পর্ব ১: গ্রামের সবচেয়ে বড় দোকান
পাহাড়ঘেরা ছোট্ট গ্রাম পাতারবাড়িতে ছিল এক বড় দোকান – ‘চান মিয়ার স্টোর’। চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে খেলনা, চকলেট, সাবান—সব কিছুই মিলত সেখানে। দোকানের মালিক চান মিয়া, গম্ভীর ও কড়া স্বভাবের মানুষ। কিন্তু তার সবচেয়ে বড় দোষ ছিল হিংসা।
যদি কারও দোকানে বেশি ক্রেতা যেত, তাহলে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যেত তার!
একদিন পাশের মোড়ে এক নতুন দোকান খুলল—‘রহিমের হ্যাপি শপ’। হাসিখুশি রহিম সহজভাবে সবাইকে দাম দিত, খদ্দেরদের গল্প করত, আর মাঝে মাঝে ছোট বাচ্চাদের বিনা পয়সায় টফি দিত।
পর্ব ২: শুরু হলো ঈর্ষা
রহিমের দোকানে লোকের ভিড় বাড়তে থাকল। চান মিয়া বুঝতে পারলেন, তার দোকান ফাঁকা হচ্ছে।
তিনি ভাবলেন, “এই রহিমের এত সাহস! আমার দোকান থেকে খদ্দের কেড়ে নিচ্ছে?”
সেই থেকে শুরু হলো চান মিয়ার ষড়যন্ত্র। তিনি লোক ছড়িয়ে দিলেন, “রহিমের চিনি নাকি নকল, তার চাল পোকায় খাওয়া।”
কিন্তু গ্রামের মানুষ এসব গুজবে কান দিল না। তারা জানত, রহিম সৎ আর ভালো মানুষ।
পর্ব ৩: হিংসার ফল
চান মিয়া একদিন রাতের বেলা রহিমের দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করলেন। কিন্তু সেই রাতে আকাশে মেঘ ছিল। হঠাৎ এক বজ্রপাত হলো—চান মিয়া যেই কাঠে আগুন ধরাতে গেল, সেই কাঠে বাজ পড়ে!
তিনি আহত হলেন এবং লোকজন তাকে ধরে ফেলল। সব ঘটনা জানাজানি হলে গ্রামের মুরব্বিরা বললেন,
“হিংসা মানুষকে অন্ধ করে দেয়, আর তার ফল হয় ভয়াবহ।”
চান মিয়াকে এক মাসের জন্য গ্রামছাড়া করা হলো।
পর্ব ৪: পরিবর্তনের শুরু
এক মাস পর চান মিয়া গ্রামে ফিরে এলেন। মুখে লজ্জা, চোখে অনুতাপ। তিনি রহিমের কাছে ক্ষমা চাইলেন, আর বললেন,
“তুমি মানুষ ভালো, আমি ভুল করেছি। তুমি ক্ষমা করে দাও।”
রহিম হাসিমুখে বলল, “ভুল সবাই করে, শর্ত একটাই—ভবিষ্যতে হিংসা নয়, ভালোবাসা।”
সেই থেকে চান মিয়া তার দোকানে হেসে কথা বলা শুরু করলেন। দাম কমালেন, ছেলেমেয়েদের চকলেট দিলেন। আর হ্যাঁ—দুই দোকানই তখন চলত সমানভাবে। গ্রামবাসী বলত,
“এই হিংসুটে দোকানদারটাই এখন সবার প্রিয় চান কাকু!”
শিক্ষা: হিংসা কারও ভালো চায় না। মন থেকে ভালোবাসা দিলে, সেই ভালোবাসাই ফিরে আসে।