Posts

গল্প

নিশির শেষ চিঠি

June 9, 2025

Dibbo Saha

114
View

মানুষের জীবন। সবার মতোই নিশা আর অরূপও ওখানেই বেড়ে উঠেছিল। ছোটবেলার খেলার সাথি থেকে কখন যে একে অপরের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিল, কেউ বুঝতে পারেনি।

নিশা ছিল নদীর মতো—নিরব, গভীর, অথচ প্রবাহমান। আর অরূপ ছিল আগুনের মতো—উচ্ছ্বল, প্রাণোচ্ছল, জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগে ব্যস্ত। স্কুলের শেষ দিনে অরূপ বলেছিল,
“নিশা, আমায় একটু সময় দাও। শহরে গিয়ে কিছু হয়ে ফিরে আসব। তখন তোমায় তোমার মতো করে চাইব।”

নিশা চুপ করে মাথা হেঁট করে বলেছিল, “আমি অপেক্ষা করব।”

কিন্তু সময় কারো জন্য থেমে থাকে না। অরূপ শহরে গিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল জীবন গড়তে। প্রথমে ফোন আসত, তারপর সপ্তাহে একবার চিঠি। তারপর মাসে একবার। একসময় সব থেমে গেল।

নিশা চিঠিগুলো যত্ন করে রাখত, প্রতিটা শব্দ পড়ত বারবার। বিশ্বাস করত, অরূপ একদিন ফিরবেই।

পাঁচ বছর কেটে গেল।

একদিন গ্রামের ডাকঘরে একটা চিঠি এল, প্রেরক অরূপ। নিশা কাঁপা হাতে চিঠিটা খুলে পড়তে লাগল—

“নিশা,
জানি, খুব দেরি হয়ে গেছে। শহর আমাকে গিলে ফেলেছে। আমি তোমার অপেক্ষার মর্যাদা দিতে পারিনি। কিন্তু কোনো দিন, কোনো রাতে, আমি তোমাকে ভুলিনি।
আমি জানি, আর কিছু চাওয়ার অধিকার নেই আমার। শুধু একটা কথা বলি—তুমি যদি এখনো অপেক্ষা করো, আমি ফিরতে চাই।
– অরূপ”

চিঠি পড়ে নিশার চোখ ভিজে গেল। সে জানত, ভালোবাসা সময় চায়, কিন্তু শ্রদ্ধা চায় না। সেই রাতে সে জানলার পাশে বসে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমি অপেক্ষা করিনি, অরূপ। আমি ভালোবেসেছি।”

Comments

    Please login to post comment. Login