবা তাই করব। দরকার হলে বেত্রাঘাত খেতেও রাজি কিন্তু চুরি করা ছাড়া যাবে না।
যাইহোক, এবারে কালো টাকা সাদা করার জন্য শুধুমাত্র একটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কেউ যদি ফ্ল্যাট বা এপার্টমেন্ট ও ভবন নির্মাণ করতে কালো টাকা ব্যবহার করে তবে সেটি অতিরিক্ত কর দিয়ে সাদা করতে পারবে।
এতে আসলে লাভবান হবে কারা? অবশ্যই আবাসন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা! এরা যখন দেখবে কেউ অবৈধভাবে উপার্জন করে সেটি কোথাও ব্যয় করার সুযোগ পাচ্ছে না তখন তাদেরকে উৎসাহিত করবে ফ্ল্যাট বা ভবন নির্মাণের।যার ফলে এই আবাসনের সাথে জড়িত লোকেরা দিনকে দিন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হবে আবার অন্যদিকে দূর্নীতিবাজরাও পার পেয়ে যাবে।
আমি আসলে অর্থনীতির ছাত্র নই বা অর্থনৈতিক বিষয়ে আমার কোন জ্ঞানও নেই। তবে কালো টাকা সাদা করার অর্থ হচ্ছে দূর্নীতিকে আরো প্রশ্রয় দেয়া। একমাত্র বিএনপি সরকার ১৯৯১-৯৬ সালের মেয়াদে এই কালো টাকা সাদা করার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। অর্থাৎ তারাই প্রথম এটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ও তাদের বাজেটে এই সুযোগ থেকে দূর্নীতিবাজদের বঞ্চিত করেছেন। এজন্য আমি সেসময়কার বিএনপির নীতিনির্ধারকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
কালো টাকা সাদা করার অর্থ হচ্ছে দূর্নীতিকে আরো প্রশ্রয় দেয়া। এমনিতেই আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভঙ্গুর। সেখানে যদি অসৎ পথের উপার্জনকে বৈধতা দেয়া হয় তবে আমার আসলে কিছু বলার নেই। অবশ্য ৯০% মুসলমানদের দেশে কালো টাকাই বা আসে কোত্থেকে সেটাও ভাববার বিষয়। 🙂