পোস্টস

প্রবন্ধ

সাদাকালো ও রঙ্গিন আলোকচিত্র।

২৫ মে ২০২৪

সাইদ সুমন

সাদাকালো ও রঙ্গিন ছবির মধ্যে বিস্তর পার্থক্য, এই দুই বিষয় বৈপরীত্যপূর্ণ, সাদাকালো ছবি মানে গ্রে-স্কেল, আর রঙ্গিন ছবি RGB(red,green,blue) এবং তার বিভিন্ন শেড দিয়ে।প্রথম ফটোগ্রাফি ১৮৩৯ সালের আগে আবিষ্কৃত হলেও কালার ফটোগ্রাফি দেখতে পাওয়া যায় ১৮৮০ থেকে ১৮৯০ এর মধ্যে , এবং কো -ডাক তার Kodachrome তৈরি করে ১৯৩৫ এর দিকে, তার আগেই অনেক রঙ্গিন ছবি আছে ইতিহাসে বিভিন্ন ফটোগ্রাফি প্রসেস এর মাধ্যমে।

Color photography was attempted beginning in the 1840s. Early experiments were directed at finding a “chameleon substance” which would assume the color of the light falling on it. Some encouraging early results, typically obtained by projecting a solar spectrum directly onto the sensitive surface, seemed to promise eventual success, but the comparatively dim image formed in a camera required exposures lasting for hours or even days.
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া

তাই যদি হয় কালার ফটোগ্রাফি প্রসেস অনেক আগে থেকে থেকে থাকলে তাহলে ফটোগ্রাফার’রা ইচ্ছে করেই ব্লাক এন্ড হোয়াইট ছবি তুলেছেন ১৯০০ থেকে পুরা শতাব্দী। কিন্তু কেন রঙ থাকতেও এই গ্রে স্কেলে দেখা ?

এর উত্তর এক কথায় প্রকাশ অস্মভব, মোটা দাগে একজন ফটোগ্রাফার সাদাকালো ছবি ক্রিয়েট করেন তার টেস্ট এর জন্য, তার ভালো লাগার জন্য, এবং দীর্ঘদিনের সাদাকালো ছবির যে ভিজ্যুয়াল রেফারেন্স তার প্রতি ভালো লাগা থেকেই,

“Our lives at times seem a study in contrast … everything seen in absolutes of black & white. Too often we are not aware that it is the shades of grey that add depth & meaning to the starkness of those extremes.
Ansel Adams

এবং সব সময় সাদাকালো ফটোগ্রাফি একটা ঐতিহ্য হিসেবে থেকে গেছে, আবার কিছুটা ক্লাসিক টোন বজায় রাখার জন্য থেকেছে, তবে বড় কারন বলা যায় সাদাকালো আলোকচিত্রে রং নেই, গ্রে-স্কেলই তার মূল বৈশিষ্ট্য,



একটি নির্দিষ্ট রং দিয়ে তার কম্পোজিশন কে উপস্থাপন করার জন্য ফটোগ্রাফাররা সাদাকালো ফটোগ্রাফি টেকনিক হিসেবে নিয়ে থাকে, একটা ছবি যখন রঙ্গিন হয় তখন তার মধ্যে অনেকগুলো রং থাকে, ভিউয়ার যখন রঙ্গিন ইমেজ দেখেন তখন ইমেজের মধ্যে সব রং দেখার কারনে ছবির সেন্টার অফ ইন্টারেস্ট থেকে তিনি সরে যেতে বাধ্য হন, কারন মানুষ রং দেখে তরঙ্গের পার্থক্যগত কারনে, যার কারনে হলুদ রং এর দিকে তার চোখ আগে যায়, এর পরে সাদা, সেখেত্রে ফটোগ্রাফার রঙ্গিন ছবিতে কম্পোজিশন এর যে সীমাবদ্ধতায় থাকে তাকে উতরানোর জন্যও সাদাকালো ফটোগ্রাফি ব্যবহার করেন, যেখানে তার ভিউয়ার রং হীন ইমেজ দেখলেও তার উদ্দেশ্য সাধিত হয়। সম্পূর্ণ ইমেজে একটাই টোন বজায় থাকে, সাদাকালো ফটোগ্রাফি কে বলা যায় একটা ছবির আত্মা, আর রং তার পোশাকের রং,  সেখেত্রে ফটোগ্রাফার রংহীন পোষাকে একটা ছবিকে দ্যাখে, কিন্তু রং হীন বললেও, যেহেতু সে একটা রং ধারন করেন তাই সেই গ্রে-স্কেল এর রং কেই আমরা বলি সাদাকালো।

আপাতদৃষ্টিতে তাহলে সাদাকালো ছবির প্রয়োজনীয়তা পাওয়া গেলো তার রংহীনতার বৈশিষ্ট্য যেটার কারনে ভিউয়ার একটা রঙে ইমেজটিকে দেখেন এবং অন্য রং দিয়ে আকৃষ্ট হননা, যেটার উদ্দেশ্য অবশ্যই তার ছবির মুল বিষয়বস্তু হাইলাইট করতে সাহায্য করা।

অনেক ফটোগ্রাফার মনে করেন তিনি প্রকৃতিতে রং দেখেননা, তার চিন্তায় সাদাকালো, সেখেত্রে তিনি সাদাকালো মিডিয়াম ব্যবহার করেন, যেমন হতে পারে ডকুমেন্টরই ফটোগ্রাফি যেখানে ফটোগ্রাফার চাচ্ছেন না তার সাবজেক্ট এর কালারের প্রতি ভিউয়ারের দৃষ্টি রাখাতে, কারন তার সাবজেক্ট এর পোশাক ও background এর রং এর চেয়ে তার ছবির বিষয় ও মোমেন্টকে উপস্থাপন করতে তিনি বেশি আগ্রহী, যেখানে সাদাকালো তার জন্য নিরাপদ অপশন গল্প বলার জন্য।

“I work in color sometimes, but I guess the images I most connect to, historically speaking, are in black and white. I see more in black and white – I like the abstraction of it.
Mary Ellen Mark

আবার ব্লাক এন্ড হোয়াইট ফটোগ্রাফি সব একরকম নয়, কারন গ্রে স্কেল এর ০ থেকে ৯ পর্যন্ত তুলনামূলক মাপ আছে যা কন্ট্রাস্ট কে প্রকাশ করে। তাই সাদাকালো ছবির মধ্যেও অনেক এর ছবি আলাদা করা যায় তার ইউনিক টোনের কারনে বা হতে পারে তার পোস্ট প্রোসেসিং এর কারণে, কিন্তু সাদাকালো ছবি মানে যে অনান্য রং এর একশো ভাগ অনুপস্থিতি তাও নয়, কারন প্রত্যেকটা রং এর গ্রে স্কেল এ একটা ভ্যেলু আছে যার কারনে ফটোগ্রাফার যখন রঙ্গিন ছবি নেন যেটাকে তিনি শেষপর্যন্ত সাদাকালো ফটোগ্রাফি করবেন তার রং থাকা অবস্থায় তিনি সাদাকালো একটা কল্পনা করে নেন আগে থেকে, যখন তিনি জানেন সাদাকালোতে ক্যামন আসবে। এই বিষয়টা মোটেও আন্দাজে নয়।