অপারেশন ব্যাসাল্ট ছিল ২০১৮ সালে সিরিয় সরকার কর্তৃক বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একটা জোড়াল অভিযান। বিস্তারিত আমি নীচের লেখাতে তুলে ধরছি। সে সময় আসাদ সরকার রাজধানী দামেস্ক আইএস, আল কায়েদা ও বিদ্রোহীমুক্ত করার পর তাদের পরবর্তী অপারেশন দারায়া ও কুইন্ট্রাতে ঠিক করেছিল, যেখানে পূর্ব ঘোতার বিদ্রোহীদের একাংশ যেতে চেয়েছিল। এই দারায়া থেকেই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সূচনা। এলাকা দুটি জর্ডান ও ইসরাইলের সিমান্তে অবস্থিত। দারায়াতে ফ্রি সিরিয়ান আর্মি ও আল কায়েদা অবস্থান করছে অন্যদিকে কুইন্ট্রাতে আইএস,আল কায়েদা ও বিদ্রোহী তিনটি গ্রুপই অবস্থান করছে যারা সরাসরি ইসরাইল দ্বারা পরিচালিত ছিল। পূর্ববর্তী অপারেশনগুলার মতই প্রথমে সিরিয় সরকার ১৬ই ও ২৫শে মে হেলিকপ্টার থেকে বিদ্রোহী ও সন্ত্রাসী এলাকাগুলোতে লিফলেট প্রেরণ করে যেখানে লেখা ছিল,"Don't be like those... this is the ultimate end to all those who insist on holding arms... leave your weapons before it's too late." অন্যটিতে ছিল, "You have two choices: Either to die or leave your weapons, because the Syrian army men are coming so make your decision before it's too late"😎😎তাদেরকে ঈদের পরবর্তী সময় অর্থাৎ ২২শে জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল কিন্তু তারা সেটা প্রত্যাখ্যান করে।অন্যদিকে ইরান ২৩শে মে ঘোষণা করে তাদের সমর্থিত মিলিশিয়ারা এই অপারেশনে অংশগ্রহন করবে না।কিন্তু তারপরো ইসরাইল তাদের বর্ডারে অতিরিক্ত সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র প্রেরণ করতে থাকে এবং আচমকা ১০ই জুন সেখানে মিলিটারি ড্রিল পরিচালনা করে।তারা সিরিয় সরকারকে অপারেশন না চালানোর জন্য সতর্ক করে দেয়।একই সূরে ১৩ই জুন বিদ্রোহী গ্রুপ সরকারি নিয়ন্ত্রিত এলাকাতে ড্রোনের মাধ্যমে লিফলেট বিতরণ করে।এরই মধ্যে ২রা ও ১৪ই জুন দারায়া এলাকাতে মোট ৪ জন রিকন্সিলেশন কমিটির সম্মানিত মেম্বারকে হত্যা করা হয়।সরকারপন্থি মেম্বারদের হত্যার জন্য সিরিয় সরকার বিদ্রোহীদের দায়ি করে এবং পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এরই মধ্যে সরকারি বাহিনী টাইগার ফোর্সের নেতৃত্বে অভিযানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলে।২১শে জুন চূড়ান্ত অভিযানের মাত্র একদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয় সরকার ও রাশিয়াকে অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেন।অবশেষে সকল বাঁধা অতিক্রম করে ২২শে জুন নির্ধারিত দিনেই অভিযান শুরু করে। তাঁরা প্রথমে আল কায়েদার প্রধান সাপ্লাই রুট আল দালাফা এবং মুসায়খা শহর দখল করে নেয়। ২৪শে জুন রাশিয়া তাঁদের প্রথম এয়ার স্ট্রাইক শুরু করে ফলে সন্ত্রাসীরা একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়ে😊😊। তাঁরা মিত্র মার্কিনীদের নিকট সাহায্যের আবেদন করলে ভিয়েতনামের মতই সাহায্যের অস্বীকৃতি জানায়। তাঁরা বলে, “You should not base your decisions on the assumption or expectation of a military intervention by us”. You're on your own।২৪ ও ২৫শে জুন রাশিয়ার ডিফেন্স মিনিস্ট্রি জানায়, ফ্রি সিরিয়ান আর্মি লাজাত জেলাটি সরকারি বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছে এবং একসাথে তাঁরা আল কায়েদার (জাবাত আল নুসরা বা হায়াত তাহরির আল শাম) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। অন্যান্য বারের মত এবারও ইসরাইল দিশেহারা হয়ে সিরিয়ায় হামলা চালানো শুরু করেছে। ২৬শে জুন তাঁরা দামেস্ক বিমান বন্দরে মিসাইল হামলা চালিয়েছে। তবে মিসাইল সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। সরকার আশা করেছিল অতি শিঘ্রই দারায়া সন্ত্রাসী মুক্ত হবে এবং জর্ডান সিমান্তে সিরিয় বাহিনী পৌঁছে কুইন্ট্রার দিকে ধাবিত হবে। এর ফলে সাউথইস্ট সিরিয়াতে ইহুদীবাদীদের কবর রচনা হবে।
চলবে.......✋