িহিচিত্রাঙ্গদা অর্জুন কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়ে অনঙ্গদেবের কাছে বর চাইলেন সুরূপা হবার। সাময়িক ভাবে অর্জুন তাঁর শরীরি সৌন্দর্যে ভুলে থাকলেন। কিন্তু কিছুদিন বাদে ক্লান্তি এল তাঁঁর। চিত্রাঙ্গদা সুধান "কি ভাবিছ নাথ, কি ভাবিছ?" অর্জুন ভাবছিলেন রাজকুমারী চিত্রাঙ্গদার কথা। স্নেহে সে নারী, বীর্যে সে পুরুষ। বাহুবলে রাজা, স্নেহবলে মাতা। নারী! তিনি নারী!।
মুহূর্তে ভুল ভাংল সুরূপার। অনঙ্গদেবকে বললেন বর ফিরিয়ে নিতে। নিজ রূপে আসীন হলেন। অর্জুন চিত্রাঙ্গদাকে পেয়ে হলেন ধন্য।
মণিপুর নৃপ দুহিতার মত এমন ভুলটি প্রায় সব নারীই করে থাকেন। বাহ্যিক রূপের চর্চায় সময় দিয়ে ফেলেন বেশী। একবার ভাবেননা নারী ছাড়া পৃথিবী অচল। নারী ছাড়া সৃষ্টির ধারাবাহিকতা থাকেনা। স্ত্রীর ভূমিকাই সংসারে মূখ্য। মায়ের ভূমিকাও তাই। পুরুষ চাইলেও পারেনা নারী বিবর্জিত জীবন কাটাতে। রূপের ঝলকে পুরুষকে ভোলানোর এই যে মানসিকতা তাতে ক্লান্তি আছে তৃপ্তি নেই। হয়ত সুখ আছে শান্তি নেই। দিনশেষে আমি কি তবে খেলার পুতুল? নাকি সাজিয়ে রাখবার বস্তু?
নারীর সুখ কর্মে নারীর শান্তি প্রতিষ্ঠায়।
পৃথিবীর পথে পথে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে, পাহাড়ে সাগরে অতি সাধারণ নারীরা নিজেদের অবদানে রাঙ্গিয়ে তুলছেন চারপাশ। তাঁদের জন্য এই দিনটি। দিনটি সেই নারীর জন্য যে দশ বাড়িতে কাজ করে সন্তানকে মানুষ করে তুলছে। আমি তুমি আপনি আমাদের মত হাজার হাজার নারীর জন্য যারা বেগুনী গোলাপীর কর্পোরেট আবরণে নিজেকে বন্দী না করে দক্ষতার সাথে সংসার, কর্মক্ষেত্র, সন্তান, পরিবার সামলাচ্ছেন। আমাদের মাঝে কেউ শিক্ষক, কেউ ডাক্তার, কেউ স্থপতি বা প্রকৌশলী আবার কেউবা নিতান্তই গৃহিনী।
নারী মানেই শক্তির আধার। নারী মানেই সৃষ্টি। নারীর জীবনধারন মানেই প্রতিটা পদক্ষেপে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকা।
নারী দিবসে আমার শুভকামনা সকল নারীকে সাথে নারীদের পাশে থাকা, সাথে থাকা পুরুষদের। শুভকামনা তাদেরও যারা পদে পদে নারীর চলার পথের বাধা। তাদের বাধার কারণেই নারী শক্তিমান হয়। তবু প্রার্থনা তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
নারী নিজ শক্তিতে, কর্মে, সাফল্যে মানুষ হোক। সুরূপা বা কুরূপা যাই হোক মেকী সাজে প্রতিমা না হয়ে স্বাভাবিক সুন্দর প্রফুল্ল থাকুক।
সকল নারীর মনে প্রাণে এই মন্ত্র বাজুক
"নহি দেবী
নহি সামান্যা নারী"।