প্রথম পাট: শুরুটা একসাথে
রিফাত ও জামিল—দুজনেই একই পাড়ায় বড় হয়েছে, একই স্কুলে পড়ে। রিফাত সব সময় পড়াশোনায় মন দেয়, খুব পরিশ্রম করে। ঘুম থেকে ভোরে উঠে, নিয়ম করে পড়ে, মাকে সাহায্যও করে। আর জামিল? সে বরং সারাদিন মোবাইল নিয়ে খেলে, হোমওয়ার্ক করে না, ক্লাসেও প্রায়ই ঘুমায়।
তবুও তাদের বন্ধুত্ব ছিল গভীর। রিফাত মাঝে মাঝে জামিলকে পড়তে সাহায্য করতো, বুঝিয়ে দিত, বলত—"দোস্ত, একটু চেষ্টা কর। দেখবি তুইও পারবি।"
কিন্তু জামিল বলতো, "তুই পারিস, আমি না। এত পরিশ্রম ভালো লাগে না রে ভাই!"
দ্বিতীয় পাট: জীবন দৌড়ে ফারাক
দিন যায়, সময় বদলায়। স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষায় রিফাত ভালো ফল করে শহরের ভালো কলেজে ভর্তি হয়। জামিল পাশ করতে পারেনি। সে একরকম হাল ছেড়ে দিয়েছিল আগেই। সে বলত, “সবাই তো জিততে পারে না!”
রিফাত নিজের লক্ষ্য ঠিক রেখেছিল। কলেজে পড়ার পাশাপাশি টিউশনি করত, বাড়ির খরচ চালাত। অন্যদিকে, জামিল বেকার ঘুরে বেড়াত, সময় নষ্ট করত।
তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। ফোনে কথাও কমে আসে। কিন্তু রিফাত কখনো জামিলকে ভুলে যায়নি।
তৃতীয় পাট: ফিরে দেখা
পাঁচ বছর পর... একদিন হঠাৎ রাস্তার পাশে চা খেতে গিয়ে রিফাত একজন চায়ের দোকানিকে চিনে ফেলে—সে জামিল! জামিল প্রথমে লজ্জা পায়, কিন্তু পরে বলে, “ভুল ছিল রে ভাই। যদি তোর কথায় কান দিতাম...”
রিফাত তাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “দোস্ত, এখনো দেরি হয়নি। আয়, আমি তোকে সাহায্য করবো। আবার শুরু কর।”
রিফাত জামিলকে রাতের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়, দোকানের পাশে একটুকু সময় বের করে পড়ায়। ধীরে ধীরে জামিল বদলায়, নিজের অলসতা কাটিয়ে জীবনের জন্য লড়তে শেখে।
শেষ কথা:
বন্ধু মানে শুধু ভালো সময়ে পাশে থাকা না, খারাপ সময়েও হাত বাড়িয়ে দেওয়া। কেউ হয়তো পরিশ্রমী, কেউ হয়তো অলস—তবুও বন্ধু যদি পাশে থাকে, তবে হারানো মানুষও আবার জিততে পারে।