দূরের এক ছোট্ট গ্রাম "অরণ্যপুর"। যেখানে সূর্য ওঠার আগে পাখির ডাক আর নদীর শব্দে ভরে থাকে চারপাশ। সেখানেই বাস করে মেয়েটি — নাম তার কবিতা।
কবিতা ছিল চুপচাপ, শান্ত স্বভাবের। ছোটবেলা থেকেই সে স্বপ্নে এক বয়স্কা নারীর মুখ দেখত, যিনি সবসময় বলতেন, "তুই আশীর্বাদ, তোর ভেতরে আছে দুই প্রাণের জোয়ার।" গ্রামে কেউ তা গুরুত্ব দিত না। তবে, হঠাৎ করেই ঘটল সেই অলৌকিক ঘটনা।
এক ঝড়ের রাতে, আকাশ বিদ্যুৎ চিরে ঝলসে উঠছিল বারবার। ঠিক সেই সময় কবিতার গর্ভযন্ত্রণাও শুরু হয়। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার, ঘরের ভিতর কেউ প্রবেশ করতে পারছিল না! দরজা যেন নিজে থেকেই লক হয়ে গিয়েছিল। ভিতরে কবিতা একা, বাইরে তার মা-কাকিমারা চিৎকার করছেন।
কিছুক্ষণ পর, হঠাৎ ঘরের ভেতর আলো ঝলমল হয়ে ওঠে। দরজা খুলে গেলে সবাই দেখে — কবিতা তার কোলে দুইটি নবজাতক যমজ ছেলে নিয়ে বসে আছে। কিন্তু সবচেয়ে অবাক করা বিষয়, বাচ্চাগুলোর শরীরজুড়ে ছিল রহস্যময় উজ্জ্বলতা, তাদের চোখ যেন আগুনের মতো দীপ্ত।
সেই রাত থেকেই সবাই কবিতাকে বলতে শুরু করল "ওপয়া" — অর্থাৎ, যিনি অলৌকিক আশীর্বাদ নিয়ে আসেন।
গ্রামের বৃদ্ধা বললেন, "এই সন্তানরা দেবতার দূত — তারা দুই বিপরীত শক্তির প্রতীক। একজন আলো, অন্যজন অন্ধকার।"
কবিতার সন্তানেরা বড় হয়ে নানা অলৌকিক গুণ দেখাতে শুরু করে — কেউ বাতাসে ভেসে থাকে, কেউ আবার এক চোখে ভবিষ্যৎ দেখতে পায়। পুরো গ্রাম আজও বিশ্বাস করে, ওপয়া কবিতা হলেন দেবী শক্তির রূপ — আর তার যমজ সন্তান, এই পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা করতে জন্ম নেওয়া অলৌকিক আত্মা।