Posts

গল্প

দুই জগত, এক প্রাণ" পর্ব- ৪

July 4, 2025

Fijon Qurayish

69
View

পর্ব ৪: বন্ধুত্বের শুরু, বিশ্বাসের রাস্তা

রাকিব আর মেহেদীর প্রথম দেখা হয়েছিল ভুল বোঝাবুঝি দিয়ে, কিন্তু তারপরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছিল এক আশ্চর্য বন্ধুত্ব। একদিন রাকিব হঠাৎ করে স্কুল শেষে মেহেদীর সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“তুই কি সত্যি আমার বন্ধু হতে চাইছিস?”
মেহেদী অবাক হয়ে হেসে বলল, “হ্যাঁ, কারণ তুইই প্রথম ছেলে যে আমার সাথে মন খুলে কথা বলেছিস।”

এরপর শুরু হয় এক ভিন্ন জগতের দুই ছেলের বন্ধুত্বের গল্প। মেহেদী একদিন রাকিবকে তার বাসায় নিমন্ত্রণ করে। রাকিব জীবনে প্রথমবার ঢুকল এসি লাগানো ফ্ল্যাটে। ভেতরে ঢুকে তার চোখ কপালে—বড় টিভি, ঝকঝকে মেঝে, বিশাল খাবার টেবিল।

রাকিব কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল, “তোর বাসায় এত জিনিস, কিন্তু তুই এত একা কেন?”

মেহেদী একটু চুপ করে বলল, “কারণ, এগুলা দিয়ে কারো মন পাওয়া যায় না। আমি সব পেয়েছি, কিন্তু ভালোবাসা পাইনি।”

এরপর মেহেদীও গেল রাকিবের বস্তিতে। তার পা প্রথমবার কাদায় পড়ে গেল, কিন্তু সে রাগ করল না। বরং অবাক হয়ে দেখল—একটা ছোট ঘরে সবাই একসাথে বসে খায়, গল্প করে, হাসে।
সে বলল, “তোমাদের ঘরে দারিদ্র্য আছে, কিন্তু তাপ নেই। আমার ঘরে ঠাণ্ডা আছে, কিন্তু শান্তি নেই।”

রাকিব একদিন স্কুলে নতুন খাতা পায় না দেখে মন খারাপ করে। মেহেদী চুপচাপ তার ব্যাগে রেখে আসে একটি নতুন খাতা ও কলম। রাকিব সেটা দেখে বুঝে যায়, কে দিয়েছে।

এই ছোট ছোট কাজ, হাসি, দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমেই জন্ম নেয় এক গভীর বন্ধন। তারা এখন একে অন্যের পরিবার হয়ে উঠছে।

তাদের ক্লাসের অন্য বন্ধুরাও ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করে—এই দুজন ছেলের বন্ধুত্ব যেন এক নতুন শিক্ষার প্রতীক।

বন্ধুত্ব আর বিশ্বাসের এই রাস্তা যে একদিন কঠিন হয়ে যাবে, সেটা তারা তখনো জানতো না।

Comments

    Please login to post comment. Login