সন্ধ্যার দুধভাত স্বপ্ন
নিঃশব্দ বিষাদের ভেতর ঘুমিয়ে থাকে একফোঁটা আয়না, তাতে জোনাকির মরা আলো লেগে থাকে—হৃদয়ের কাঠফাটা সন্ধ্যায় ঘুড়ি ওড়ে না। ওড়ে তবুও বাতাস নেই, আমার নিশ্বাসে টলে।
ধুলো মাখা রাস্তায় হেঁটে চলে একা কচ্ছপ, তার খোলসে বেঁধে রেখেছি একটা কবিতা, যেটা বলিনি কখনো; বলিনি আজও— জিহ্বার নিচে রেখে দিয়েছি নিঃশ্বাসের নিঃশব্দ ছায়ায়। রুপোর পাতায় মুড়ে রাখা স্বপ্নের দুধভাত মেঘের ঠোঁট ছুঁয়ে খেয়ে যায় এক হরিণী, তার চোখে ঝরে পড়ে শহরের সেরা ট্র্যাজিক প্রেম—আমার, তোমার; আর এক নেমে আসা সন্ধ্যার।
এই প্রেম কাঁপে না, হাসে না, রাগে না, শুধু কবরের উপর ঝুলে থাকা ছেঁড়া জোনাকির মতোন বসে থাকে, তোমার চুলে বুনে রাখা জাল; ধরলে কেটে যাবে, না ধরলে ফুরিয়ে যাবে—একদম লাল পিঁপড়ার মতো ধীর অথচ নির্ভুল।
বর্ণান্ধ ঋতু
প্রকৃত অর্থেই তখন সময় কোনো রেখার অন্তর্গত ছিল না—ধরো, একটি পাঁপড়ি- সাদা নয়, লালও নয় বরং অদৃশ্যবর্ণে ক্ষয়ে যেতে যেতে প্রবেশ করেছিল চতুর্থ মাত্রার এক অমোঘ কম্পনে। অমলিন ব্যাকরণে সংযোজিত হেমন্ত-স্নিগ্ধ আলো, সেই আলো নয় যে চোখে পড়ে বরং যা বর্ণান্ধ মস্তিষ্কের শিকড়ে জমে ওঠে মৃতস্নায়ুর বিলম্বিত প্রতিক্রিয়ায়।
তুমি জানো না, আমি আর হাঁটি না—আমি ছায়ার কনভেক্সে গড়িয়ে পড়ি, জলীয় দুঃখের ডালিমবীজের মতো, প্রতিটি নিঃশ্বাসে একটি গোপন উপমা খসে পড়ে—অর্থহীনতায় পূর্ণ হয়ে।
তপ্তশ্বাসের ঘনত্বে মেদুর সময় একটি অন্তর্গত ভূমিকম্প ঘটায়— তুমি নড়ো না, তবু কাঁপে আমার অলিন্দ। আঙুলে আঙুল নেই, কাঁধে কাঁধ নেই; তবুও প্রবাহমান এক সংবেদ লেগে থাকে যা মাপা যায় না ইন্দ্রিয়ের পরিমাপক যন্ত্রে।