Posts

গল্প

দাজ্জাল শাশুড়ি

June 8, 2025

Fijon Qurayish

Original Author ফিজন কোরাইশ

38
View

পার্ট ১: আগমণ — নতুন জীবন, নতুন ছায়া

রিয়া আর রাফিক ঢাকা শহর ছেড়ে ঢাকার কাছাকাছি এক নতুন শহরে চলে আসে রাফিকের নতুন চাকরির কারণে। তারা খুব উৎসাহিত, নতুন জীবন শুরু করার জন্য প্রস্তুত। তবে রিয়ার সঙ্গে তার শাশুড়ি, মিসেস করিমও চলে আসে তাদের সঙ্গে। মিসেস করিম ছিলেন ঢাকার পুরনো এলাকা থেকে আসা একজন শক্তিশালী এবং গম্ভীর নারী, যিনি পরিবারকে সবসময় নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান।

প্রথম কিছুদিন রিয়া মিসেস করিমের সঙ্গে ভালোভাবে চলতে চায়, কিন্তু শাশুড়ির একগুঁয়ে আচরণ রিয়াকে মন খারাপ করে দেয়। মিসেস করিম প্রতিদিন রিয়ার ঘরের ছোটখাটো জিনিস নিয়েও তিরস্কার করেন। "এখানে এটা রাখবে কেন? এটা করবি না, ওটা করবি না," এইসব কথা শুনে রিয়ার মনে অদ্ভুত একটা চাপ তৈরি হতে থাকে।

একদিন রাতে রিয়া রুম থেকে বের হয়ে দেখে শাশুড়ি গভীর চিন্তায় মন্ত্রপাঠ করছেন। তার চোখ কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না, যেন কোনো অন্য জগতে মগ্ন। এই দৃশ্য দেখে রিয়ার মনে সন্দেহ জাগে—শাশুড়ির মধ্যে কি কিছু গোপন শক্তি আছে?

পার্ট ২: প্রথম সংকেত — রহস্যের দ্বারপ্রহরী

রিয়া কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করে শাশুড়ি খুব রহস্যময় আচরণ করছেন। একদিন সে দেখে শাশুড়ি গোপনে ঘরের দরজা আটকে রেখেছেন। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে রিয়া দেখতে পায় অদ্ভুত কিছু প্রতীক, যেগুলো দেখে রিয়ার রক্ত জমাট হয়ে যায়। তার চোখ পড়ে এক পুরোনো বইয়ের পৃষ্ঠায় যেখানে ‘দাজ্জাল’ নামের অন্ধকার শক্তির কথা লেখা।

রিয়া বুঝতে পারে, শাশুড়ি শুধুমাত্র নিয়ন্ত্রণকামী নন, তার সঙ্গে কোনো গোপন কালো যাদু জড়িত। সে ভয়ে তার স্বামী রাফিককে কিছু বলতে চায়, কিন্তু রাফিক তাকে বোঝায় ‘মা’কে সম্মান করতে হবে। রিয়া একা হয়ে পড়ে, আর শাশুড়ির সঙ্গে তার লুকোচুরি শুরু হয়।

পার্ট ৩: সন্দেহের আগুন — বন্ধুত্ব এবং বিশ্বাস

রিয়া তার বন্ধু সুমি এবং সুমনকে সব কথা বলে। তারা ঠিক করে রিয়াকে সাহায্য করবে শাশুড়ির গোপন রহস্য উন্মোচনে। কিন্তু শাশুড়ি এর খবর পেয়ে তার মনোভাব আরও কঠিন হয়ে যায়। সে রিয়াকে বাড়ির বাইরে যাওয়া থেকে বাধা দেয়, রাফিকের সঙ্গে কথাও কমিয়ে দেয়।

একদিন রিয়া দেখতে পায় শাশুড়ি রাতে জাদুকরদের গোপন মিটিংয়ে যাচ্ছেন। সেখানে সে শোনা যায় কুৎসিত ও কালো মন্ত্র যা দাজ্জালের শক্তি বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এই খবর পেয়ে রিয়া আরও দৃঢ় হয় এই অন্ধকার শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার।

পার্ট ৪: অন্ধকারের ছায়া — চোখ লাল হয়ে ওঠে

রিয়া এক রাতে ঠিক করে শাশুড়ির ঘরে ঢুকে পুরো রহস্য উন্মোচন করবে। সে দরজা ভেঙে ঢুকে দেখে শাশুড়ি দাজ্জালের প্রাচীন যাদুবিদ্যার বই থেকে পাণ্ডুলিপি পড়ছেন, তার চোখ হঠাৎ লালাভ হয়ে যায়, আর তার হাত থেকে অদ্ভুত আলো ঝলমল করতে শুরু করে।

রিয়ার হৃদয় দ্রুত ধড়কায়। সে বুঝতে পারে শাশুড়ির ভিতরে সত্যিই কোনো অতিপ্রাকৃত শক্তি লুকানো আছে। সেই শক্তি থেকে রাফিক ও নিজেকে রক্ষা করতে হবে।

পার্ট ৫: লড়াই — অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলো

রিয়া আর রাফিক একত্রে শাশুড়ির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। তারা জানতে পারে, এই দাজ্জাল শক্তি দূর করার জন্য একটা প্রাচীন দোয়া এবং বিশেষ মন্ত্র আছে, যা তাদের বংশের এক প্রাচীন পন্ডিত তাদের জন্য রেখে গেছেন।

রিয়া নিজেকে প্রস্তুত করে এই যুদ্ধে নামার জন্য। শাশুড়ির অন্ধকার শক্তি তাদের জীবনের প্রতিটি দিকে আক্রমণ করে, কিন্তু রিয়া তার সাহস হারায় না। পরিবারের মঙ্গল ও ভালোবাসার শক্তি নিয়ে সে সেই মন্ত্র পাঠ শুরু করে।

পার্ট ৬: মুক্তির আলো — ভালোবাসার জয়

সব চেষ্টার পর, এক রাত রিয়া দোয়া পাঠ করে এবং শাশুড়ির অন্ধকার শক্তি ভেঙে পড়ে। তার চোখের লাল আলো ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যায়, আর মিসেস করিম তার আসল মায়াময় রূপ ফিরে পান।

শাশুড়ি তার ভুল বুঝতে পারে এবং পরিবারের সবাইকে ক্ষমা চায়। তারা সবাই একত্রে সুখে থাকতে শুরু করে। অন্ধকার থেকে মুক্তি পেয়ে তারা বুঝতে পারে, ভালোবাসা আর বিশ্বাস সব অন্ধকার দূর করে দিতে পারে।

Comments

    Please login to post comment. Login