Posts

সমালোচনা

"অপেক্ষা"

June 9, 2025

Dibbo Saha

136
View

চরিত্রাবলী:

রিনা: মধ্যবয়সী নারী, একাকী মা

তানভীর: রিনার ছেলে, কর্পোরেট চাকুরে

সায়লা: তানভীরের স্ত্রী, একজন শিক্ষিকা

পোস্টম্যান: ক্ষণিক চরিত্র

দৃশ্য ১:

(একটি ছোট বসার ঘর, পুরনো আসবাব, দেয়ালে এক বৃদ্ধের ছবি – রিনার স্বামী। রিনা সোফায় বসে পুরনো অ্যালবাম দেখছে। ঘরের এক কোণে একটা বড় ঘড়ি টিকটিক করছে।)

রিনা (স্বগত):
কত দিন হয়ে গেল তানভীর এসে দেখে না। আগে তো সপ্তাহে অন্তত একদিন আসতো। এখন ফোন দিলেও বলে – “মা, মিটিং চলছে।”
(হাসে)
মিটিং তো আমিও বুঝি, তোর বাবাও করতো… কিন্তু এক কাপ চা খেতে বসার সময়ও বের করতো।

(ডোরবেল বাজে। রিনা হেঁটে যায় দরজা খুলতে। পোস্টম্যান চিঠি দেয়)

পোস্টম্যান:
রিনা বেগম? আপনার জন্য একটা চিঠি।

রিনা:
আমার জন্য? আজকাল তো কেউ চিঠি লেখে না…

(পোস্টম্যান চলে যায়, রিনা চিঠি খুলে পড়তে শুরু করে। হঠাৎ থেমে যায়, চোখে জল)

দৃশ্য ২:

(অন্যঘর। তানভীর ও সায়লা ডিনার টেবিলে বসে। রিনা কোথাও নেই।)

সায়লা:
তোমার মাকে আমরা অনেকদিন দেখিনি, তানভীর। চলো না, কাল সন্ধ্যায় গিয়ে আসি?

তানভীর:
(অস্বস্তি নিয়ে) সময় কোথায় বলো তো? তিনটা প্রজেক্ট চলতেছে একসাথে।

সায়লা:
সময় কখনো থাকে না, করতে হয়। আমি তো মিস করি ওনার হাতের রাঁধা খাবার।

(তানভীর চুপ করে থাকে)

দৃশ্য ৩:

(আবার রিনার ঘর। চিঠির পাশে তানভীর দাঁড়িয়ে, মুখে অপরাধবোধ। সায়লা পাশে। চিঠির কিছু লাইন তানভীর মনেমনে পড়ছে – কণ্ঠে আবেগ)

তানভীর (কণ্ঠে রিনার গলা):
"তুই যদি না আসিস, আমি কিছু বলবো না। শুধু একবার ভাবিস, তোকে কোলে নিয়ে প্রথম হাঁটতে শেখানোর কথা… তুই পড়ে গেছিলি, আমি কাঁদতে কাঁদতে তোকে বুকের মাঝে নিয়েছিলাম। মা যে আজও তোকে সেভাবেই খুঁজে ফেরে।"

সায়লা (চোখে জল):
তানভীর, এখনো সময় আছে। চলো, আজই যাই।

তানভীর:
না সায়লা, আজ আর নয়… এখনই যাই।

(দুজন দ্রুত বেরিয়ে যায়। আলো ধীরে ধীরে ম্লান হয়। ব্যাকগ্রাউন্ডে ঘড়ির টিকটিক শব্দ জোরে বাজতে থাকে। হঠাৎ সেটা থেমে যায়।)

Comments

    Please login to post comment. Login