প্রথম পাট: ছেলেটার নাম রিয়াদ
রিয়াদ ছিল খুব চুপচাপ একটা ছেলে। আমাদের স্কুলের পেছনের বস্তিতে থাকতো। প্রতিদিন ছেঁড়া জামা পরে স্কুলে আসতো, আর হাসিমুখে 'সার' বলতো। ওর খাতা পাতাও কম ছিল, তবুও সব সময় ক্লাসের কাজ ঠিকঠাক করতো।
আমরা অনেক সময় বুঝতেই পারতাম না, ও ঠিক কখন খেয়ে আসে, কখন খায় না। একদিন দেখলাম, আমি টিফিনে পাউরুটি এনেছি, রিয়াদ চুপ করে পাশে বসে আছে। আমি বললাম, "আয় ভাগ করে খাই!" ও হাসলো। কিন্তু সেই হাসির পেছনে লুকানো ছিল অভাবের দীর্ঘ গল্প।
দ্বিতীয় পাট: বন্ধুত্বের শক্তি
একদিন স্কুলে বিজ্ঞান মেলা হলো। সবাই টিম বানালো। রিয়াদকে কেউ নিতে চাইলো না, কারণ ওর পোষাক ছেঁড়া, কেউ ভাবতো ও কিছু পারবে না। আমি ওকে নিজের টিমে নিলাম। রিয়াদ নিজ হাতে কাগজ দিয়ে একটি সুন্দর রকেট মডেল বানালো। শিক্ষক খুব প্রশংসা করলেন।
সে দিন ও বলেছিল, "তুই না থাকলে কেউ আমায় বিশ্বাসই করতো না।" আমি বলেছিলাম, "বন্ধু মানে তো এই—যার পাশে দাঁড়ানো যায়।"
তৃতীয় পাট: কষ্টের ছায়ায় আলো
একদিন হঠাৎ রিয়াদ স্কুলে এলো না। পরে জানলাম ওর বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, বাড়িতে চিকিৎসার টাকা নেই। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে নিজেরা যা পারি জোগাড় করলাম, টিচারদের বললাম, সবাই মিলে কিছু সাহায্য করলাম।
আজ অনেক বছর পর, রিয়াদ নিজে একজন শিক্ষক। এখনো আমাকে মাঝে মাঝে ফোন দেয়, বলে—"বন্ধু, তোর ভাগেই আজ আমি এখানে।"