আব্বাসীয় খলিফা, হারুন আল রশিদের কথা অনেকেই জানেন। তিনি ছিলেন পঞ্চম আব্বাসীয় খলিফা। ইসলামী স্বর্ণযুগের এই খলিফা ছিলেন ইসলামের ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত চরিত্র। তার হাতি কূটনীতি নিয়ে একটি বই লিখেছেন মধ্যযুগীয় ইতিহাসবিদ স্যাম অটউইল সোলসবি।
‘দ্য ইমপেরর এন্ড দ্য এলিফ্যান্ট: ক্রিশ্চিয়ান্স এন্ড মুসলিমস ইন দ্য এজ অব শার্লেমেন’ বইটি ২০২৩ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত হয়। বইটি ক্যারোলিঞ্জিয়ান যুগের খ্রিস্টান এবং মুসলিম সম্পর্কের একটি নতুন ইতিহাস। ইতিহাসবিষয়ক এই বইতে আরবি এবং পশ্চিমা উৎসগুলোর উপর ভিত্তি করে ঘটনাগুলোর একটি নতুন বিবরণ প্রদান করা হয়েছে।
৮০২ খ্রিষ্টাব্দে আব্বাসি খলিফা হারুন আল রশিদ, রোমান সম্রাট শার্লেমেনকে একটি হাতি উপহার দেন। এটি ছিল খলিফার দেওয়া একটি অস্বাভাবিক উপহার। সাধারণত বেশিরভাগ মানুষের ধারণা, মধ্যযুগে খ্রিস্টান এবং মুসলমানরা একে অপরের সঙ্গে সহজাতভাবে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। অথচ এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে যে সম্প্রীতিও ছিল সেটিই তুলে ধরতে চেয়েছেন নরওয়ের ইউনিভার্সিটি অব অসলোর মধ্যযুগবিষয়ক পন্ডিত স্যাম অটউইল সোলসবি।
সোলসবি বলেছেন, ‘খ্রিষ্টান এবং মুসলিমদের মধ্যে ক্রুসেড ছাড়া যেন আর কিছুই ছিল না এ রকম একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রচলিত আছে। ক্রুসেডের কয়েক শতাব্দী আগে খ্রিস্টান-মুসলিম সম্পর্কের একটি সময়কাল সম্পর্কে আমি তুলে ধরতে চেয়েছিলাম।'
এদিকে মধ্যযুগীয় এই ইতিহাসবিদ বলেছেন, 'হারুন আল রশিদের হাতি কূটনীতিকে বর্তমান চীনের পান্ডা কূটনীতির সঙ্গে তুলনা করা যায়। চীনা সরকার তার প্রভাব বিস্তারের জন্য সফট পাওয়ার হিসেবে পান্ডাকে ব্যবহার করে থাকে। বিশ্বজুড়ে চিড়িয়াখানায় পান্ডাদের উপহার কিংবা ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়। এটি বন্ধুত্বের একটি নিদর্শন। আমি মনে করি হাতির বিষয়টিও এমন কিছুই হবে।'
সোলসবি জানিয়েছেন, শার্লেমেনকে উপহার দেওয়া হাতিটি অবশ্যই একটি ভারতীয় হাতি ছিল। কারণ আফ্রিকান হাতিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং পোষ মানানো অনেক কঠিন ছিল।
সূত্র: দ্য ন্যাশনাল