সুন্দরী স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও অনেক পুরুষ কেন অন্য নারীর প্রতি আকৃষ্ট হন—এই প্রশ্ন আজও বহু মানুষের মনে ঘুরপাক খায়। বিয়ের পর সম্পর্ক এক নতুন মোড়ে পৌঁছায়। দায়িত্ব, অভ্যস্ততা আর বাস্তবতার মাঝে কোথাও হারিয়ে যায় প্রেমের প্রথম রোমাঞ্চ, না বলা আকর্ষণ।
একজন তরুণ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী বলছিলেন, “বিয়ের কয়েক বছর পর স্ত্রী আমার সবচেয়ে আপন হলেও, সম্পর্কটা যেন একটা অভ্যাসে পরিণত হয়। অফিসে এক সহকর্মীর সঙ্গে দিনের বেশিরভাগ সময় কেটে যেত। কাজের ফাঁকে গল্প, হাসি-ঠাট্টা, মান-অভিমান—সব মিলিয়ে ওর প্রতি একরকম নির্ভরতা তৈরি হয়। আস্তে আস্তে ওকেই ভালো লাগতে শুরু করে।”
আসলে, সম্পর্কের শুরুর দিকে যে কৌতূহল, যে চাহিদা—তা সময়ের সঙ্গে কমে আসে। প্রেমটা আর আগের মতো চমকপ্রদ থাকে না। এক পুরুষ জানান, “বিয়ের আগে আমার স্ত্রী নিজেকে যত্ন করে সাজত। তখন ওকে দেখতে ভালো লাগত। এখন প্রতিদিন ঘরের জামাকাপড়ে ওকে দেখে, আগের সেই উত্তেজনা পাই না। অথচ রাস্তায় কোনো অচেনা মেয়েকে দেখলে সেই পুরনো অনুভবটা ফিরে আসে।”
মানবচরিত্র বড় জটিল। প্রেম কেবল চেহারা বা সৌন্দর্যে আটকে থাকে না। দীর্ঘ সম্পর্কের মাঝে ক্লান্তি, একঘেয়েমি, না বলা চাওয়া—এসব মিলেই তৈরি হয় দূরত্ব। অনেক সময় সম্পর্কের গভীরতা না হারালেও, পুরুষরা খোঁজেন নতুনত্ব, খোঁজেন সেই অনুভব যা অনেক দিন পাওয়া হয়নি।
একজন সাংবাদিক বলেন, “এই আকর্ষণ পুরুষদের মধ্যেই নয়, মেয়েদের মধ্যেও সমানভাবে থাকে। তবে পুরুষরা হয়তো সেটা প্রকাশ করতে দ্বিধা করে না, আর মেয়েরা নিজেদের মধ্যে আটকে রাখে।”
প্রকৃতপক্ষে, ভালোবাসা কেবল এক দিকের অনুভব নয়। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে গেলে প্রয়োজন হয় পরস্পরের প্রতি মনোযোগ, শ্রদ্ধা আর নতুন করে ভালোবাসার প্রয়াস। শুধুমাত্র সৌন্দর্য কখনোই সম্পর্ক ধরে রাখতে পারে না, যদি না তাতে থাকে হৃদয়ের সংযোগ।
জীবনের প্রতিটি সম্পর্ক একটা যাত্রা। সেখানে বাঁক আছে, মোড় আছে, কিন্তু সবচেয়ে জরুরি—আছে বোঝাপড়া। সেই বোঝাপড়ার অভাবেই কখনো কখনো মানুষ হারিয়ে ফেলে তার সবচেয়ে আপন মানুষটিকে।