সাহিত্য
অদৃশ্যের অনুভূতি
অমল সরকার
(প্রথম পর্ব)
কাউসার, কাউসার? ঘার ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখে শিউলি দৌড়াতে দৌড়াতে তাকে ডাকছে। কাউসার দাঁড়ায়। শিউলি কাউসারের কাছে এসে ওর হাতের পাঁকা আম এগিয়ে ধরে বলে
--- এই নে, আম টা খা।
--- এই, জন্যে তুই সেই বাড়ি থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে এতো দূর এসেছিস?
---- হ্যাঁ, এসেছি? তাতে কি হয়েছে।
---- তুই তো জানিস আমাদের গাছে কতো আম। তাছাড়া বাজার থেকেও প্রতিদিন আম কিনে নিয়ে আসি। আর তোর এই আমের জন্য আমি এখন সময় নষ্ট করবো।
---- সময় নষ্ট করবি কেন, আমটা এখনি ছিলে খা।
--- শিউলি, তুই এমন পাগলামী করিস না, এতে আমি খুশি হইনা। কথাটা বলার সাথে শিউলির মুখটা কালো বিষাদময় হয়ে যায়। কাউসার দেখে। ও জানে শিউলির কোন ব্যাপারে বাঁধা দিলেই চেহারার দিকে তাকানো যায় না।
---- বারে, কাল বিকালে গাছ থেকে অনেক আম পেরেছে। তার মধ্যে থেকে সব চেয়ে সুন্দর আমটা আমি সরিয়ে রেখেছি তোর জন্য কাউসার।
--- কেউ দেখেনি?
--- শুধু মাত্র মা দেখেছে। মা তো জানেই সাহিত্যের ছোট গল্প
অদৃশ্যের অনুভূতি
অমল সরকার
(দ্বিতীয় পর্ব)
আমি তোর জন্য আমটা রাখলাম।
--- তুই আম খেয়েছিলি?
---- কেন? তুই খাসনি, কেন?
---- তোর জন্য রেখেছি, এতেই আমার খাওয়া হয়ে গেছে।
---- কি বলিস, আমি খেলে তোর খাওয়া হয়ে যায়? তুই দিন দিন বেশি পাগলামো শুরু করেছিস।
--- কি! আমি, পাগলামি শুরু করেছি,দে তোকে আম খেতে হবে না। বলেই শিউলি কায়সারের হাত থেকে ঝটকা মেরে আমটি নিয়ে নেয়। কাউসার ভাবে এখন বিরাট সমস্যা সৃষ্টি হবে। যদি শিউলি আমটি নিয়ে যায় মনের দুঃখে হয়তো পনের দিন এক মাস তার সামনেই আসবে না। তখন কাউসারের মনের কষ্টের শেষ থকবেনা। শিউলি খুব বিরক্ত করে কাউসারকে বাঁধা দিলেই কেঁদে কেটে একাকার। শিউলি ভিষণ কষ্ট পায়। আর শিউলির কষ্ট টাই কাউসারের বুকে এসে লাগে। এমনটা কেন হয় কাউসার নিজেও জানে না। কাউসার শুধু এটুকু জানে শিউলি কাউসার পাশাপাশি বাড়িতে জন্ম নিয়ে ছোট বেলা থেকে এক সাথে খেলাধূলা খাওয়া দাওয়া চলাফেরা করতে করতে এতো বড় হয়েছে। শিউলি বেশ কয়েক বছর আগে ছোট ছিলো। কাউসার গায়ে পায়ে বড় ছিলো তাই, হাত ধরে এখানে সেখানে নিয়ে যেতো
সাহিত্য
গল্প
অদৃশ্যের অনুভূতি
অমল সরকার
(তৃতীয় পর্ব)
অনেক দাবী আবদার মিটাতো। এই কয়েক বছরে অনেক বড় হয়ে গেছে। শরীরে যৌবন এসেছে। রুপ ঠিকড়ে বের হচ্ছে। গ্রামের ছেলেরা শিউলির রুপ যৌবনে বিমোহীত। এসব নিয়ে ওর মা বাবা ভাবে। মেয়ে ইন্টার পাশ করুক তারপর ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দেওয়া যাবে। সে দিন মা বাবা যখন এই ভাবনার বিষয় বলছিলো তখন কাউসার ছিলো সেখানে। শোনার সময় তেমন কিছু মনে না হলেও রাতে শুয়ে শুয়ে কল্পনা করে শিউলির বিয়ে হয়ে যাবে। ও পরের বৌ হয়ে চলে যাবে। তখন তো আর সে তার থাবেনা। মাথা ব্যথা হলে কাছে এসে বলবে না। কিরে, মাথা ব্যথা করছে? কাউসারের ভিতরে কেমন যেন এক শূন্যতার সৃষ্টি হতে থাকে। নিজেও বোঝেনা কেন এমন হয়। শিউলি বড় হয়েছে ওকে বিয়ে দিতে হবে। পরের বাড়ি চলে যাবে । শিউলি বড় হয়েছে ওর বিয়ের চিন্তাও কাউসার করতো পরিবারের আপন ভেবে। তবে তার খারাপ লাগছে কেন? কাউসার শিউলির হাত থেকে খপ করে আম কেড়ে নিতে ওর হাতসহ ধরে টান মারতেই শিউলি কাউসারেট বুকের মধ্যে এসে পরে। শিউলির কালো মুখ আর ছলছল চোখ কাউসারের মনে কষ্ট জাগায়। শিউলিকে বুকে জড়িয়ে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে
সাহিত্য
গল্প
অদৃশ্যের অনুভূতি
অমল সরকার
(চতুর্থ পর্ব)
-- তুই এখন বড় হয়েছিস। এখনো যদি আগের মতো করিস লোকে কি বলবে।
--- বলুক। আমি ওসবে ভয় পাইনা। তোকে ছাড়া কোন মানুষ আমার কাছে ভালো মানুষ মনে হয় না। তোকেই ভয় পাইনা, অন্য মানুষ কি বললো তাতে আমার কিছু আসবে যাবে না কাউসার।
তাহলে আমি যা বলি শুনিস না কেন?
---- কেন শুনবো। আমি তোর জন্য কষ্ট করে কিছু করবো তুই তার মূল্য দিবিনা। কাউসার জানিস আমি না তোকে ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেই পারিনা। বলতো এমন কেন হয়?
--- আমারও তো তো ওই একই অবস্থা শিউলি। তোকে ছাড়া আমার আর কিছুই ভালো লাগেনা। কাউসার শিউলি কে বুকে জড়িয়ে ধরে, পাগলের মতো চুমু খেতে থাকে। শিউলি চোখ বুজে প্রশান্তির দম নিতে থাকে।
৭/৫/২০২৫
727
View
Comments
-
Kazi Eshita
4 months ago
বালিকার প্রথম প্রেম হয়তো এমনটাই হয়
-
Omol Sarkar 5 months ago
দুই তরুণ তরুণী প্রেমের আবেগময় গল্প