(রেণু বসে আছে বেঞ্চে, একটি ছোট ব্যাগ হাতে। বিপ্লব আসে ধীরে ধীরে, যেন কিছু একটা বলতে চায়।)
বিপ্লব:
(কিছুক্ষণ চুপ থেকে)
রেণু... তুই যাচ্ছিস?
রেণু:
(মৃদু হাসি)
হ্যাঁ, শেষ ট্রেনটা ধরতে হবে। অনেক দেরি হয়ে গেছে।
বিপ্লব:
তুই গেলে... এই গ্রামটা ফাঁকা হয়ে যাবে।
রেণু:
(চোখ নামিয়ে)
ফাঁকা তো সেই দিন থেকেই, যেদিন বাবা চলে গেলেন। মা তো আগেই...
(একটু নীরবতা। দূরে একটা ট্রেনের হুইসেল শোনা যায়।)
বিপ্লব:
তুই কি ফিরবি না কখনো?
রেণু:
জানি না। হয়তো ফিরব। হয়তো নয়।
এই গ্রামের মাটিতে অনেক স্মৃতি, কিন্তু পেট চলে না স্মৃতিতে।
স্টেশন মাস্টার (পেছন থেকে):
এই যে, মিস রেণু! ট্রেন আসতে আর দশ মিনিট!
রেণু:
(হেসে) ধন্যবাদ কাকু!
বিপ্লব:
(আবেগ নিয়ে)
রেণু, তোর জন্য আমি... আমি তোকে কিছু বলতে চাই অনেক দিন ধরেই।
রেণু:
(মৃদু কণ্ঠে)
তুই বলিসনি, মানে হয়তো বলার দরকার পড়েনি।
আর আজ বললেও... দেরি হয়ে গেছে।
(রেণু উঠে দাঁড়ায়, ব্যাগ হাতে নেয়। স্টেজের এক কোণে ট্রেনের শব্দ বাড়ে। যাত্রীরা দৌড়চ্ছে।)
বিপ্লব:
তোর চোখে আমি এখনো কিছু দেখি... কি সেটা?
রেণু:
(হাসে, চোখে জল)
স্মৃতি। শেষ ট্রেন ধরার আগে যা ফেলে যাচ্ছি...
(রেণু ধীরে ধীরে মঞ্চের বাইরে চলে যায়। বিপ্লব একা দাঁড়িয়ে থাকে। স্টেশন মাস্টার এসে কাঁধে হাত রাখে।)
স্টেশন মাস্টার:
অনেকেই আসে, অনেকেই যায়। কিন্তু কেউ কেউ থেকে যায় শুধু মনে...
(আলো ধীরে ধীরে নিভে যায়। হালকা সুর বাজে — একটি পুরনো বাংলা গান, হয়তো "আলো আমার আলো"।)