Posts

গল্প

ফিরে আসার গল্প

June 8, 2025

ARIFUL ISLAM BHUIYAN

113
View

📚 বইয়ের শিরোনাম:
🌙✨ ফিরে আসার গল্প
(একটি হৃদয়স্পর্শী আত্মিক যাত্রা)
✍️ লেখক:
আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ শামছ্)
📍 রিয়াদ, সৌদি আরব


📜 ভূমিকা
________________________________________
✍️ লেখকের কথা
এই বই লিখতে বসেছিলাম এক নিঃশব্দ অনুরণনে।
নিজের ভেতরের বহু বছরের জমে থাকা বেদনা, অনুশোচনা, তাওবা, ভালোবাসা আর ফিরে আসার গল্প গুলোকে শব্দের আকার দিতে চেয়েছিলাম।
এই গল্প শুধু আমার নয় — আমাদের সবারই।
আমরা প্রত্যেকে জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে রবের কাছ থেকে দূরে সরে যাই, আবার কেউ কেউ ফিরে আসার সৌভাগ্য পাই।
এই ফিরে আসার পথ সহজ নয়, সুন্দরও নয়, বরং পাথর-বিছানো, কাঁটা-গাঁথা এক জায়গা।
তবে, শেষ প্রান্তে থাকে অপার আলো, এক অশেষ ভালোবাসার ছোঁয়া।
আমি এই বইটিকে কোনো জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ বা ফতোয়া গ্রন্থ হিসেবে লিখিনি।
এটা একজন দুর্বল বান্দার আত্মার নির্ভেজাল কাহিনি — যেখানে প্রেম আছে, কান্না আছে, লড়াই আছে, আবার মুক্তি ও শান্তিও আছে।
আশা করি পাঠকের হৃদয়েও এ গল্প এক ফোঁটা হলেও আলো জ্বালাতে পারবে।
— আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ শামছ্)
রিয়াদ, সৌদি আরব
________________________________________
🌙 এই গল্প কেন?
আমি এই গল্প লিখেছি, কারণ — এই ফিরে আসার অনুভূতি আমি নিজে অনুভব করেছি।
অনেক বছর ধরে পাপ, গাফেলতি, অবহেলায় কাটানো জীবনে হঠাৎ একদিন ভেতরের কান্না বেরিয়ে আসে।
সেই কান্নার স্রোতে ভেসে যেতে যেতে রবের দিকে ফিরে তাকিয়েছিলাম।
সেখানে যে আলো পেয়েছি, যে ভালোবাসা পেয়েছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।
তবে চেষ্টা করেছি এই গল্পে সেই অনুভূতির ছোঁয়া দিতে।
এই গল্প লেখার মূল উদ্দেশ্য — আপনাদেরও একটুখানি মনে করিয়ে দেওয়া — ফিরে আসার পথ কখনো বন্ধ হয় না, আর রবের দরজা কখনো বন্ধ হয় না।
যদি এই বই পড়ে একজন মানুষও নিজের অন্তরে আবার তাওবার আগুন জ্বালাতে পারেন, তবে আমার শ্রম সার্থক হবে ইনশাআল্লাহ্।
________________________________________
✨ ফিরে আসার অনুপ্রেরণা
আমার ফিরে আসার অনুপ্রেরণা ছিল অনেকগুলো।
✅ প্রথমত — ভেতরের অপরাধবোধ। পাপের বোঝা একসময় সহ্য করা যায় না।
✅ দ্বিতীয়ত — কুরআনের কিছু আয়াত — যেন একেবারে হৃদয় ভেদ করে ভেতর জাগিয়ে দিল।
✅ তৃতীয়ত — একাকীত্বের গভীর রাতগুলো। সেখানে রব ছাড়া আর কারো কাছে ফিরবার জায়গা ছিল না।
✅ চতুর্থত — ভালো কিছু মানুষ, কিছু লেখা, কিছু বক্তব্য — যা হৃদয় নরম করেছিল।
সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিল — রবের দরজা যে সবসময় খোলা থাকে, তা জানার অনুভূতি।
এ অনুভূতি একবার পেয়ে গেলে, ফিরে আসার ডাক আর থামানো যায় না।
এই অনুপ্রেরণাগুলোই আমাকে এই গল্পটি লেখার সাহস দিয়েছে।

✦সূচিপত্র
📜 ফিরে আসার গল্প — সূচিপত্র
(সংক্ষেপে খণ্ডের শিরোনামসমূহ)
________________________________________
খণ্ড ১: ফিরে আসার শুরু
খণ্ড ২: ভেতরের কান্না
খণ্ড ৩: অপরাধবোধের আগুন
খণ্ড ৪: প্রথম তাওবা
খণ্ড ৫: নতুন পথের আহ্বান
খণ্ড ৬: বন্ধুরা ছেড়ে গেল
খণ্ড ৭: একাকীত্বের পাঠ
খণ্ড ৮: কুরআনের আলোয় প্রথম ছোঁয়া
খণ্ড ৯: নামাজের দিকে ফেরা
খণ্ড ১০: আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি 🌸 (আল্লাহর প্রতি নিখাদ প্রেম)
খণ্ড ১১: জীবন বদলে দেয় যে রাত
খণ্ড ১২: আত্মার নতুন জাগরণ
খণ্ড ১৩: পাপমুক্ত পথের যুদ্ধ
খণ্ড ১৪: হালাল-হারামের সীমারেখা
খণ্ড ১৫: রবের ভালোবাসার প্রতিদান
খণ্ড ১৬: সওগাতের নতুন সমাজ
খণ্ড ১৭: প্রতিদিনের তাওবা 🌙
খণ্ড ১৮: রবের ভালোবাসার গল্প 💖
খণ্ড ১৯: আস্থা ও ধৈর্য 🕊️
খণ্ড ২০: আলোর সন্ধানে ✨
খণ্ড ২১: শেষ পর্ব: পূর্ণ মুক্তি ও শান্তি 🕊️🌙
________________________________________
সংক্ষেপে টীকা:
🔸 খণ্ড ১-৫: সওগাতের ভেতরের পরিবর্তনের সূচনা, আত্মগ্লানি, তাওবায় ফেরা।
🔸 খণ্ড ৬-৯: একাকীত্ব, সমাজের বিচ্ছিন্নতা, নামাজ ও কুরআনের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক।
🔸 খণ্ড ১০-১৫: গভীর আত্মিক প্রেম, নতুন সমাজে নিজেকে গড়ে তোলা।
🔸 খণ্ড ১৬-২১: প্রতিদিনের আত্মসংগ্রাম, রবের ভালোবাসার গভীর অনুভূতি, ধৈর্য ও মুক্তির দিকে যাত্রা।
📜 ফিরে আসার গল্প — বিস্তারিত সূচিপত্র
(একটি আত্মিক যাত্রার ধারাবাহিক কাহিনি)
________________________________________
✨ প্রথম অধ্যায়: অন্ধকারের ভেতর থেকে ডাক
খণ্ড ১: ফিরে আসার শুরু
👉 সওগাতের অন্তরজগতের প্রথম আলোড়ন — অপরাধবোধ ও ফেরার ইচ্ছা জন্মানো।
খণ্ড ২: ভেতরের কান্না
👉 গোপনে গোপনে ভেঙে পড়া, রবের সামনে অশ্রুসিক্ত অন্তরের জবানবন্দি।
খণ্ড ৩: অপরাধবোধের আগুন
👉 পাপের অতীত স্মৃতি তাকে পুড়িয়ে খায়, মনে জাগে তীব্র অনুশোচনা।
খণ্ড ৪: প্রথম তাওবা
👉 জীবনের প্রথম গভীর তাওবা — রাতের নিঃশব্দ কান্নায়।
খণ্ড ৫: নতুন পথের আহ্বান
👉 তাওবার পর এক নতুন পথের দিকে প্রথম পদক্ষেপ।
________________________________________
✨ দ্বিতীয় অধ্যায়: এক নতুন পথের সংগ্রাম
খণ্ড ৬: বন্ধুরা ছেড়ে গেল
👉 সওগাত বুঝতে পারে — পুরনো বন্ধু, পুরনো সমাজ তার নতুন পথ মেনে নিতে পারছে না।
খণ্ড ৭: একাকীত্বের পাঠ
👉 একাকীত্বের মধ্যে নিজেকে নতুনভাবে চিনতে শেখা।
খণ্ড ৮: কুরআনের আলোয় প্রথম ছোঁয়া
👉 প্রথমবার গভীরভাবে কুরআনের অনুবাদ পাঠের অনন্য অনুভূতি।
খণ্ড ৯: নামাজের দিকে ফেরা
👉 নামাজের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া, প্রথম সঠিকভাবে নামাজ আদায়ের অভিজ্ঞতা।
________________________________________
✨ তৃতীয় অধ্যায়: হৃদয়ের গভীরে রব
খণ্ড ১০: আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি 🌸
👉 একদম হৃদয় ভেঙে পড়া প্রেমের কবিতার মতো — সওগাতের মুখ থেকে আল্লাহর প্রতি নিখাদ প্রেমের ঘোষণা।
খণ্ড ১১: জীবন বদলে দেয় যে রাত
👉 এমন এক রাতের কথা, যা সওগাতের আত্মাকে একেবারে পাল্টে দেয়।
খণ্ড ১২: আত্মার নতুন জাগরণ
👉 এক গভীর আত্ম-উপলব্ধি, জীবনের নতুন উপলক্ষ্য দেখা।
খণ্ড ১৩: পাপমুক্ত পথের যুদ্ধ
👉 পাপের প্রলোভনের বিরুদ্ধে প্রতিদিনের যুদ্ধ।
খণ্ড ১৪: হালাল-হারামের সীমারেখা
👉 জীবনের নতুন চর্চায় হালাল-হারামের সীমানা নিয়ে কঠোরভাবে সচেতন হওয়া।
খণ্ড ১৫: রবের ভালোবাসার প্রতিদান
👉 সওগাত বুঝতে শেখে — যে রব কেবল নেয় না, অসীমভাবে দেয়ও।
________________________________________
✨ চতুর্থ অধ্যায়: নতুন সমাজ, নতুন জীবন
খণ্ড ১৬: সওগাতের নতুন সমাজ
👉 এক নতুন ধার্মিক পরিবেশের সন্ধান, নতুন বন্ধুত্ব, নতুন ভালোবাসা।
খণ্ড ১৭: প্রতিদিনের তাওবা 🌙
👉 প্রতিদিনের পাপ ও দুর্বলতার বিরুদ্ধে নতুন নতুন তাওবার দোয়া ও অভ্যাস।
খণ্ড ১৮: রবের ভালোবাসার গল্প 💖
👉 সওগাত কিভাবে রবের অদৃশ্য ভালোবাসা অনুভব করতে শেখে।
খণ্ড ১৯: আস্থা ও ধৈর্য 🕊️
👉 জীবনের পরীক্ষার মুখে সওগাতের রবের উপর আস্থা রাখা এবং ধৈর্য ধরে পথ চলা।
________________________________________
✨ পঞ্চম অধ্যায়: আলো, মুক্তি, শান্তি
খণ্ড ২০: আলোর সন্ধানে ✨
👉 সওগাতের রবের সান্নিধ্যে যাওয়ার জন্য নিরলস চেষ্টা — এক নতুন জীবনের আলো খোঁজা।
খণ্ড ২১: শেষ পর্ব: পূর্ণ মুক্তি ও শান্তি 🕊️🌙
👉 এক পরিপূর্ণ মুক্তি ও হৃদয়ের গভীর শান্তির অনুভূতি — আল্লাহর ভালোবাসার পূর্ণ প্রকাশ।
________________________________________
🌸 সংক্ষেপে:
এ এক অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরে যাওয়ার গল্প —
অভ্যন্তরীণ পাপবোধ → আত্মশুদ্ধি → ধার্মিক সমাজে জায়গা পাওয়া → রবের প্রতি নিখাদ প্রেম → শেষ পর্যন্ত পরিপূর্ণ শান্তি ও মুক্তি।

✦ লেখকের জীবন কথা (সংক্ষেপে)
আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ ইবনে শামছ্)
পিতা: বিশিষ্ট সমাজ ও সাহিত্যসেবক, কবি ক্বারী আলহাজ্ব শামছুল ইসলাম ভূঁইয়া (রাহঃ), সহকারী প্রকৌশলী, বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন (বিটিএন্ডটি-বিটিসিএল)।
মাতা: মোয়াল্লিমা হালীমা সাদীয়া ভূঁইয়া।
জন্ম: ১৯৭৯, ভাদুঘর, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া।
স্থায়ী ঠিকানা:
ফখরে বাঙ্গাল নিবাস, বাড়ী# ১২৩৪, ওয়ার্ড# ১২, ভূঁইয়া পাড়া, গ্রাম: ভাদুঘর, পোষ্ট: ভাদুঘর-৩৪০০, থানা: সদর, জেলা: ব্রাহ্মণবাড়ীয়া।
শিক্ষা জীবন:
• প্রাথমিক থেকে বরাবরই ফার্স্ট বয় ছিলেন।
• এসএসসি: হাবলা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ১৯৯৫।
• এইচএসসি: ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সরকারি কলেজ, ১৯৯৭।
• বি.এস.এস (অর্থনীতি): ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সরকারি কলেজ, ২০০১।
• এম.এস.এস (অর্থনীতি): সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা, ২০০৩।
• বি.এড: বাংলাদেশ টিচার্স ট্রেইনিং কলেজ, ঢাকা (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়)।
• এম.এড: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
• এমবিএ (এমআইএস): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (অধ্যয়নরত)।


পেশাগত জীবন:
• পেশাগত জীবন, ১৬ বছর।
• মোবাইল টেলিকম এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (ওয়ারিদ টেলিকম, এয়ারটেল লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড, নগদ লিমিটেড) - ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত।
• বর্তমানে সৌদি আরবে কর্মরত (মদিনা)।
সাহিত্যচর্চা:
লেখকের পূর্বপুরুষদের মধ্যে দ্বীন প্রচার, আধ্যাত্মিকতা ও সংস্কৃতির প্রচলন ছিল। পারিবারিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় লেখকের মধ্যে সাহিত্যচর্চার উৎসাহ জন্ম নেয় শৈশব থেকেই।
• প্রাক্তন বিভাগীয় সম্পাদক ও সাহিত্য সম্পাদক: "বলিতে ব্যাকুল", "তিতাস বার্তা"।
• প্রকাশিত কবিতা ও লেখা:
o দৈনিক ব্রাহ্মণবাড়ীয়া
o দৈনিক প্রজাবন্ধু
o মাসিক বলিতে ব্যাকুল
o তিতাস বার্তা
o হক্ব পয়গাম
o যৌথ কাব্যগ্রন্থ: "ঝরা ফুলের গন্ধ", "বিজয়ের উল্লাসে", "বাংলার ১০০ কবি ও কবিতা"।
o প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ: "শ্বাশ্বত আহ্বান", "ছন্দ নাবিক", "সত্য সন্ধানী", "বাঙালির স্বাধীনতা", "বিজয়ের উল্লাসে", "অনুশোচনা", "বিদ্রোহী তুমি, বিপ্লবী", "আজকের এই বাংলাদেশ", "আগুন জ্বালা অন্তরে", আরও।
সাহিত্যিক সম্মাননা:
পাক্ষিক/সাপ্তাহিক/মাসিক বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠন এবং অনলাইন সাহিত্য প্ল্যাটফর্ম থেকে অসংখ্য সেরা কবি/সেরা পোস্ট/বিশেষ সম্মাননা লাভ করেছেন। আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে বহু কাব্যগ্রন্থে তাঁর কবিতা স্থান পেয়েছে।
✦ কৃতজ্ঞতা স্বীকার
এই গ্রন্থের পেছনে যারা আমাকে নানাভাবে অনুপ্রেরণা, সহযোগিতা ও উৎসাহ যুগিয়েছেন, তাঁদের প্রতি রইল অন্তরস্থ কৃতজ্ঞতা।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা আমার পরিবারের প্রতি— আমার মা-বাবার দোয়া, শিক্ষা ও আদর্শ আমার জীবনকে গঠন করেছে।
আমার হৃদয়ের প্রিয় সহধর্মিণী খালেদা আক্তার— তাঁর স্মৃতি, প্রেরণা, ভালোবাসা ও আত্মিক বন্ধন অনেক কবিতার অন্তর্নিহিত শক্তি হয়ে আছে।
বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী ও আমার প্রিয় পাঠকদের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা—আপনাদের ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণায় এই সৃষ্টিশীল পথচলা।
সবশেষে— আল্লাহ্র অশেষ অনুগ্রহের প্রতি শুকরিয়া— তাঁর দয়া ছাড়া এই কাজের কিছুই সম্ভব হতো না।
✦ যোগাযোগের ঠিকানা
আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ ইবনে শামছ্)
📍 বর্তমান অবস্থান: মদিনা, সৌদি আরব
🏠 স্থায়ী ঠিকানা: ফখরে বাঙ্গাল নিবাস, বাড়ী# ১২৩৪, ওয়ার্ড# ১২, ভূঁইয়া পাড়া, ভাদুঘর দক্ষিণ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া।
📧 ইমেইল: ariful01711@gmail.com
📱 হোয়াটসঅ্যাপ: +966510429466
🌐 ফেসবুক পেজ: facebook.com/arifulislambhuiyan0
🌐 ব্লগ: arifulislambhuiyan.blogspot.com
🌐 LinkedIn: linkedin.com/in/arifulislambhuiyan
🌐 Fiction Factory Contributor: fictionfactory.org/contributor/2165
🌐 বাংলা কবিতা: bangla-kobita.com/ariful01711
🌐 Facebook (Alternate): facebook.com/ariful.bhuiyan.bd
🌐 Twitter: twitter.com/arifulbhuiyan12
🌐 YouTube: youtube.com/c/arifbhuiyan01711
All copyright by ARIFUL ISLAM BHUIYAN | আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া | ফখরে বাঙ্গাল নিবাস, ভাদুঘর, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া।
________________________________________
✨ ফিরে আসার গল্প
✍️ আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ শামছ্)
________________________________________
🌿 খণ্ড ১
"ভেতরের কান্না"
সওগাত ভূঁইয়া ভালোবাসে খুবই, প্রচণ্ড, অপরিসীম।
কিন্তু প্রকাশ করতে পারে না।
মনে মনে অন্তর দিয়ে অনেক অনেক ভালোবাসা পোষণ করে — শুধুমাত্র জান্নাতুল ফেরদাউসের আশায় নয়,
সুমহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির আশায়, স্রষ্টার মহামূল্যবান দীদারের আশায়।
কিন্তু ইবলিস শয়তান পদে পদে সওগাতকে বিভ্রান্ত করে।
আবার ফিরে আসার চেষ্টায় মহান রবের সন্তুষ্টির পথে সে ছুটে চলে।
আজকের রাতেও এমনই এক যুদ্ধ চলছে তার অন্তরে।
পাপের ছায়ায় ঢাকা পড়া হৃদয় নিয়ে সওগাত বিছানায় বসে — চোখের কোনে অশ্রু।
সে ফিসফিসিয়ে বলে—
"হে আল্লাহ্, আমি ব্যর্থ।
আমি দুর্বল।
তবু তুমিই আমার রব, তুমিই আমার প্রেম।
আমার পাপগুলো তুমি ধুয়ে দাও।
আমাকে আবার তোমার পথে ফিরিয়ে নাও।"
আকাশের তারা যেন তার কান্নার সাক্ষী হয়ে জ্বলে ওঠে।
________________________________________
🌿 খণ্ড ২
"প্রথম ডাক"
রাতের গভীরে, হঠাৎ বুকের ভিতর এক কাঁপুনি অনুভব করে সওগাত।
কেন যেন মনে হলো — কেউ তাকে ডাকছে।
"সওগাত..."
নামটা যেন বাতাসে ভেসে এলো।
সে চমকে উঠলো।
এই ডাক কি বাস্তব? নাকি মনের ভুল?
তবু মনে গভীর টান অনুভব করলো।
এটা তো সেই রবের ডাক, যার প্রেমে তার হৃদয় ডুবে আছে।
"হে আল্লাহ্,
আমি তোমার ডাক শুনেছি।
আমাকে পথ দেখাও।
আমি পাপের আঁধার থেকে বের হতে চাই।
তোমার দিকে ছুটতে চাই।"
চোখের জলে ভিজে যায় তার গাল।
আজকের এই ডাক, এই অনুভব —
সওগাতের জীবনের এক নতুন সূচনা।
________________________________________
🌿 খণ্ড ৩
"অন্তরের দ্বন্দ্ব"
দিন যায়, রাত আসে।
আবারও পুরোনো পাপেরা ডাক দেয় —
"আয় ফিরে আয় আমাদের কাছে..."
সওগাতের ভেতর শুরু হয় তীব্র দ্বন্দ্ব।
একদিকে ইবলিসের ফাঁদ,
অন্যদিকে রবের মেহেরবানী।
"হে আল্লাহ্,
আমি কেন বারবার হারাই?
তুমি তো জানো —
আমি তোমাকেই ভালোবাসি,
তবু ভুল করে ফেলি।"
কান্না আবারও ভিজিয়ে দেয় নামাজের সিজদার জায়গাটা।
সওগাত বুঝে যায় —
এই দ্বন্দ্বই প্রেমের প্রমাণ।
যদি প্রেম না থাকতো,
তাহলে তো সে ফেরার আকুলতাও অনুভব করতো না।
________________________________________
🌿 খণ্ড ৪
"একটি নতুন সিদ্ধান্ত"
সকালবেলা সূর্যের আলোয় ভিজে উঠেছে চারপাশ।
সওগাত চুপচাপ বসে, মনস্থির করে—
"আজ থেকে আমি বদলাবো।
প্রতিদিন একটু একটু করে।
একটি সৎ আমল, একটি সুন্দর কথা, একটি সঠিক কাজ।"
সে নিজের জন্য এক তালিকা বানায়—
✅ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাসময়ে
✅ অন্তর থেকে ইস্তেগফার
✅ সকালে-সন্ধ্যায় তাসবীহ
✅ মানুষের প্রতি সদাচরণ
✅ হারাম থেকে দৃষ্টিকে হেফাজত
"হে আল্লাহ্, আমাকে তাওফীক দাও।
আমার ইচ্ছার উপর তোমার রহমতের ছায়া ফেলো।"
________________________________________
"অশ্রুবিন্দুর উপহার"
রাতের তাহাজ্জুদ।
আধো অন্ধকার ঘরে সওগাত দাঁড়িয়ে গেছে।
আল্লাহু আকবার।
প্রথম সিজদায় যাওয়ার মুহূর্তেই হৃদয় থেকে বেরিয়ে আসে —
অশ্রুবিন্দু।
একটি, দুটি... তারপর টপটপ করে গড়িয়ে পড়ে।
"হে আল্লাহ্, আমি কিছু নই।
আমি শুধুই ত্রুটিপূর্ণ এক বান্দা।
তবু এই চোখের অশ্রুগুলো —
তোমারই প্রেমের জন্য।
তুমি যেন এগুলো কবুল করো।
একদিন এই অশ্রুগুলো দিয়ে জান্নাতের দরজা খুলে দাও।"
রাতের নিস্তব্ধতায় ভেসে যায় তার দোয়া।
মহান রব নিশ্চয়ই শুনছেন।
সওগাতের অন্তরভাষ্য
(গদ্য-কবিতা)
সওগাত ভূঁইয়া ভালোবাসে।
ভালোবাসে প্রচণ্ড, অপরিসীম, নিরবধি।
তবু সেই ভালোবাসার কথা সে মুখ ফুটে বলে না।
তার ভালোবাসার ঠিকানা রক্তমাংসের কোন মানুষ নয় —
সে ভালোবাসে অন্তর দিয়ে, গভীর গোপনে,
মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টির আশায়, জান্নাতুল ফেরদাউসের নয় শুধু,
বরং সেই অশেষ, অমলিন দীদারের আশায় —
যা সকল চাহিদার ঊর্ধ্বে।
কিন্তু পথটি সহজ নয়।
ইবলিস শয়তান তার ছায়া মেলে দেয় প্রতিটি পদক্ষেপে।
কখনো অহংকারের ছলে, কখনো প্রবৃত্তির মোহে
সে সওগাতকে পথভ্রষ্ট করে দিতে চায়।
তবু সওগাত নত মাথায় ফিরে আসে।
বারবার ফিরে আসে অশ্রুসিক্ত অন্তর নিয়ে,
স্রষ্টার সন্তুষ্টির পথে, পরম আলোকের পথে।
সে জানে— এই ফিরে আসার পথটাই প্রেমের প্রকৃত পরীক্ষাকেন্দ্র।
________________________________________
"ফিরে আসার পথ"
রাত গভীর।
চাঁদ ঝুলে আছে জানালার ধারে।
সওগাত ভূঁইয়া চোখ মেলছে না — মন তার রুদ্ধ এক দ্বার।
আজও সারাদিন কেটে গেছে সংসারের হিসেব-নিকেশে,
আড়ালে কোথায় যেন এক চাপা হাহাকার।
প্রেম...
সে যে কতটা ভালোবাসে, তা কাউকে বলতে পারে না।
না, কোনো রমণী নয়, কোনো মানুষ নয় —
তার এই ভালোবাসা প্রবাহিত হয় ঈশ্বরের দিকে, রবের দিকে।
সে ভাবে —
"হে প্রভু, তুমিই তো জানো আমার অন্তরের সব কথা।
তোমার সন্তুষ্টি ছাড়া আমার কিছুই চাইবার নেই।
জান্নাতের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যও নয় —
আমি চাই তুমিই, একমাত্র তুমিই।"
কিন্তু এই অন্তরের কথা বলার আগেই
ইবলিস তার পথ আগলে দাঁড়ায়।
কখনো অলসতা এনে দেয়,
কখনো মনে করায় —
"এত পুণ্যবান হওয়ার ভান কেন? তুমিও তো পাপী!"
সওগাতের অন্তর টলে ওঠে।
কিন্তু সে জানে —
ফিরে আসার দ্বার কখনো বন্ধ হয় না।
আজ রাতে সে সিজদায় পড়ে যায়।
কাঁদতে কাঁদতে বলে —
"হে আমার রব,
আমি জানি না কতবার ফিরে ফিরেই তোমার কাছে আসি।
তবু তুমিই তো বারবার ডাকো —
‘ফিরে এসো, ফিরে এসো।’
এই ডাকে সাড়া দিয়েই আবার এলাম।
আমার এই অক্ষম ভালোবাসা তুমি গ্রহণ করো।"
চোখের কোণে অশ্রু।
বুকে এক অপার শান্তি।
সওগাত জানে —
এটাই তার প্রেমের প্রকৃত ভাষা।
________________________________________
"ভালোবাসার কথা বলা যায় না"
সওগাত চুপচাপ হাঁটে।
মানুষের ভিড়ের ভেতরেও সে একা।
চারপাশে সবাই ব্যস্ত—
কারো চোখে সংসারের ঝলমলে স্বপ্ন,
কারো মনে গোপন প্রলোভন।
সওগাত ভাবে—
"আমি কোথায় যাচ্ছি? কোথায় আমার রব?"
তার বুকের ভেতর গুমোট হয়ে থাকে এক অফুরন্ত ভালোবাসা।
কিন্তু এই ভালোবাসা কাউকে বলা যায় না।
কাকে বলবে সে?
বন্ধুকে? সে হাসবে।
পরিজনকে? তারা বুঝবে না।
এই ভালোবাসা তো ভাষার ঊর্ধ্বে।
এ ভালোবাসার উৎস এক অদৃশ্য আহ্বান,
আত্মার গহীনে যে শব্দহীন ডাক বাজে—
"ফিরে এসো আমার দিকে।"
কিন্তু ইবলিস তাড়া করে ফেরে।
"তোমার মতো পাপী কী করে রবকে ভালোবাসতে পারে?"
"তুমি তো পথভ্রষ্ট, ফিরে গিয়ে কী হবে?"
"আরও তো অনেক কিছু পাওয়ার আছে দুনিয়ায়!"
সওগাত কেঁপে ওঠে।
কিন্তু আবার সামলে নেয় নিজেকে।
প্রেম তো পাপমুক্ত নয়, প্রেম তো লড়াইয়ের নাম।
সে জানে — মহান আল্লাহ্ কাউকে ফিরিয়ে দেন না।
তিনি তো পাপীর কান্নাকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন।
রাতে বিছানায় শুয়ে সওগাত চোখ বন্ধ করে ফিসফিস করে—
"হে আমার রব,
আমার এই বোবা ভালোবাসা তুমি বুঝে নিও।
আমি পারি না জিভে প্রকাশ করতে,
আমি শুধু অনুভব করি— অন্তর দিয়ে।"
তারপর অজান্তেই চোখে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু।
আকাশের তারা জানে, চাঁদ জানে—
সওগাত ভূঁইয়া ভালোবাসে।
ভালোবাসে প্রচণ্ড, অপরিসীম।
তবে বলা যায় না...
________________________________________
"শয়তানের কৌশল ও ঈমানের পুনরুদ্ধার"
দুই দিন ধরে সওগাত অস্থির।
মনে হয় যেন কিছুতেই মন বসছে না।
ইবলিস চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে।
নানান কথা শোনায়—
"এই যে দেখো, তুমি তো তেমন ধার্মিকও নও,
তাহলে কেন এত ফিরে ফিরে যাও আল্লাহর দিকে?"
"আজ একটু গাফিল হও, কাল ঠিক সিজদায় পড়ে যেও।"
"দুনিয়া তো তোমার কিছু চায়, ওই দিকেই মন দাও।"
সওগাত জানে— এইসব কথা ফাঁদ।
তবু মন দুর্বল হয়ে পড়ে।
তাকে টেনে নিয়ে যায় অলসতায়, গুনাহের দিকে।
কিন্তু এইবার একটা ছোট্ট শব্দ সওগাতকে থামিয়ে দেয়—
"আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম।"
"আমি আশ্রয় চাই আল্লাহর কাছে, বিতাড়িত শয়তান থেকে।"
সওগাত মনে মনে এই বাক্য জপতে থাকে।
জপতেই থাকে...
একসময় বুকের মধ্যে এক রকম স্থিরতা আসে।
সে ভাবে—
"না, আমি এভাবে হারতে পারি না।"
"আমার প্রেম তো ছোটখাটো নয়—
এ প্রেম তো স্রষ্টার দিকে, অনন্তের দিকে।"
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে,
সে অজু করে নেয়,
একটা পবিত্রতা ছড়িয়ে পড়ে মন-দেহে।
তারপর সে সিজদায় যায়।
এই সিজদাই তার সবচেয়ে বড় যুদ্ধক্ষেত্র।
কান্না আসে।
আবার বলে—
"হে আমার রব,
আমি জানি, শয়তান আমায় বিপথে নিতে চায়।
তুমি আমাকে শক্তি দাও— যেন ফিরে ফিরে তোমার পথেই চলি।
আমার প্রেমকে তুমি অটুট রাখো।
আমার অন্তরের বাতি যেন নিভে না যায়।"
সিজদা থেকে উঠতে উঠতে সওগাতের মনে হয়—
সে জিতেছে।
এখনও তো সে ফিরে আসে,
তবেই তো প্রেম আছে।
আর প্রেম মানেই— লড়াই, ফিরে আসা, রবের দিকে ছুটে চলা।
________________________________________
"সওগাতের প্রার্থনার রাত"
রাত গভীর হয়েছে।
চারদিকে নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে।
শহরের আলো নেভার মুখে।
কিন্তু সওগাতের অন্তরে জেগে উঠেছে এক অন্যরকম আলো।
আজ অনেক দিন পর,
সে ঠিক করেছে — রাতের প্রার্থনায় বসবে।
এই রাত শুধু তার,
এই রাত তার প্রেমিক রবের নামে।
অজু করে সে নিজের ঘরটাকে ছোট্ট মসজিদ বানিয়ে নেয়।
একটা সুগন্ধি চাদর বিছিয়ে দেয় জায়নামাজে।
আকাশের চাঁদ জানালার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে থাকে।
সওগাত দাঁড়িয়ে যায় নামাজে।
আল্লাহু আকবার।
এই বাক্য উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত দুনিয়া যেন ফিকে হয়ে যায়।
সে পড়ে—
"ইয়্যাকা না'বুদু ওয়া ইয়্যাকা নস্তাঈন।"
"কেবল তোমারই ইবাদত করি, কেবল তোমারই সাহায্য চাই।"
এই বাক্য তার ভিতরটা ভিজিয়ে দেয়।
সে ভাবে—
"হে আল্লাহ্, এ তো কেবল বাক্য নয়,
এ আমার হৃদয়ের প্রতিশ্রুতি।"
সিজদায় গিয়ে ফুপিয়ে ওঠে সওগাত।
চোখের পানি মিশে যায় কার্পেটের আঁশে।
"হে আমার রব,
তুমি জানো আমার সবকিছু।
তুমি জানো, আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি,
তোমার সন্তুষ্টির জন্যই আমার প্রতিটি শ্বাস।"
"তবু আমি দুর্বল।
তোমার দ্বারে ফিরে আসতে আসতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি।
আমার এই পথ চলাকে তুমি সহজ করে দাও।
আমার এই প্রেমটাকে তুমি গ্রহণ করো।
আমার অন্তর যেন শুধু তোমার নামেই সিক্ত থাকে।"
সময় চলে যায়।
নামাজ শেষে সওগাত আবার বসে পড়ে জায়নামাজে।
চোখ বন্ধ করে শুধু “আল্লাহ্, আল্লাহ্, আল্লাহ্…” জপতে থাকে।
রাতের গভীর নির্জনতায় সওগাত বোঝে—
এই প্রার্থনার রাতই তার আসল মুক্তির রাত।
যতই শয়তান টেনে নামাক,
যতই পৃথিবীর মোহ হাতছানি দিক—
সে আবার ফিরে আসবে।
আবার প্রেম নিবেদন করবে।
আবার সিজদায় ভিজিয়ে দেবে হৃদয়ের অশ্রু।
এই তো তার পথ।
এই তো তার প্রেম।
সওগাত ও রবের মাঝে এক অনন্ত বন্ধনের গল্প।
________________________________________
🌿 ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ৫
"ফিরে আসার সংকল্প"
সওগাত একদিন আয়নায় তাকিয়ে থাকে।
নিজের চোখের দিকে তাকায় অনেকক্ষণ।
আয়নায় কি শুধু চেহারা দেখা যায়?
না — আয়নায় নিজের আত্মাটাকেও দেখে সওগাত।
একটা প্রশ্ন তার বুকের মধ্যে বাজে—
"আমি কেমন হয়ে গেলাম?
কতদিন সত্যিকারের তাওবা করিনি,
কতদিন সিজদায় মন খুলে কাঁদিনি!"
বুকটা হাহাকার করে ওঠে।
"আমার রব তো ডেকেই চলেছেন।
কেন আমি বারবার পিছিয়ে পড়ি?"
আজকের রাতেই সে একটা সংকল্প নেয়।
ফিরে আসার সংকল্প।
"হে আল্লাহ্, আজ রাত থেকে আমি নতুন করে শুরু করবো।
নতুন এক সওগাত হয়ে তোমার দিকে ফিরবো।
তোমার রহমতের দরজা কখনো বন্ধ হয় না —
এ কথা আমি বিশ্বাস করি।
আজও তোমার দিকে মুখ ফিরিয়ে বলছি—
আমার এই ভাঙা মনটুকু তুমি গ্রহণ করো।"
সে একে একে নিজের গুনাহের কথা মনে করে।
প্রত্যেকটা গুনাহর জন্য চোখ ভিজে ওঠে।
"হে প্রভু, আমি সত্যিই লজ্জিত।
আমি বারবার পাপ করেছি, কিন্তু তুমি তবুও আমায় ছেড়ে দাওনি।
আজ আমি ফিরে আসছি — এইবার যেন টিকেই থাকতে পারি তোমার পথে।"
একটা পুরোনো নসিহতের কথা মনে পড়ে সওগাতের—
"প্রকৃত তাওবা মানে ফিরে যাওয়া নয় —
নতুন করে হাঁটা শুরু করা, একেবারে ভেতর থেকে।"
এই কথা হৃদয়ে গেঁথে নিয়ে সওগাত আবার অজু করে।
নামাজে দাঁড়ায়।
সিজদায় পড়ে গিয়ে ফুঁপিয়ে ওঠে—
"আমার এই ফিরে আসা তুমি কবুল করো, হে আল্লাহ্।
আমাকে এমন করে রাখো—
যেন আর কোনোদিন ফিরে যেতে না হয় অন্ধকারের পথে।"
রাত শেষ হয়, ফজরের আযান হয়।
নতুন সূর্য ওঠে।
সওগাত জানে—
আজকের সূর্য শুধু নতুন দিনের সূর্য নয়—
এ এক নতুন পথযাত্রার সূর্য।
ফিরে আসার গল্প আজ নতুনভাবে শুরু হলো।
________________________________________
🌿 ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ৬
"সওগাত ও রবের কথোপকথন"
রাত গভীর।
সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।
কিন্তু সওগাতের চোখে ঘুম নেই।
সে একা বসে রয়েছে জায়নামাজে।
চোখ বন্ধ করে, বুকের মধ্যে তোলপাড় এক অনুভূতি।
এইবার সে কথা বলতে শুরু করে — তার রবের সঙ্গে।
"হে আল্লাহ্, তুমি কি আমাকে শুনছো?"
মন থেকে যেন এক কোমল উত্তর আসে—
"আমি তো সবসময় শুনি, হে আমার বান্দা।"
"তুমি জানো, আমি কত দুর্বল।
আমি বারবার ভুল করেছি।
তবু কেন তুমি আমাকে ডেকেই চলো?"
"কারণ তুমি আমারই সৃষ্টি।
আমি চাই না তুমি হারিয়ে যাও।
তোমার এই ফিরে আসার আকুলতা,
তোমার অশ্রুই আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়।"
"কিন্তু শয়তান আমাকে কাঁদায়, ফিসফিসায়—
'তুমি তো পাপী, আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না।'"
"সে তো মিথ্যাবাদী।
আমি বলেছি—
‘হে আমার বান্দারা, যারা নিজেদের ওপর সীমা অতিক্রম করেছে,
তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।’
তুমি কেন নিরাশ হবে?"
"তাহলে তুমি কি সত্যিই আমাকে ক্ষমা করবে?"
"আমি ক্ষমা করতে ভালোবাসি।
তুমি ফিরে এসেছো— এটাই তো আমার ভালোবাসার নিদর্শন।"
"আমি তো খুব ভালোবাসি তোমাকে,
কিন্তু পারি না সবসময় ইবাদতে লেগে থাকতে।
আমার অন্তর খারাপ হয়ে যায় মাঝে মাঝে।"
"ভালোবাসা মানে তো যুদ্ধও বটে।
যুদ্ধ করো নিজের প্রবৃত্তির সঙ্গে, শয়তানের সঙ্গে।
যতবার পড়বে, ততবার উঠে দাঁড়াও।
আমি তোমার পাশে আছি।"
"আমি কি তোমার দীদার পাবো একদিন?"
"যদি তুমি এই ভালোবাসা নিয়েই মরো,
তাহলে অবশ্যই।
আমার কাছে আসবে হাসিমুখে।"
সওগাতের চোখ ভিজে যায়।
সে ফিসফিস করে—
"হে আল্লাহ্, তুমি আমাকে ধরে রেখো।
আমি যেন আর কখনো তোমার দরজা ছেড়ে দূরে না যাই।"
অন্তরের গহীন থেকে যেন উত্তরের ছোঁয়া আসে—
"এসো, এসো আমার দিকে।
আমি আছি, সবসময় আছি— তোমার অপেক্ষায়।"
রাতের শেষ প্রহর।
ফজরের আজান ভেসে আসে দূরে।
সওগাত জানে—
সে আজ আরও এক ধাপ এগিয়েছে ফিরে আসার পথে।
এই প্রেম আর থামবে না, এই পথ আর ছেড়ে যাবে না।

🌿 "অন্তরের অশ্রুর ডায়েরি"
আজকের রাতটা অদ্ভুত।
সওগাতের ভেতরটা যেন কান্নায় ভেসে যাচ্ছে।
কোনো কারণ নেই —
আসলে আছে, কিন্তু মুখে বলা যায় না।
এই তো অন্তরের অশ্রুর ডায়েরি খুলে বসেছে সে।
"হে আমার রব,
তুমি কি জানো, আজ আমি কত ভেঙে পড়েছি?
তুমি কি জানো, আজ আমি নিজেকে কতটা অপূর্ণ মনে করছি?"
মন থেকে যেন নরম এক সাড়া আসে—
"আমি তো সব জানি, হে আমার বান্দা।"
"আমি মানুষদের মাঝে থাকি,
কিন্তু আমার মনে তীব্র এক শূন্যতা।
সব পেয়েও কিছু যেন নেই।
শুধু তোমার নাম উচ্চারণ করলেই মনে শান্তি আসে।"
"কিন্তু কেন জানি, আমি সেই নাম ভুলেই থাকি দিনের বেশিরভাগ সময়।
আমার এই ভুল ক্ষমা করো।
আমার এই মনটাকে তুমি ঠিক করে দাও।"
চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।
সে ডায়েরিতে লিখে—
"হে আল্লাহ্, আজকের অশ্রু আমি তোমার জন্যই উৎসর্গ করছি।
তুমি ছাড়া আমি আর কাউকে ভালোবাসতে পারি না।
আমার সমস্ত পাপ, সমস্ত ব্যর্থতা—
তোমার রহমতের মাঝে গলে যাক।"
"আমি জানি না আমার ভবিষ্যৎ কী।
জানি না আমি কতদিন ইবাদতে টিকে থাকবো।
তবু আমি এতটুকু চাই—
তুমি যেন আমায় ছেড়ে দিও না।
আমার অন্তরের বন্ধ দরজাটা খুলে রাখো।
আমার হৃদয়ের বাতিটা জ্বলতে দাও, কেবল তোমার আলোয়।"
রাত শেষ দিকে।
সওগাত জানে —
এই ডায়েরির সব অশ্রু, সব কথা তার রব শুনেছেন।
তিনিই তো অল-সামিওন — সর্বশ্রোতা।
শেষ লাইনে সে লেখে—
"হে আল্লাহ্, এই অশ্রুর ডায়েরিটা তুমি রেখে দিও।
একদিন যখন তোমার সামনে দাঁড়াবো,
এই চোখের জলই যেন সাক্ষী হয়—
'এই বান্দা তোমাকে ভালোবাসতো,
হোঁচট খেতো, তবু ফিরে ফিরেই আসতো।'"
________________________________________
🌿 ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ৭
"অন্তরের অশ্রুর ডায়েরি"
আজকের রাতটা অদ্ভুত।
সওগাতের ভেতরটা যেন কান্নায় ভেসে যাচ্ছে।
কোনো কারণ নেই —
আসলে আছে, কিন্তু মুখে বলা যায় না।
এই তো অন্তরের অশ্রুর ডায়েরি খুলে বসেছে সে।
"হে আমার রব,
তুমি কি জানো, আজ আমি কত ভেঙে পড়েছি?
তুমি কি জানো, আজ আমি নিজেকে কতটা অপূর্ণ মনে করছি?"
মন থেকে যেন নরম এক সাড়া আসে—
"আমি তো সব জানি, হে আমার বান্দা।"
"আমি মানুষদের মাঝে থাকি,
কিন্তু আমার মনে তীব্র এক শূন্যতা।
সব পেয়েও কিছু যেন নেই।
শুধু তোমার নাম উচ্চারণ করলেই মনে শান্তি আসে।"
"কিন্তু কেন জানি, আমি সেই নাম ভুলেই থাকি দিনের বেশিরভাগ সময়।
আমার এই ভুল ক্ষমা করো।
আমার এই মনটাকে তুমি ঠিক করে দাও।"
চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।
সে ডায়েরিতে লিখে—
"হে আল্লাহ্, আজকের অশ্রু আমি তোমার জন্যই উৎসর্গ করছি।
তুমি ছাড়া আমি আর কাউকে ভালোবাসতে পারি না।
আমার সমস্ত পাপ, সমস্ত ব্যর্থতা—
তোমার রহমতের মাঝে গলে যাক।"
"আমি জানি না আমার ভবিষ্যৎ কী।
জানি না আমি কতদিন ইবাদতে টিকে থাকবো।
তবু আমি এতটুকু চাই—
তুমি যেন আমায় ছেড়ে দিও না।
আমার অন্তরের বন্ধ দরজাটা খুলে রাখো।
আমার হৃদয়ের বাতিটা জ্বলতে দাও, কেবল তোমার আলোয়।"
রাত শেষ দিকে।
সওগাত জানে —
এই ডায়েরির সব অশ্রু, সব কথা তার রব শুনেছেন।
তিনিই তো অল-সামিওন — সর্বশ্রোতা।
শেষ লাইনে সে লেখে—
"হে আল্লাহ্, এই অশ্রুর ডায়েরিটা তুমি রেখে দিও।
একদিন যখন তোমার সামনে দাঁড়াবো,
এই চোখের জলই যেন সাক্ষী হয়—
'এই বান্দা তোমাকে ভালোবাসতো,
হোঁচট খেতো, তবু ফিরে ফিরেই আসতো।'"

🌿 ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ৮
"নতুন পথের সকাল"
রাত পার হলো অশ্রুতে, দোয়ায়।
ফজরের আযান ভেসে এলো।
সওগাত উঠে দাঁড়াল অজু করতে।
ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুতে গিয়ে মনে হলো—
"এই পানি যেন আমার পাপও ধুয়ে দিচ্ছে।"
তারপর দাঁড়ালো নামাজে।
প্রথম তাকবিরেই মনে হলো—
"আজ আমি নতুন এক সওগাত।"
নামাজ শেষে বাইরে বের হলো।
সূর্য উঠছে ধীরে ধীরে।
আকাশের লালচে রঙে সওগাতের মনও ভরে উঠছে।
"হে আল্লাহ্, আজকের সকাল আমার নতুন জীবনের সকাল।
গতরাতের কান্না, তাওবা — আজ আমাকে নতুন করে গড়ে তুলুক।"
সে মনে মনে সংকল্প করে—
"আজ থেকে আমি আমার প্রতিদিনকে ইবাদতের দিন বানাবো।
আমার প্রতিটি কাজে তোমার সন্তুষ্টি খুঁজে নেবো।
তোমার নামে দিন শুরু করবো, তোমার নামেই শেষ করবো।"
পথে যেতে যেতে মুখে জপতে থাকে—
"সুবহানাল্লাহ, আলহামদুল্লাহ, আল্লাহু আকবার..."
আকাশের পাখিগুলোও যেন তাকেই স্মরণ করিয়ে দেয়—
"দেখো, আমরাও তো আল্লাহর তাসবীহ্ করছি।"
এভাবে নতুন পথে, নতুন সকালে সওগাত এগিয়ে চলে।
পেছনে পড়ে থাকে গুনাহর রাতগুলো।
সামনে জ্বলজ্বল করে—
রবের দিকে ফিরে যাওয়ার অসীম আলো।
"হে আল্লাহ্, তুমি সাক্ষী থেকো—
আমি আজ নতুন করে তোমার দিকে হাঁটা শুরু করলাম।
আমার এই পথ চলাকে তুমি সহজ করে দাও।
আমার প্রেম যেন কখনো নিভে না যায়।"
________________________________________
"নতুন পথের সকাল"
রাত পার হলো অশ্রুতে, দোয়ায়।
ফজরের আযান ভেসে এলো।
সওগাত উঠে দাঁড়াল অজু করতে।
ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুতে গিয়ে মনে হলো—
"এই পানি যেন আমার পাপও ধুয়ে দিচ্ছে।"
তারপর দাঁড়ালো নামাজে।
প্রথম তাকবিরেই মনে হলো—
“আজ আমি নতুন এক সওগাত।”
নামাজ শেষে বাইরে বের হলো।
সূর্য উঠছে ধীরে ধীরে।
আকাশের লালচে রঙে সওগাতের মনও ভরে উঠছে।
"হে আল্লাহ্, আজকের সকাল আমার নতুন জীবনের সকাল।
গতরাতের কান্না, তাওবা — আজ আমাকে নতুন করে গড়ে তুলুক।"
সে মনে মনে সংকল্প করে—
"আজ থেকে আমি আমার প্রতিদিনকে ইবাদতের দিন বানাবো।
আমার প্রতিটি কাজে তোমার সন্তুষ্টি খুঁজে নেবো।
তোমার নামে দিন শুরু করবো, তোমার নামেই শেষ করবো।"
পথে যেতে যেতে মুখে জপতে থাকে—
"সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার..."
আকাশের পাখিগুলোও যেন তাকেই স্মরণ করিয়ে দেয়—
"দেখো, আমরাও তো আল্লাহর তাসবীহ্ করছি।"
এভাবে নতুন পথে, নতুন সকালে সওগাত এগিয়ে চলে।
পেছনে পড়ে থাকে গুনাহর রাতগুলো।
সামনে জ্বলজ্বল করে—
রবের দিকে ফিরে যাওয়ার অসীম আলো।
"হে আল্লাহ্, তুমি সাক্ষী থেকো—
আমি আজ নতুন করে তোমার দিকে হাঁটা শুরু করলাম।
আমার এই পথ চলাকে তুমি সহজ করে দাও।
আমার প্রেম যেন কখনো নিভে না যায়।"
________________________________________
🌿 ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ৯
"প্রেম মানেই ফিরে আসা"
প্রেম কি?
শুধু কাছাকাছি থাকা?
শুধু দৃষ্টিতে দেখা?
না — প্রেম মানে ফিরে আসা।
সওগাত এটা আজ গভীরভাবে বুঝে গেছে।
বারবার ভুল করেছে সে।
বারবার পাপের অন্ধকারে ডুবে গেছে।
কিন্তু একেকটা ফিরে আসা—
তাতে ছিল কান্না, ছিল লজ্জা, ছিল আকুলতা।
আর ছিল অথৈ প্রেম।
"হে আল্লাহ্, তুমি কি জানো,
আমি কেন বারবার ফিরে আসি?
আমি জানি — আমি দুর্বল, আমি পাপী।
তবু এই অন্তরে এক অদৃশ্য শক্তি টেনে আনে আমাকে।
এই টানটাই তো প্রেম।"
"প্রেম মানেই ফিরে আসা, ফিরে ফিরে ফিরে আসা।
যতই দূরে যাই, যতই অন্ধকারে পড়ি—
তোমার প্রতি ভালোবাসা আমায় ফেরায়।
তুমি তো আছো, সবসময় আছো।
আমার সমস্ত অপরাধ জানার পরেও—
তুমি বলে ওঠো:
'এসো হে আমার বান্দা, আমি আছি, আমি অপেক্ষা করছি।'
এই অপেক্ষা, এই ডাক—
এটাই তো প্রেমের সর্বোচ্চ রূপ।
এটাই তো সেই ভালোবাসা, যেখানে বিচার নেই—
আছে শুধু দয়ার সাগর।
"হে আমার রব,
আমি তো আসলে তোমারই প্রেমিক।
তুমি ছাড়া আমার কিছু নেই।
তোমার প্রেমেই বাঁচি, তোমার প্রেমেই মরি।
আর এই প্রেমই আমায় বারবার তোমার দিকে নিয়ে আসে।"
**প্রেম মানেই ফিরে আসা।
প্রেম মানেই হারিয়ে আবার খুঁজে পাওয়া।
প্রেম মানেই কান্নায় গলে যাওয়া।
প্রেম মানেই বলা —
"হে আল্লাহ্, আমি তো তোমাকেই ভালোবাসি।"
তুমি ছাড়া আমার কিছু নেই।
তোমার প্রেমেই বাঁচি, তোমার প্রেমেই মরি।
আর এই প্রেমই আমায় বারবার তোমার দিকে নিয়ে আসে।"
প্রেম মানেই ফিরে আসা।
প্রেম মানেই হারিয়ে আবার খুঁজে পাওয়া।
প্রেম মানেই কান্নায় গলে যাওয়া।
প্রেম মানেই বলা —
"হে আল্লাহ্, আমি তো তোমাকেই ভালোবাসি।"
________________________________________
"পথ হারানো, আবার পথ খোঁজা"
কিছুদিন ভালোভাবে চলছিল সওগাত।
কিন্তু হঠাৎ একদিন আবার হারিয়ে গেলো।
কোনো এক মুহূর্তের দুর্বলতায় গুনাহের পথে পা বাড়ালো।
পরে গভীর অনুশোচনায় ডুবে যায়।
"হে আল্লাহ্, আমি জানি, তুমি দয়ার সাগর।
আমি কি আর ফিরে আসতে পারি?
তুমি কি আমাকে গ্রহণ করবে?"
আন্তরের গহীনে উত্তর আসে —
"হে বান্দা, আমি তো ক্ষমাকারী।
ফিরে এসো।"
সওগাত আবার পথ খোঁজে।
এই ফিরে আসার নামই তো প্রেম।
________________________________________

ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১০
“আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি”
________________________________________
আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি,
তুমি যে নেই দেখা ভুবনের কোনো কোণে,
তবু আমার হৃদয় যেন তোমার নামেই কথা বলে,
তোমার স্পর্শেই যেন জীবন জ্বলজ্বল করে।
সওগাতের মুখ থেকে ঝরে পড়ে একান্ত প্রেমের গীত,
আলোর পথ দেখাও, হে আমার প্রিয় রবের বাণী,
তুমি ছাড়া আর কিছু চাওয়া নেই জীবনের আঙিনায়,
তুমি ছাড়া কোনো অন্তর আমি সাজাই না কখনোই।
তোমার রহমতেই ভরে আমার পরান,
তোমার নামেই আমি বাঁচি, তোমার আদরে ধুয়ে যাই দুঃখের ছায়া,
হৃদয়ের গভীরতম কোণে বাজে শুধু তোমার সুর,
আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি — আল্লাহ, আমার অনন্ত প্রিয়।
________________________________________
ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১০
“জীবনের শেষ তাওবা”
________________________________________
বয়সের আঙিনায় এসে,
হারিয়ে যাওয়া দিনের স্মৃতিতে জড়িয়ে,
অন্তর বলে শেষ বার্তা —
আমার জীবনের শেষ তাওবা তোমার কাছে।
অজস্র ভুলের ভারে আমি দমবন্ধ,
তবু তোমার রহমতে আশা জাগে,
হৃদয়ের গভীর গহীনে,
এক টুকরো আলো দাও আমাকে।
প্রার্থনা আমার শেষ যাত্রার সঙ্গী,
তোমার করুণা যেন মুছে দেয় সব পাপের আঁধার,
জীবনের শেষ মুহূর্তে আমার বিনীত আরজি —
তুমি হে সর্বদাতা, আমাকে ক্ষমা করো।
অন্তিম নিঃশ্বাসে বাজুক শুধু তোমার নাম,
সত্যের পথে আমি হাঁটবো অবিরাম,
এই আমার শেষ তাওবা, জীবনের শেষ প্রার্থনা,
তুমি ছাড়া নেই কেউ, আমার আকাশ, আমার জমিন।
________________________________________
 “ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১০” এর তৃতীয় অংশ
“রবের নিকটের পথিক”________________________________________
রাত্রির নিস্তব্ধতায় জেগে ওঠে এক পথিক,
সমস্ত ধূলো ঝেড়ে, সমস্ত মোহ ভেঙে,
হেঁটে চলে অনন্তের পথে —
যেখানে শুধু রবের সান্নিধ্য জাগে।
নির্জন পথের একাকী সওগাত,
কাঁধে প্রায়শ্চিত্তের ভার, হৃদয়ে অনুতাপের সুর,
পিছনে ফেলে এসেছে গ্লানির দিনগুলো,
এগিয়ে চলে আলোর আহ্বানে।
প্রতিটি পদক্ষেপে এক নতুন তাওবা,
প্রতিটি নিশ্বাসে রবের নাম,
জীবনের অনিত্যতা বুঝে,
চলেছে সে এক অনন্ত পথের দিকে।
এ পথের শেষে নয় কোনো রাজমহল,
নয় কোনো বাহ্যিক জয়গান,
শুধু চায় একটুখানি চাহনি —
রবের করুণাময় দৃষ্টির ছোঁয়া।
আমি সওগাত, আমি এক পথিক —
রবের নিকটের পথে চলা,
পড়ে আছি কখনো ক্লান্ত, কখনো জেগে,
তবু ফিরবো না আর পেছনে।
এই অন্তরের ডাক, এই নীরব আকুতি,
আমার প্রিয় রব, আমায় গ্রহণ করো,
তোমার নিকটে ফিরতে চাই বারেবারে,
আমি তো কেবল এক পথিক — তুমিই আমার ঠিকানা।
________________________________________
ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১১
✨ নতুন ভোরের প্রার্থনা
________________________________________
ভোরের প্রথম আলোয়,
যখন দিগন্ত জেগে ওঠে নরম আলোয়,
সওগাত বসে থাকে নিভৃতে —
নতুন দিনের নতুন প্রার্থনায়।
কাল রাতের ভুলগুলো রেখে গেছে ভারী নিশ্বাস,
মনজুড়ে অপরাধবোধের কুয়াশা,
তবু এ নতুন ভোর যেন
রবের পক্ষ থেকে এক অনন্ত সুযোগ।
“হে আমার রব,” — ফিসফিসিয়ে ওঠে কণ্ঠ,
“আজকের দিনটা নিখুঁত না হোক, অন্তত সত্যের পথে রাখো,
আজকের প্রতিটি নিঃশ্বাসে যেন তোমার সন্তুষ্টির সুবাস থাকে।”
দুঃখ আর ক্লান্তির পাহাড় পেরিয়ে,
এই সকাল যেন নূরের নতুন দ্বার,
প্রার্থনা গুনগুনায় —
"তুমি ছাড়া নেই কোনো আশ্রয়, নেই কোনো গন্তব্য।"
এই প্রার্থনায়ই গড়ে তোলে নতুন সওগাত,
প্রতিদিন একটু একটু করে গলে পাপের শিকল,
প্রতিদিন একটু একটু করে জন্ম নেয় নতুন বিশ্বাস,
আর এইভাবেই একদিন সে হয়ে উঠবে পুরোপুরি ফিরে আসা এক আত্মা।
________________________________________
ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১২
✨ স্মৃতির কাছে ক্ষমা________________________________________
তোমরা যারা ছিলে আমার গতকাল,
তোমরা যারা ছিলে হৃদয় ছেঁড়া অতীত —
আজ এই ভোরের ছায়ায় দাঁড়িয়ে
তোমাদের কাছে আমি চাই ক্ষমা।
আমি ছিলাম এক বেপরোয়া পথিক,
ভুলের আঁধারে বারবার হারিয়েছি পথ,
কত চেনা মুখ কাঁদিয়েছি অজান্তে,
কত অনুতপ্ত রাত কেটেছে তার হিসেব নেই।
আজ তোমাদের সামনে দাঁড়িয়ে বলি —
"ক্ষমা করো আমাকে।"
সে ভুলের, সে ঔদ্ধত্যের, সে ভালোবাসাহীন সময়ের,
যেখানে রবকেও হারিয়ে ফেলেছিলাম হৃদয়ের গহীনে।
প্রিয় স্মৃতি,
তুমি তো কতটা মধুর ছিলে একদিন,
আজ তুমিই আমার অপরাধের আয়না —
দেখিয়ে দাও কতটা ভেঙেছিলাম আমি নিজেকেই।
তবু আমি আজ ফিরেছি রবের ডাকে,
এই ভাঙা হৃদয় নিয়ে এসেছি তার চৌকাঠে,
তোমরা যদি পারো, ক্ষমা করো,
আর আমার জন্য দোয়া করো —
যেন আর কোনোদিন ভুল পথে না যাই।
আজ আমি শুধু রবের প্রেমের পথিক,
হারানো সেই সওগাত আর নেই,
নতুন আশার আলোয় গড়া এক নতুন আমি,
যে প্রতিটি স্মৃতির কাছেই মাথা নত করে বলে —
"ক্ষমা করো আমাকে।"
________________________________________
ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১৩
✨ এক নতুন সওগাত
________________________________________
সে আর আগের সেই সওগাত নয়।
না, সে আর সেই ভাঙা, ক্লান্ত, অপরাধবোধে ভরা পথিক নয়।
আজকের ভোরের আলোয়,
নতুন করে সে চিনেছে নিজেকে —
এক নতুন সওগাত।
ভেতরের সমস্ত গ্লানি ধুয়ে গেছে চোখের জলে,
রবের করুণা যেন তার অন্তর ছুঁয়ে দিয়েছে,
মনে জেগেছে এক অপরিসীম প্রশান্তি —
"আমার রব আমাকে ভালোবাসেন।"
আজ সে আর অতীতের বোঝা টেনে চলে না।
ভুলগুলো স্মরণ করে, কিন্তু হৃদয়ে পুষে রাখে না,
বরং শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে চলে প্রতিটি নতুন দিনে।
প্রতিটি নামাজে, প্রতিটি দোআয়,
সে রবের নিকটে নতুনভাবে সাজায় নিজের আত্মাকে,
প্রত্যেক সেজদায় চায় একটাই কথা —
"হে রব, আমাকে তোমার প্রিয় বানিয়ে নাও।"
মানুষের চোখে হয়তো সে এখনও এক সাধারণ ব্যক্তি,
কিন্তু তার নিজের চোখে সে এক নতুন মানুষ —
আলোর পথে ফিরে আসা,
রবের প্রেমে পূর্ণ,
এক নতুন সওগাত।
________________________________________
ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১৪
✨ কালিমার শক্তি
________________________________________
কালিমার (لا إله إلا الله محمد رسول الله) শক্তিই তো সওগাতের অন্তরকে বদলে দিয়েছে।
"لا إله إلا الله محمد رسول الله"
সওগাতের ঠোঁটের প্রতিটি কাঁপা উচ্চারণে যেন জাগে এক অন্যরকম শক্তি।
এ কালিমার মাঝে কত বছর ধরে হারিয়ে ছিল তার আত্মা,
আজ সে যেন নতুনভাবে খুঁজে পায় নিজেকে।
এই শব্দগুলো আর শুধু শব্দ নয়,
এ যেন অন্তরের ঘুম ভাঙানো আঘাত,
একটা ঝড়, একটা বিপ্লব —
ভিতর থেকে সমস্ত অন্ধকার সরিয়ে দেয়া এক আলোর ঝলকানি।
"কোনও ইলাহ নেই, শুধু আল্লাহই ইলাহ।"
এই কথাটা আজ তার হৃদয়ে এমনভাবে বসেছে —
সমস্ত ভ্রান্ত প্রেম, সমস্ত মিথ্যা মোহ, সমস্ত ক্ষণিকের সুখ —
সবই আজ তুচ্ছ।
এখন সে জানে —
কেবল এক রব আছেন, যিনি চিরস্থায়ী, করুণাময়, পরম প্রিয়।
এই কালিমার শক্তিতে সওগাত যেন পেয়েছে নতুন পাখা,
এক নতুন বাতাসে ভেসে চলা — ফিরে আসার পথে অবিচল।
তার প্রতিটি নামাজ আজ গভীর হয়ে উঠেছে,
প্রতিটি দোআয় এই কালিমার সুর বাজে,
"হে আল্লাহ, তুমি ছাড়া আর কেউ নেই যার সামনে মাথা নত করবো।"
আজ সওগাত জানে —
জীবনের সব হারানো, সব ভাঙাগুলোও মাফ করে দেন এই কালিমার মালিক,
আর এই বিশ্বাসই তাকে গড়ে তুলছে —
এক অটুট, রবমুখী, নতুন মানুষ।
________________________________________
ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১৫
✨ নিজের সঙ্গে সন্ধি
________________________________________
একটা সময় ছিল —
সওগাত নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করত দিনরাত।
ভিতরের অপরাধবোধ, অশান্তি, হতাশার পাহাড়
তার বুকের ভেতরে বসে থাকত পাথরের মতো।
আজকাল সে বুঝতে শিখেছে —
নিজেকেও ক্ষমা করতে হয়।
রব তো ক্ষমাশীল, তাঁর বান্দাকেও নিজেকে ছেড়ে দিতে জানতে হয়।
এই নতুন পথে হাঁটতে হাঁটতে সওগাত একদিন মুখোমুখি হয় নিজেরই ছায়ার —
ভুলের, পাপের, অশ্রুর ছায়া।
সে তখন বলে —
"হ্যাঁ, আমি ভুল করেছি। কিন্তু আজ আমি রবের পথে ফিরেছি।"
সেই মুহূর্তেই যেন এক নতুন সন্ধি জন্ম নেয় —
নিজের সঙ্গে।
নিজেকে আর দোষারোপ নয়,
নিজেকে আর ছোট নয়,
বরং এক দোআয় নিজেকে বলে —
"চলো, আমরা একসাথে এগিয়ে যাই রবের দিকে।"
এই নিজের সঙ্গে সন্ধির পরেই সওগাতের অন্তর শান্ত হয়,
নামাজে মন বসে,
কুরআনের শব্দে হৃদয় কেঁপে ওঠে।
সে জানে —
যত বড় পাপই হোক, রব যদি মাফ করে দেন, তবে নিজেকেও মাফ করে দিতে হবে।
কারণ রব তো সবচেয়ে বড় ক্ষমাশীল।
আজ সওগাত নিজের সঙ্গে সন্ধি করে —
এক নতুন জীবন, এক নতুন ভোরের দিকে এগিয়ে চলার সন্ধি।
এই সন্ধিই তাকে দেয় অদম্য সাহস —
"আমি রবের দিকে ফিরে যাচ্ছি, আমি কখনো আর পিছিয়ে যাব না।"
________________________________________
ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১৬
✨ আল্লাহর প্রেমে হারানো এক আমি
________________________________________
আমি আর সেই আগের আমি নই,
আমি আজ আল্লাহর প্রেমে হারানো এক আমি।
এই প্রেম এমন এক সমুদ্র — যার কিনারা নেই, গভীরতা মাপার সাধ্য নেই।
একদিন যার চোখে ছিল কেবল দুনিয়ার মোহ,
আজ তার চোখ বেয়ে নামে কেবল রবের প্রেমের অশ্রু।
একদিন যার কানে বাজত কেবল ক্ষণিকের সুখের সুর,
আজ তার কানে বাজে কেবল "আল্লাহু আকবার" — এই মহান উচ্চারণ।
কতদিন খুঁজেছি এই ভালোবাসা,
দুনিয়ার নানা দরজায় ঠকঠকিয়েছি,
কিন্তু আজ বুঝেছি —
"আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার প্রেম কোথাও নেই।"
এ প্রেমে কোনো স্বার্থ নেই, কোনো ক্লান্তি নেই।
প্রতি সেজদায় আমি হারাই নিজেকে,
প্রতি আয়াতে আমি নতুন করে পাই তাঁকে।
আজকের আমি —
একটা অশ্রু ভেজা কপাল,
একটা কাঁপা কণ্ঠে কালিমার উচ্চারণ,
একটা তৃষ্ণার্ত হৃদয় — যে চায় শুধু রবের নৈকট্য।
"হে আমার রব,"
"আমি তোমার প্রেমেই হারিয়ে যেতে চাই, ফিরে পেতে চাই না আর দুনিয়ার মোহ।"
এই প্রেমই আজ আমাকে গড়ে তুলছে এক নতুন মানুষ —
এক নিরন্তর পথিক, এক প্রেমিক আত্মা,
যে চায় শুধু একটুখানি রবের সান্নিধ্য,
আর কিছুই নয়, আর কিছুই নয়...
________________________________________
ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১৭
✨ প্রতিদিনের তাওবা
________________________________________
সওগাত বুঝে গিয়েছে —
ফিরে আসা মানেই পাপমুক্ত হয়ে যাওয়া নয়, বরং পাপের বিরুদ্ধে প্রতিদিনের এক যুদ্ধ।
কত সহজেই মন আবার পুরনো দিকে টানে,
কত সহজেই জিহ্বা, চোখ, কান আবার ভুল পথে চলতে চায়।
তাই সে শিখে নিয়েছে —
"প্রতিদিনের তাওবা, প্রতিমুহূর্তের তাওবা।"
আজ তার সকাল শুরু হয় তাওবা দিয়ে —
"হে আল্লাহ, গতকাল যা করেছি, যা বলেছি — যা ছিল তোমার অপ্রিয় — ক্ষমা করো।"
সন্ধ্যা নামে নতুন তাওবা নিয়ে —
"হে রব, আজকেও আমি দুর্বল ছিলাম, তুমি ক্ষমা করো, তুমি শক্তি দাও আরও ভালো হতে।"
এভাবেই সওগাত বুঝে গিয়েছে —
এই দুনিয়ার যাত্রা এক "অন্তহীন তাওবার পথ"।
পাপ করবে মানুষ, ভুল করবে, আবার ফিরে আসবে —
এই ফিরে আসার মাঝে লুকিয়ে রবের রহমতের এক মহাসাগর।
এখন তার হৃদয়ে একটাই চাওয়া —
"হে রব, আমাকে এমন বানিয়ে দাও যে তাওবায় কখনো ক্লান্ত হবো না।"
"তোমার কাছে ফিরে আসার দ্বার যেন আমার জন্য সবসময় খোলা থাকে।"
এই প্রতিদিনের তাওবা-র বরকতই তাকে আলোকিত করছে,
তাকে প্রতিদিন নতুন এক সওগাত করে তুলছে —
ভিতরে আরো নির্মল, আরো রবমুখী।
আজ সে জানে —
"যতবার পড়ে যাই, ততবারই তাওবা করে ফিরে আসবো, হে আমার রব।"
"তুমি আছো বলেই আমি ভয় পাই না — বারবার ফিরে আসতে।"

________________________________________
ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১৮
✨ রবের ভালোবাসার গল্প
________________________________________
সওগাত জানে —
রবের ভালোবাসা কোনো সাধারণ ভালোবাসা নয়।
এটা এমন এক ভালোবাসা, যা দুনিয়ার সমস্ত ব্যথা, সমস্ত দুঃখ
একসাথে মুছে ফেলে।
এই ভালোবাসা তাকে প্রথম টেনে এনেছিল অন্ধকার থেকে আলোর দিকে,
এই ভালোবাসা তাকে ভেঙে ফেলে পুরানো গ্লানি থেকে মুক্ত করে দিয়েছে।
সবার আগে যখন সে রবের ভালোবাসা অনুভব করল,
তার অন্তর থেকে উঠল এক অজানা গান —
এক শান্তি, এক মধুর গান যা দুনিয়ার ভাষা ছাড়িয়ে যায়।
রব তার প্রতি চোখ তুলে তাকালেন,
আর সে বুঝল — সে কখনো একা নয়।
তার সব ভুল, সব ব্যর্থতা সত্ত্বেও —
রব তাকে ভালোবাসেন,
সেই ভালোবাসায় সে জীবনের নতুন শুরু পেয়েছে।
এই ভালোবাসাই তাকে শিখিয়েছে —
কীভাবে ধৈর্য ধরতে হয়, কীভাবে ক্ষমা করতে হয়,
আর কীভাবে নিজের অন্তরে এক নতুন সূর্য উদিত হয়।
এই ভালোবাসার ছায়ায় সওগাত আজ নিজেকে পেয়েছে,
এক পথিক, এক প্রেয়সী, এক বন্ধু —
যে চায় শুধু রবের সান্নিধ্য,
আর কিছুই নয়।
________________________________________
🕊️ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ১৯
✨ আস্থা ও ধৈর্য
________________________________________
সওগাতের পথ সহজ ছিল না,
রবের পথে চলা মানে একটানা যুদ্ধ —
নিজের আবেগ, নিজের আত্মাকে প্রতিনিয়ত জয় করা।
কিন্তু সে শিখেছে —
আস্থা হল সেই শক্তি যা অন্ধকারেও আলো দেখতে শেখায়,
আর ধৈর্য হল সেই বন্ধন যা ধ্বংসের মুখে টিকিয়ে রাখে।
প্রত্যেক বিপদে সওগাতের অন্তর বলত —
"রব আছেন, তাই আমি ভয় পাই না।"
যখন জীবন তাকে কঠিন পরীক্ষা দেয়,
সে তখন আস্থায় চেয়ে থাকে,
ধৈর্যের দোয়ায় নিজেকে শক্ত করে তোলে।
আস্থা তাকে দেখিয়েছে,
যে শুধু রবের হাতে সবকিছু তুলে দিলে,
তার জীবনে শান্তি আসবে, সুখ আসবে।
ধৈর্য তাকে শিখিয়েছে,
যে প্রতিটি অসুবিধার পেছনে আলোর এক ঝলকানি থাকে।
আর সেই আলোর জন্য অপেক্ষা করতেই হবে,
আলোর জন্য ধৈর্য ধরে থাকতে হবে।
আজ সওগাত দাঁড়িয়ে আছে —
এক এমন স্থিরতা নিয়ে, যা অতীতের ঝড়-বৃষ্টি ও কষ্টকে জয় করেছে।
একটি বিশ্বাস ও দৃঢ়তার সাথে —
"রবের আস্থায় আমি সবকিছু পারবো।"
________________________________________
🕊️ ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ২০
✨ আলোর সন্ধানে
________________________________________
সওগাত পথ চলেছে অন্ধকার থেকে আলোয়ের দিকে।
অন্ধকার ছিল দীর্ঘ,
তবু সে হাল ছাড়েনি,
কারণ তার অন্তর জানত —
"আলো কোথাও আছে, একদিন অবশ্যই পাবে।"
প্রতিদিন নতুন সূর্য তাকে ডাকত,
এক নতুন সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে।
সে আর পিছিয়ে তাকাত না,
তার পায়ের ছাপ রেখেছিল শুধু সামনে এগোয়ার পথে।
আলোর সন্ধানে সে পায় নতুন স্বপ্ন,
নতুন আশা, নতুন ভালোবাসা।
সেই আলোর মাঝে পায় সে নিজের সত্ত্বা,
যা আগে ছিল হারিয়ে যাওয়া এক ধোঁয়াটে কল্পনা।
আলোয় ভেজা তার চোখে স্বপ্নের ঝলকানি,
ভালবাসার অমোঘ শক্তি জাগ্রত হয়,
এক নতুন জীবন শুরু হয় —
এক নতুন রবের পথে যাত্রা।
সওগাত জানে — আলোর সন্ধান কেবল একবার নয়,
একটি জীবনের সংগ্রাম,
একটি অন্তহীন চেষ্টার নাম।
তবুও সে এগিয়ে চলে,
কারণ সে বিশ্বাস করে —
রবের আলো তাকে কখনো ছেড়ে যাবেনা।
________________________________________
🕊️ফিরে আসার গল্প — খণ্ড ২১
✨ শেষ পর্ব: পূর্ণ মুক্তি ও শান্তি
________________________________________
সওগাতের যাত্রা আজ এক নতুন ধাপে পৌঁছেছে।
অন্ধকার ছাড়িয়ে আলোয়, সংকট ছাড়িয়ে শান্তিতে।
এই পথিক আজ বুঝেছে —
মুক্তি মানে শুধু দুনিয়ার বন্ধন থেকে মুক্তি নয়,
বরং অন্তরের সমস্ত দ্বন্দ্ব, সমস্ত ভয় ও অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি।
শান্তি মানে আল্লাহর সাথে এক গভীর মিলন,
যেখানে আর কোনো ব্যথা, কোনো কষ্ট নেই,
শুধু এক গভীর ভালোবাসা ও স্বীকারোক্তি।
সওগাত জানে —
এই শান্তি অর্জন করা কঠিন,
কিন্তু অসম্ভব নয়।
প্রতিটি পদক্ষেপে, প্রতিটি তাওবার জোরে,
সে আজ এক নতুন আমি হয়ে গেছে।
আল্লাহর করুণা তার মুক্তির চাবিকাঠি,
আর বিশ্বাস তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ভরসা।
আজ সে বলতে পারে,
"আমি মুক্ত, আমি শান্ত, আমি আল্লাহর মাঝে।"
________________________________________
🌙 সমাপ্তি
ফিরে আসার গল্প — শেষ অনুরোধ
________________________________________
✨ রবের করুণার অপেক্ষা
এই পুরো ফিরে আসার গল্প-এর গভীরে ছিল একটিই অনুভূতি — রবের করুণার অপেক্ষা।
আমরা কেউই নিখুঁত নই। পাপ আর গাফেলতির পাহাড়ে চাপা পড়ে যাই।
কিন্তু একটা কথা সব সময় মনে রাখি —
👉 “রব কাউকে নিরাশ করেন না।”
👉 “তাওবাকারী বান্দাকে তিনি আপন করে নেন।”
এই বইতে আমি চেষ্টা করেছি একজন অপরাধী অন্তরের ফিরে আসার পুরো পথচলা তুলে ধরতে।
আজও আমি তেমনই — রবের করুণার অপেক্ষায় থাকা এক ক্ষুদ্র পথিক।
আপনারাও থাকুন — এই অপেক্ষায়, এই ভালোবাসায়, এই আশায়।
________________________________________
📖 "ফিরে আসার গল্প" থেকে জীবনপাঠ
এই গল্পে হয়তো অনেক ত্রুটি আছে।
আমি কোনো আলেম নই, বুযুর্গও নই।
শুধু এক পাপী অন্তরের অনুরণন এখানে রেখেছি।
তবু এই গল্প থেকে আমি নিজে কিছু জীবনপাঠ শিখেছি —
✅ ফিরে আসার দরজা কখনো বন্ধ হয় না।
✅ প্রতিদিনের তাওবা জীবনভরের চর্চা।
✅ রবের ভালোবাসা কখনো কমে না। বরং আমরাই দূরে সরে যাই।
✅ একাকীত্বও এক বরকত — সেখানে রব ডেকে নেন।
✅ জীবনে ধৈর্য, আস্থা, দোয়া — এগুলোই বড় রসদ।
আপনারাও হয়তো নিজ নিজ জীবনে এই পথচলার কোনো না কোনো অংশ খুঁজে পাবেন।
________________________________________

🕊️ পাঠকের প্রতি একান্ত আহ্বান
প্রিয় পাঠক,
এই ফিরে আসার গল্প পড়ে যদি আপনার হৃদয়ে একটুখানি স্পর্শ পড়ে —
👉 তবে আজই, এখনই, এই মুহূর্তেই রবের দিকে ফিরে আসুন।
👉 আজ যে নিঃশব্দে কাঁদবেন,
👉 আজ যে তাওবার হাত তুলবেন,
👉 আজ যে নামাজে দাঁড়াবেন —
কী জানেন? সেই প্রতিটি পদক্ষেপে আপনার রব অপেক্ষায় আছেন।
👉 তাঁর করুণা অপার।
👉 তাঁর ভালোবাসা অবর্ণনীয়।
👉 তাঁর দরজা কখনো বন্ধ হয় না।
আপনার জন্য এই একান্ত অনুরোধ — জীবনকে এইভাবে সাজান যেন প্রত্যেক দিন, প্রত্যেক রাতে রবের দিকে আরেকটু করে ফিরে যেতে পারেন।
এটাই চেয়েছি এই ছোট্ট বইটির মাধ্যমে মনে করিয়ে দিতে।
আপনার হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি নিখাদ ভালোবাসা জাগুক — এই দোয়া রেখে শেষ করছি।

 আজ এই “ফিরে আসার গল্প” শেষ করছি, কিন্তু আমার ফিরে আসা শেষ হয়নি।
আমি এখনো প্রতিদিন ফিরে আসার পথেই হাঁটছি।
❝ কখনো পড়ে যাই, আবার উঠে দাঁড়াই।
❝ কখনো কান্নায় বুক ভাসাই, আবার আশার আলো খুঁজি।
❝ কখনো রবের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে “কবুল করুন, কবুল করুন...” বলে প্রার্থনা করি।
আপনারাও জানেন — কোনো পথ পুরোপুরি শেষ হয় না।
তাওবার পথও চিরকালীন চলমান পথ।
এই গল্প লিখতে গিয়ে নিজের অনেক পুরনো ক্ষত আবার রক্তাক্ত হয়েছে।
আবার অনেক ভুলে যাওয়া ভালোবাসার অনুভূতিও জেগে উঠেছে।
সব শেষে এটুকুই বলবো —
👉 “আমি এখনো অপরাধী, কিন্তু ফিরে আসার আশায় বাঁচি।”
👉 “আমি এখনো পাপী, কিন্তু তাওবার দুয়ারেই ঘুরেফিরে আসি।”
👉 “আমি এখনো দূরে, কিন্তু রবের ভালোবাসার প্রতি ক্ষুধার্ত।”
________________________________________
🕊️ শেষ দোয়া
ইয়া আল্লাহ্,
এই তুচ্ছ বান্দার এই ছেঁড়া ছেঁড়া কথাগুলো যদি একজন মানুষকেও তাওবার পথে ডেকে আনে —
👉 তবে এই কলমের প্রতিটি শব্দ যেন কিয়ামতের দিনে আমার নাজাতের ওসিলা হয়।
ইয়া রব্বি,
👉 পাঠকের হৃদয়ে যেন তোমার ভালোবাসার আগুন জাগিয়ে তোলো।
👉 তাদেরকেও আমার মতো এক পাপী পথিকের মতো বারবার তাওবার পথে হাঁটার তাওফিক দাও।
👉 আমাদের সবাইকে শেষ নি:শ্বাস পর্যন্ত তাওবাগ্রাহী রাখো।
👉 কিয়ামতের দিন আমাদের তাওবা কবুল করে আমাদের গুনাহ মাফ করে দাও।
ইয়া রব্ব,
👉 *এই লেখার প্রতিটি পাঠক যেন এই “ফিরে আসার গল্প”-এর কোনো না কোনো অধ্যায়ে নিজেকে খুঁজে পায়,
👉 আর নতুন করে রবের দিকে এক পা এগিয়ে যেতে পারে।
আমিন।
সমস্ত প্রশংসা শুধু আল্লাহ্র জন্য।
________________________________________
আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (আরিফ শামছ্)
📍 রিয়াদ, সৌদি আরব
🕋 ১৪৪৭ হিজরি / ২০২৫ ঈসায়ী

Comments

    Please login to post comment. Login