আমরা মুখ মনে রাখি।কেউ হাসলে,কেউ কাঁদলে আবার কারো চোখে কিছু লুকালে।কিন্তু কেউ যদি মুখ চিনতেই না পারে!!! সে কি ভুলে যায়? নাকি ভুলে যেতে চায়??
একটা খুন।এক টুকরো সূত্র আর এক শহর..... যেখান থেকে শুরু হয় বাংলাদেশের চাকা।একই সঙ্গে এক ঘাতকের স্মৃতি খোঁজার ভয়ানক খেলা.....
পর্ব ০১: বন্দরে অর্থনৈতিক চাকা
আষাঢ়ের প্রথম প্রহর।ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে।পুলিশ হেডকোয়ার্টারের দারোয়ান মনু মিয়া জোর গলায় বলে উঠলো... দেশের বন্দর এলাকায় এমন ঘটনা(খুন),তাও আবার দিনের বেলা।পাশের ডেস্কে বসা Detective রাশেদ সামাদ তার কথা শুনে খুব একটা পাত্তা দিলেন না।এমন সময় ঢাকার পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আসে একটা অদ্ভুত প্যাকেজ।ভিতরে একটা চিরকুট।রাশেদ সাহেব প্যাকেজের দিকে এগিয়ে যান।তাতে লিখা ছিল.....
""আমি নিজেই বিচার করবো
প্রথম রক্ত পরবে সেখানে
যেখানে ১ ও ৬ এর খেলা চলে একসাথে""
রাশেদ ভাবতে লাগলেন সূত্রের মানে কি হতে পারে। হঠাত তার মনে পরে একটু আগে মনু মিয়া দেশের বন্দর নগরীর কথা বলছিল।
রাশেদ : বন্দর নগরী মানতো চট্টগ্রাম .…চট্টগ্রামে এ খুন!! চট্টগ্রামের কোথায়??....কোথায় হতে পারে?এমন সময় তার সাথে থাকা Sub Inspector শাহিন বলে উঠে...
শাহিন : স্যার....চিরকুটের সংখ্যা দিয়ে কিছু বোঝাতে চাচ্ছে না তো?
রাশেদ : Right.... ১ ও ৬ মানে হলো ১৬.মানে চট্টগ্রামের ১৬ শহর বোঝানো হয়েছে।কিন্তু ১৬ শহরের কোন এলাকা?
সাবিনা (সাংবাদিক): ১৬ নম্বর রোড?
রাশেদ :একদম ঠিক।১৬ নম্বর রোড। আমাদের এখনই চট্টগ্রাম যেতে হবে।
ঘটনাস্থলঃ
চট্টগ্রামের অভিজাত এলাকার ১৬ নম্বর রোডে নামজাদা Neurologist ডা:মাহির হাসানকে মৃত অবস্থায় সেখানে পাওয়া যায়।তার মাথার খুলির পেছনে সুক্ষ্ম ছিদ্র করে মস্তিষ্কে সুচ দিয়ে কিছু প্রবেশ করান হয়েছে। তল্লাশির এক পর্যায়ে রাশেদ সামাদের চোখ পড়ে ঘরের দেয়ালের উপর।সেখানে রক্ত দিয়ে লিখা.....
**C6H12O6-আমি ভুলে গেছি কে তুমি ছিলে
তবে তোমার কাজ আমি ভুলিনি**
সাথে একটা হ্যান্ড গ্লাভস,আর একটা কাঁচের শিশি যেটা সাদা গন্ধহীন তরলে পূর্ণ।
শাহিন : এটা কোনো সাধারণ খুন না।পরিকল্পিত।
রাশেদ : (বুকের পকেট থেকে notebook বের করে) C6H12O6... এটা ত Glucose এর formula.
সাবিনা : একজন খুনি দেয়ালে Glucose এর ফরমুলা লিখতে যাবে কেন?
রাশেদ : কারন খুনি আমাদের সাথে Chemical Puzzle নিয়ে খেলা করতে চায়। Neuronal toxicity?!বেশি পরিমানে glucose মস্তিষ্কে প্রবেশ করালে তা মস্তিষ্কের Oxidative স্ট্রেস তৈরি করে। এতে করে মস্তিষ্কে Reactive Oxygen Pressure (ROP) বেরে যায়।ফলস্বরূপ মানুষ মারা যায়।
শাহিন : মৃতদেহের মাথার পেছনে ছোট সুচের ছিদ্র। খুব শুক্ষ্ম।শরীরে কোথাও কোনো আঘাত নেই।
রাশেদ :Interesting!!এতো সূক্ষ্মভাবে খুন!আবার Chemical Clue ও use করছে।হতে পারে খুনি একজন Doctor বা Scientist.Medical Science এর background এরও হতে পারে।সে হয়তো কোনো experiment করতে চাচ্ছে।আবার খুনির মানসিক সমস্যাও থাকতে পারে।
ঘর থেকে বের হওয়ার সময় টেবিলের উপর থাকা ক্যামেরার নিচে আরও একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
"তুমি যা আমার থেকে নিয়েছিলে
আমি সেটিই ফিরিয়ে দিলাম যন্ত্রণায়।"
সাবিনা : স্যার.... খুনি মনেহয় victim কে চেনে।কিন্তু victim খুনি কে চেনে না।
রাশেদ : না সাবিনা।এর ঠিক উল্টো।খুনি তাদের চেনে না, তারাই খুনিকে চেনে।মস্তিষ্ক কে নিয়ে কাজ করতে গেলে body কে জীবিত রাখতে হয় জানতো?খুনিকে মাহির সাহেব 100% চিনতো। এজন্যই সে মাহির সাহেবের উপর experiment টা করতে পেরেছে।
শাহিন : তাহলে এই clue এর মানে কি হতে পারে?
রাশেদ : এমনও হতে পারে খুনি নিজেই কারো face মনে রাখতে পারে না। Face Blindness. মেডিকেলের ভাষায় একে বলে Prosopagnosia.একজন মানুষ যে নিজে মানুষ চিনতে পারে না।মুখ মনে রাখতে পারে না।সেই হইতো বার বার চেষ্টা করছে মুখ মনে রাখার ঔষধ বানাতে। আর এই experiment সে প্রথম মাহির সাহেবের উপর প্রয়োগ করেছে।
সাবিনা : Wait.যে কারো মুখ মনে রাখতে পারে না তাকে victim কেনই বা মনে রাখতে যাবে?
রাশেদ : (একটু থেমে) খুনিকে victim চিনতো।আর হতে পারে খুনি নিজেও victim কে চিনতো।তার মুখ চিনতে না পারলেও তার বাক্তিত্ত্বকে ঠিক চিনতো।
লাশ মর্গে পোস্টমোর্টামের জন্য পাঠানো হলে মাহির হাসানের প্যান্টের পকেট থেকে আর একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
"চৌদ্দ ঘরের বাজারে খোঁজ নাও
স্মৃতি যখন পুড়ে যায়,নতুন যৌগ জন্ম নেয়।"
শাহিন : চৌদ্দ ঘর দিয়ে কি বোঝাতে চাচ্ছে?
সাবিনা: চৌদ্দগ্রাম নয়তো?
রাশেদ : Correct.চৌদ্দগ্রাম।কিন্তু চৌদ্দ গ্রামের কোথায়?ভাবো শাহিন, ভাবো।
শাহিন : স্যার.... এটা আবার নতুন বাজার,চৌদ্দগ্রাম নয়তো? সূত্রে নতুন ও বাজার এই ২ টা ওয়ার্ড use করা হয়েছে।
রাশেদ : Yes....Yes...Great Job শাহিন। হবিগঞ্জের নতুন বাজার চৌদ্দগ্রাম এলাকা।
রাশেদ : খেলা তো জমে উঠেছে শাহিন।খুনির next terget ওখানেই।। let's go.
series টাকে ৫ টা পর্বে লিখেছি।যারা পর্ব ০১ পড়েছো,তাদেরকে Request করবো সব গুলো পর্ব পড়ার জন্য।