Posts

গল্প

অচেনা শহর।

June 13, 2025

Tahira Hossain

46
View

অনেক দিন আগের কথা এক গ্রামে ছিল এক মেয়ে ।‌ বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল সে তাই ছোটবেলা থেকে পরিবারের আদরের সন্তান হিসেবে লালিত পালিত হয়েছে সে । মেয়েটি ছিল অসাধারণ মেধাবী । বাবা মায়ের ইচ্ছা ছিল তাদের মেয়েকে তারা ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তার বানাবে এবং তাদের মেয়েরও অনেক ইচ্ছা ছিল যে সে একজন ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তার হিসেবে নিজের পরিচয় দেবে ।মেয়েটি ছোটবেলা থেকেই ঘুরতে বা ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসতো । তাই ছোটবেলা থেকেই তার বাবা-মা তাকে ঘুরতে নিয়ে যেত । মেয়েটি যখন একাদশ শ্রেণীতে উঠল তখন সে এবং তার বাবা-মা তাদের ব্যস্তময় জীবনের ছুটির দিনগুলোতে সিলেটে বেড়াতে যায় । সেখানে তারা ৫-৬ দিন খুবই আনন্দে কাটায় । ছুটি কাটিয়ে ফেরার আগের দিন মেয়েটি তার বাবা-মাকে বলল যে ছোটবেলা থেকে সে শুনে এসেছে সিলেটে নাকি অনেক বড় বড় পাহাড় আছে এবং সে পাহাড়গুলোর মাঝ দিয়ে ঝরনা বয়ে যায় তাই সে তার বাবা মাকে আবদার করল যে সে সেই ঝর্ণার পানিতে স্নান করবে সেই ঝর্ণার নিচে দাঁড়িয়ে । শুরুতে তার বাবা-মা রাজি হচ্ছিল না কারণ সেই দিন নদীর পানি অনেক বেশি ছিল এবং ঝর্ণার গতি অনেক বেশি ছিল । কিন্তু বাবা-মার যেহেতু একমাত্র সন্তান ছিল মেয়েটি খুবই আদরের সন্তান তাই তার কথাটি ফেলতে পারেনি  তাকে সেই ঝর্ণার নিচে দাঁড়িয়ে স্নান করার অনুমতি দেন । সেখানে সেই ঝর্ণার নিচে স্নান করছিল ছোট মেয়েরা তাই তার বাবা মা ভাবলেন  যে এখানে তো মানুষ আছে মেয়ে তো একা নয় তাই তারা দুজনে মিলে সেই ঝর্ণার যে আশপাশের যেই এরিয়া সেটা দেখতে  গেলেন। ঝরনার নিচে এমন একটি পাথর ছিল যে পাথরটিতে প্রচুর পরিমাণে শ্যাওলা জমে ছিল যার কারণে সেটি অনেক পিচ্ছিল ছিল তো মেয়েটি না জেনে সেই পাথরের উপর পা রাখে এবং সেখানে কিছুক্ষণ থাকলেও হঠাৎ করে তার পা পিছলে যায় এবং সে সেই ভরাডুবি খরস্রোতা নদীতে পড়ে যায় দূর ভাগ্যের বিষয় ছিল যে মেয়েটি কোন সাঁতার জানতো না । আশেপাশে যারা ছিল তারা ছিল ছোট মেয়ে তারা যে নামে তাকে বাঁচাবে বা উদ্ধার করবে সেই সাহস তাদের ছিল না । স্বাভাবিকভাবেই বড় বড় স্রোত আসছিল এবং হঠাৎ করেই মেয়েটিকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যায় গভীর নদীতে এবং নিমিষের মধ্যেই মেয়েটি তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে চলে যায় এক অচেনা শহরে । আশপাশের মানুষ তার বাবা মাকে খবর দেন যে তাদের মেয়ে নদীতে ভেসে গিয়েছে স্বাভাবিকভাবেই তারা শীঘ্রই সেই স্থানে উপস্থিত হন কিন্তু সেই স্রোতে ভরা নদী মেয়েটির লাশটি যেন কোন এক অচেনা শহরে কোন এক জায়গায় নিয়ে গিয়েছে তা কেউ জানতে পারেনি । তার বাবা মা তার লাশটি খোঁজার অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু পারেননি । হয়তো মেয়েটি কোন এক অচেনা শহরে বা জায়গায় রয়েছে যে জায়গা বা শহর সম্পর্কে না জানে সে এবং না জানে তার বাবা-মা । সে অচেনা শহরেই তার স্থান পাওয়াটা হয়তোবা তার ভাগ্যে লিখা ছিল । কথায় আছে ভাগ্যের লিখন যায় না খন্ডন ।

Comments

    Please login to post comment. Login