ইসলামিক স্টেট (ISIS বা ISIL) মূলত সুন্নি চরমপন্থী একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, যারা ইসলামের নামে তাদের রাজনৈতিক ও সামরিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চেয়েছে। তারা ২০১৪ সালে ইরাক ও সিরিয়ার একটি বড় অংশ দখল করে তথাকথিত "খিলাফত" প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়।
শিয়া মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্যাতন:
হ্যাঁ, ইসলামিক স্টেট ইতিহাসে শিয়া মুসলিম গোষ্ঠীর উপর ব্যাপকভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। তাদের আদর্শিক বিশ্বাস অনুসারে, শিয়া মুসলিমদের "বিদ্বেষপূর্ণ মুসলমান" বা "মুরতাদ" (ধর্মত্যাগী) হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে ISIS বহুবার শিয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও গণহত্যা চালিয়েছে।
কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা:
স্পাইকার ঘাঁটি গণহত্যা (২০১৪) – ইরাকের টিকরিত শহরে অবস্থিত স্পাইকার সামরিক ঘাঁটি থেকে প্রায় ১,৭০০ শিয়া ক্যাডেটকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে ISIS। এটি তাদের ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস গণহত্যা।
শিয়া মসজিদ ও মাজারে হামলা – ইসলামিক স্টেট ইরাক ও সিরিয়ার বহু শিয়া মসজিদ, হোসাইনিয়া, ও মাজার ধ্বংস করে। তারা একে "শিরক" ও "বিদআত" হিসেবে আখ্যা দেয়।
শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় আত্মঘাতী হামলা – বাগদাদ, কারবালা, ও অন্যান্য শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় বারবার বোমা হামলা চালানো হয়েছে, যাতে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে।
ইয়াজিদি ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন – যদিও ইয়াজিদিরা শিয়া নয়, তবে ইসলামিক স্টেট সবধরনের ভিন্ন মতাবলম্বী ও সংখ্যালঘুদের উপর বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে।
উপসংহার:
ইসলামিক স্টেট সুন্নি নামধারী হলেও তারা মূলধারার সুন্নি ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে না। বরং তাদের কর্মকাণ্ড ছিল জঘন্য, মানবতা বিরোধী, এবং ইসলামের প্রকৃত আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তাদের দ্বারা শিয়া মুসলিমসহ বহু নিরীহ মানুষ নির্মমভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।