যায় যে দিন,
ক্ষণ - মূহুর্ত - কাল চলে যায়
ক্ষণিকের প্রেম শূন্যে মিলায়,
সে দিন আর ফেরেনা।
কত সন্ধ্যে চলে গেছে গোধুলী রঙে রেঙে,
অস্তরাগে রবি গেছে অস্তাচলে,
শেষ রাতে ঘুমিয়ে গেছে জোছনার নীল চাঁদ,
এমনকি শুকতারাও।
চলে গেছে কত নিঝুম দুপুর,
দূরে কোনও অশ্বত্থের ডালে বসে ছিল
ঝিমিয়ে পড়া চিল এক,
অথবা ডাহুকের ডাক, ঘুঘুর ডাক-
দেয়ালের ফোঁকরে থাকা তক্ষক,
সব, সবাই চলে গেছে।
একবার আকন্দ ফুল পাড়তে গিয়ে
হাতের ঠিক পাশ দিয়ে
সুড়ুৎ করে ছুটে গেল
একটা লাউডগা সাপ,
তেমন সবুজ আমি আর দেখিনি,
সে সবুজও আমায় ছেড়ে চলে গেছে-
কারো ফিরে আসবার
প্রতীক্ষায় আমি তবু থাকিনি।
কোন এক পাহাড়ী ভোরে
কারও হাতে হাত রেখে চোখ রেখেছিলাম
কাঞ্চনজঙ্ঘার সোনালী চুড়োয়,
সে বিষ্ময়, সেই ভোর,
সোনালী সে আলোর ঘোর-
আর ফিরে আসেনি জীবনে।
ফিরে আসেনি পড়ন্ত বিকেলে-
সাগরের হারিয়ে যাওয়া ঢেউও।
যার হাতে হাত রেখে আমার সাগর দেখা
হারিয়ে গেছে সে ও,
দৃশ্যে থেকেও অদৃশ্যমান হয়ে,
তার প্রতীক্ষাও আমি করিনি আর।
তেমনি ফিরে আসবেনা শহুরে কোন
বৃষ্টিস্নাত গ্রীষ্ম বিকেল-
যে বিকেল প্রায় মিলেছিল সন্ধ্যেয়,
একাকী আমি দাঁড়িয়ে কারও প্রতীক্ষায়
রাজপথের ধুসর আবছায়ায়।
অথবা,
পশ্চিমের জানালায় চোখ রেখে দেখা
আষাঢ় শেষের আকাশ নীল,
সেই যে সেদিন নির্বাণের আলোয়
আমার ভেসে যাওয়া,
আবার ক্ষণিকের জেগে ওঠা-
সে মুহুর্ত, সে কাল, সে সময়
হয়ে গেছে লীন,
মহাকালের অতল গহবরে-
হারিয়ে গেছে আমার সোনালি সে দিন।
শুধু রয়ে গেছে তার সোনার পরশ
উপেক্ষার দহনে পোড়া
হৃদয়ের এ তপ্ত অঙ্গনে।
অকাল শ্রাবণে ধুয়ে গেছে
আমার সে উতল বসন্তদিন,
তবু এ জনম আমি
কাটিয়ে দেব কারও প্রতীক্ষাহীন।