রাত প্রায় ২টা। গ্রামের একদম শেষ মাথায় রফিকের পুরনো টিনের ঘরে হালকা বাতাসে দরজাটা কিঞ্চিত শব্দ করছিল। চারপাশ একদম নীরব। হঠাৎ করেই ঘরের পাশের সরু পথ দিয়ে কারো হেঁটে যাওয়ার শব্দ শোনা গেল — টুপ… টাপ… টুপ… টাপ…
রফিক শুয়ে ছিল। শব্দটা শুনে কানে হাত দিল, ভাবল হয়তো কোনো কুকুর বা বিড়াল। কিন্তু না, পায়ের শব্দটা একদম মানুষের মতো — ভারি ভারি। তার গা ঠান্ডা হতে লাগল।
"কে হবে এই রাতে?" মনে মনে ভাবলো রফিক। সাহস করে জানালার ফাঁক দিয়ে বাইরে তাকাল — কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না।
তবুও পায়ের শব্দটা চলতেই থাকল। এদিক থেকে সেদিক… আবার এদিক থেকে সেদিক। কখনও জানালার একদম নিচে এসে থেমে যায়। মনে হচ্ছিল কেউ জানালার ভেতর তাকাচ্ছে!
হঠাৎ বাতাসের ঝাপটায় জানালার পর্দা উড়ে উঠল। তার ছায়ায় রফিক দেখল — জানালার ঠিক বাইরে সাদা শাড়ি পরা এক নারী দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখ ঢাকা, হাত দুটো অস্বাভাবিক লম্বা… আর চোখ দুটো লালচে জ্বলছে।
রফিক চিৎকার করতে চাইল, কিন্তু গলা দিয়ে শব্দ বের হল না। তারপর হঠাৎই চারপাশে আবার নীরবতা। জানালার বাইরে কেউ নেই।
সকালে গ্রামের সবাইকে ডেকে রফিক ঘটনাটা বলল। বুড়োরা বলল —
"ওটা হবে হয়তো নূরের বৌ। অনেক বছর আগে এই টিনের ঘরের পাশেই কূপে পরে মারা গিয়েছিল। অনেকেই রাতে তার ছায়া দেখে।"