Posts

উপন্যাস

ভাগ্যাকাশের ধ্রুবতারা

June 21, 2025

Nusrat Jahan Mou

Original Author জাহান- Jahan

81
View

📘 ভাগ্যাকাশের ধ্রুবতারা  পর্বঃ৫.

✍️ কলমে: জাহান-Jahan

২০ দিনের ছুটির পর, ঐশানি অফিসে ফিরল। চারপাশে একটা নিস্তব্ধ উত্তেজনা। সহকর্মীদের চোখে বিস্ময়, করুণাও যেন মিশে আছে।

— "ঐশানি! তুমি! তুমি ফিরে এসেছো?"
— "শরীর কেমন এখন?"
— "ডাক্তারের রিপোর্ট কেমন বললো?"

ঐশানি সবার সাথে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করল। চোখে ছিল শান্ত অথচ গভীর দৃঢ়তা। এরপর সে সরাসরি আসিফের ডেস্কে গিয়ে দাঁড়ালো।

— "স্যার ফ্রি আছেন? দেখা করা যাবে?"

আসিফ ঠোঁট বাঁকিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
— "চাইলে দেখা করতে পারো।"

ঐশানি ইকতিদারের কেবিনের সামনে গিয়ে মাথা নিচু করে বলল,
— "May I come in, Sir?"

ভেতর থেকে উত্তর এলো এক গম্ভীর কণ্ঠে,
— "Come."

কেবিনে ঢুকতেই ইকতিদার চোখ তুলল না, শুধু ঠান্ডা কণ্ঠে বলল,
— "Please sit. আবার মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে কোমর ভেঙে আমার দোষ হবে! কপাল তো একবার ফেটেই গেছে।"

ঐশানি খানিক লজ্জিত স্বরে বলল,
— "সরি স্যার, ঠিক বুঝতে পারলাম না।"

ইকতিদার মুখ না তুলে বলল,
— "তেমন কিছু না। আপনি কেমন আছেন?"

ঐশানি বলল,
— "আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি স্যার। আপনি?"

— "হুঁ।"

ঐশানি মনে মনে ভাবল, "কি মানুষ রে বাবা! একেবারে জংলিদের মতো ব্যবহার। কোনো মানবিকতা নেই। এই জন্যই বুঝি এখনো বিয়ে হয়নি!"

কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
— "স্যার, আপনি আমার জন্য যা করেছেন, আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ। তবে অনেকদিন ছুটি হয়ে গেছে, এবার কাজে ফিরতে চাই। আপনার যে খরচ হয়েছে, মাসের বেতনের একটা অংশ করে শোধ করতে চাই।"

ইকতিদার কড়া গলায় আসিফকে ডেকে বলল,
— "আসিফ!"

— "জি স্যার!"

— "উনাকে সবকিছু বুঝিয়ে দাও।"

আসিফ ফাইল ঘেঁটে বলল,
— "মিস ঐশানি, আপনার চিকিৎসা বাবদ তিনদিনে খরচ হয়েছে আড়াই লক্ষ টাকা। আর ব্যাংকে মাসের বেতনসহ ৪০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে।"

একটু থেমে ঠান্ডা গলায় যোগ করল,
— "আমাদের অফিসের নিয়ম অনুযায়ী, কর্মী ছাঁটাই করা যায়। তবে আপনাকে আগেভাগে জানানো হয়নি বলে এখন জানাচ্ছি— এই মাসের বাকি ১০ দিনসহ আগামী মাসে আর আপনাকে অফিসে আসতে হবে না।"

ঐশানি স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল। ইকতিদারের মুখে একফোঁটা আবেগও নেই। যেন এই মেয়েটা তার কোনোদিন কিছু ছিল না।

আসিফ কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল,
— "আমাদের স্যারের মন বিশাল, তাই বলেছি—আপনাকে আর আসতে হবে না, কিন্তু বেতন ঠিকই আপনার একাউন্টে পৌঁছে যাবে। আজই আপনার শেষ কর্মদিবস।"

ঐশানির চোখে পানি চলে এলো। কাঁপা কণ্ঠে বলল,
— "আপনারা আমার জন্য অনেক করেছেন। তবে আমি কাজ না করে বেতন নিতে চাই না। আশা করি একদিন আল্লাহ আমাকে তৌফিক দেবেন আপনাদের ঋণ শোধ করতে।"

একটু থেমে সাহস সঞ্চয় করে বলল,
— "তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে ইকতিদার স্যারের সাথে একটু কথা বলতে চাই। এ কারণেই আজ এসেছি।"

কিন্তু কেউ তার কথা শুনল না। ইকতিদার মাথা ঘুরিয়ে একবার তাকিয়েই বলল,
— "ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দাও।"

ঘরে একটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল। ঐশানি হঠাৎই কেঁপে কেঁপে উঠে দাঁড়াল।

— "স্যার! স্যার! আপনাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চাই! প্লিজ! শুনুন! আমি আপনাকে বলতে চাই…"

( To be continued… )

---

📣 আপনার মতামত দিন

গল্পটি কেমন লাগলো? কমেন্টে জানান।
লাইক ও ফলো করে পাশে থাকুন যেন পরবর্তী পর্ব মিস না হয়।

🔹 #ভাগ্যাকাশের ধ্রুবতারা
🔹 # জাহান-Jahan
🔹 ✅  জাহান-Jahan
🔹 👥 যুক্ত হোন আমাদের গ্রুপে
#followers
#everyone

Comments

    Please login to post comment. Login