“রক্তের দাগ”
এক গ্রামে ছিল দুই ভাই — রাশেদ ও সাজেদ। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর তাদের বড় একটি জমি ও বাড়ি রেখে যান। ছোটবেলায় তারা ছিল একে অপরের প্রাণ। কিন্তু বড় হওয়ার পর, সম্পত্তির ভাগ নিয়ে শুরু হয় বিরোধ।
রাশেদ ছিল বড় ভাই, দায়িত্বশীল ও পরিশ্রমী। সাজেদ একটু অলস, কিন্তু চতুর। জমি ভাগের সময় সাজেদ চাতুরী করে বেশি জমি লিখে নেয় নিজের নামে। রাশেদ কিছু না বলে নিজ অংশে চাষাবাদ শুরু করে।
কিছুদিন পর সাজেদ ব্যবসা শুরু করতে চায়, আর তার জন্য দরকার হয় টাকা। সে রাশেদের কাছে সাহায্য চায়, কিন্তু রাশেদ জানিয়ে দেয় — “যখন জমি ভাগ করতে আমাকে ঠকালে, তখন তো আমি ভাই ছিলাম না! এখন কেন ভাই মনে পড়ছে?”
এই কথায়, সাজেদ অপমানিত হয়। সে প্রতিশোধের নেশায় পড়ে যায়। এক রাতে সে রাশেদের ধানখেতে আগুন লাগিয়ে দেয়। গ্রামবাসীরা আগুন নিভালেও বেশিরভাগ ফসল পুড়ে যায়।
রাশেদ সন্দেহ করে সাজেদকেই, কিন্তু কোনো প্রমাণ নেই। সে কষ্টে পড়ে যায়, খাবার জোটে না। কিন্তু হঠাৎ একদিন সে শুনতে পায়, সাজেদের ছোট মেয়ে মারাত্মক অসুস্থ। টাকা না থাকায় চিকিৎসা সম্ভব নয়।
এই শুনে রাশেদ সব অভিমান ভুলে নিজের শেষ গরুটি বিক্রি করে চিকিৎসার টাকা দেয়। সাজেদ জানতে পেরে বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।
সে এসে ভাইয়ের পায়ে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
“ভাই, আমি অন্যায় করেছি। আমি হিংসায় অন্ধ ছিলাম। কিন্তু তুমি রক্তের সম্পর্ককে জয় করেছো। আমি ক্ষমা চাই।”
রাশেদ শুধু বলল,
“রক্তের দাগ কখনো ধোয়া যায় না, ভাই। কিন্তু ভালোবাসা দিয়ে সেটা ঢেকে রাখা যায়।"
♥♥♥