Posts

গল্প

ধৈর্যের দীপ্তি”- পর্ব ১

June 11, 2025

Fijon Qurayish

57
View

হারানোর শুরু, আশা রয়ে যায়

দূরের এক গ্রামে বাস করতো আরিফ নামের এক কিশোর। বয়স মাত্র ১৩, কিন্তু দুঃখ-কষ্ট যেন তার ছায়াসঙ্গী। বাবা একজন দিনমজুর, মা গৃহিণী। পরিবারের সচ্ছলতা বলতে শুধু ছোট একটি মাটির ঘর আর বাবার অনিয়মিত আয়। তবুও আরিফ ছিল ভীষণ স্বপ্নবাজ। তার চোখে ছিল শহরের বড় স্কুলে পড়ার স্বপ্ন, বইয়ের পাতায় উড়াল দেওয়ার সাধ।

প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরে সে মাঠে গিয়ে পড়তো। অন্য ছেলেরা খেলতো, কিন্তু আরিফ হাতে থাকতো একটা পুরনো খাতা আর ভাঙা পেনসিল। মা বলতেন, “তুই আলাদা, তোর ধৈর্যই একদিন তোকে বড় করবে।” এই কথাগুলো সে বুকের ভেতর গেঁথে রাখতো।

একদিন হঠাৎই বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। আরিফের সংসারে অন্ধকার নেমে এলো। চিকিৎসা চালাতে গিয়ে সব সঞ্চয় শেষ। স্কুলে যাওয়া বন্ধ হলো। বন্ধুরা দূরে সরে গেল, শিক্ষকরা ভুলে গেল। কিন্তু আরিফ ভুলে গেল না তার স্বপ্ন।

রাতে মোমবাতির আলোয় সে পড়া চালিয়ে যেত। পুরনো বইগুলো আবার পড়ত, নোট করত, ভুল বুঝে আবার শিখত। তার ধৈর্য ছিল অটুট। মা কখনো বলতেন, “আরিফ, এত কষ্ট করে কী হবে?” সে শুধু হাসতো, বলত, “এই সময়টা একদিন কেটে যাবে মা, আমি জানি।”

গ্রামের মানুষজন হাসাহাসি করতো, “গরিব ঘরের ছেলে বই পড়ে কী হবে?” কিন্তু আরিফ সেই হাসির উত্তরে কিছু বলত না। তার চোখে ছিল প্রতিশ্রুতি—নিজেকে প্রমাণ করার।

একদিন একটি ঘোষণা এলো—এক বড় সংস্থা দরিদ্র মেধাবী ছাত্রদের জন্য স্কলারশিপ দেবে। কিন্তু ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল মাত্র দু’দিন পর। শহরে গিয়ে ফর্ম তোলা, পূরণ করা—সবই ছিল কঠিন। আরিফ বলল, “আমি যাব।”

মা অবাক হয়ে বললেন, “পয়সা কোথায়?”
আরিফ বলল, “আমার ধৈর্য আছে, পয়সা নয়।”

এই ছিলো প্রথম পর্বের সমাপ্তি।
পরবর্তী পর্বে জানবে—আরিফ কীভাবে শহরে গিয়ে তার জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেয়..

Comments

    Please login to post comment. Login