প্রতিভাবান তরুণ কবি পারনিয়া আব্বাসির মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকাহত ইরানের সাহিত্য জগত। রাজধানী তেহরানে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি বিমান হামলায় পরিবারের সকলের সঙ্গে নিহত হন ২৩ বছর বয়সী এই কবি। ২৪তম জন্মদিনের মাত্র কয়েকদিন আগে তার মর্মান্তিক এই মৃত্যুর ঘটনাটি ইরানের লেখক, শিল্পী এবং নাগরিকদের গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।
ইরানের নতুন প্রজন্মের কবিদের মধ্যে একজন উদীয়মান তারকা হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন পারনিয়া আব্বাসি। তার মর্মস্পর্শী এবং আত্মদর্শী কবিতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন তিনি। তার প্রশংসিত কবিতা 'সাইলেন্ট স্টার' সহ অন্যান্য কবিতাগুলো ভাজন-ই দনিয়া এর মতো শীর্ষস্থানীয় সাহিত্য পত্রিকায় স্থান পেয়েছে।
পারনিয়া আব্বাসি ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। পাশাপাশি ব্যাংক মেলির কেন্দ্রীয় শাখার একজন কর্মীও ছিলেন। তিনি কাজভিন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি অনুবাদে ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছিলেন কিন্তু চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্য সাময়িকভাবে পড়াশোনা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
১৩ জুন ভোররাতে তেহরানে আকস্মিক বিমান হামলা করে ইসরায়েল। এই হামলায় পারনিয়া ছাড়াও তার মা, বাবা এবং ১৬ বছর বয়সী ছোট ভাই পারহাম নিহত হয়।
পারনিয়ার মৃত্যুতে তার বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা তরুণ এই কবিকে ‘জীবন ও কবিতায় পরিপূর্ণ’ একজন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইরান জুড়ে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ শিল্পীর মৃত্যুতে তারা শোক প্রকাশ করেছে, যার সৃজনশীল যাত্রা সহিংসতার কারণে থেমে গেছে।
২৩ বছর বয়সী এই কবি তার কবিতায় প্রায়শই আলো, ছায়া এবং অস্তিত্বের আকাঙ্ক্ষার বিষয়বস্তু নিয়ে অন্বেষণ করতেন। নিজের নোট বইয়ে লেখা তার শেষ কবিতা ছিল:
‘আমি পুড়ে যাই,
আমি বিবর্ণ হয়ে যাই,
আমি এক নীরব তারা হয়ে উঠি,
যে তোমার আকাশে ধোঁয়া হয়ে যায়'।
সূত্র: তেহরান টাইমস