১. গ্রামটির নাম ছিল নূরেরভূমি
এক ছোট্ট গ্রাম, নাম নূরেরভূমি, যেখানে অধিকাংশ মানুষই ধার্মিক ও সৎ। তবে দুই যুবক ছিল বিশেষভাবে পরিচিত—একজনের নাম আমির, আরেকজনের নাম সামির।
২. সামির: একজন মুনাফিক
সামির নামাজে যেত, রোজা রাখত, কিন্তু কেবল লোক দেখানো। মানুষ তাকে ধার্মিক ভাবত, অথচ সে চুরি করত, মিথ্যা বলত, দুর্নীতি করত—সবই গোপনে। মুখে কেবল "আল্লাহ" আর "দীন" এর কথা, কিন্তু অন্তরে ভয় ছিল না।
৩. আমির: একজন প্রকৃত মুসলিম
অন্যদিকে আমির ছিল নীরব এক যুবক। সে নামাজ পড়ত নির্জনে, কাউকে দেখানোর জন্য না। দান করত ডান হাতে, বাম হাত জানত না। সে প্রতিদিন নিজেকে আল্লাহর দরবারে পেশ করত।
৪. একদিন গ্রামের এক ইমাম প্রশ্ন করলেন
"আল্লাহর কাছে কে প্রিয়? যে লোক দেখিয়ে ইবাদত করে, না কি যে গোপনে সৎ কাজ করে?"
সামির তৎক্ষণাৎ বলল, "নিশ্চয়ই আমি, আমি তো মসজিদেই থাকি সব সময়!"
তখন ইমাম বললেন, "আল্লাহ জানেন কে তাঁর জন্য কাজ করে, আর কে মানুষের জন্য।"
৫. বিপদ এল গ্রামে
একদিন গ্রামে এক মহামারী ছড়িয়ে পড়ল। সবাই ভয় পেয়ে গেল। সামির প্রথমেই পালাতে লাগল, অথচ আমির ছিল গ্রামের পাশে। সে অসুস্থদের ওষুধ দিল, খাবার দিল, দোয়া করল, সাহায্য করল।
৬. আল্লাহর পরীক্ষা ও পুরস্কার
সামির অসুস্থ হয়ে গেল—একাকী, পরিত্যক্ত। কারো সাহায্য পেল না। অন্যদিকে আমিরের প্রতি গ্রামের ভালোবাসা আরও বেড়ে গেল।
এক রাতে, স্বপ্নে সামির দেখল—এক বিশাল দেয়ালে লেখা,
“যে আমলে দেখানোর জন্য করে, সে আমার নয়।” – আল্লাহ
সামির জেগে উঠে কাঁদল। এরপর সে বদলাতে চাইল, কিন্তু মানুষ তাকে আর বিশ্বাস করত না।
৭. শিক্ষণীয় বার্তা
এই গল্প আমাদের শেখায়—মুসলিম হওয়া কেবল নাম দিয়ে হয় না। সত্যিকার মুসলিম সেই, যার অন্তরে আছে আল্লাহর ভয়, মুখে নয়; আমলে আছে সত্যতা, দেখানোর উদ্দেশ্যে নয়। আর মুনাফিকতা—এটা এমন এক রোগ, যা আত্মাকে ধ্বংস করে দেয়।