📘 সাদা ঘর
অধ্যায় ১: আগমন
(সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার)
বাইরে মেঘ জমেছে।
ঠিক যেমন করে মেঘের মাথায় জমে থাকে এখন—ঘন, ছায়াময়, ভারী কিছু।
ঢাকার কোলাহল থেকে পালিয়ে এসে সে এসেছে চরসেনায়। মফস্বল শহর। পুরনো, ধূসর, ঘোলাটে এক এলাকা—যেখানে সময় যেন একটু ধীরে চলে, আর ছায়া গুলো একটু বেশি দীর্ঘ হয়।
মেঘ এসেছে একা থাকতে। তার কথায়, "বাকি সব ক্লান্ত করে তোলে। কিছুদিন একা থাকা দরকার।"
কিন্তু সত্যি কথা হলো, সে পালিয়েছে। একটা সম্পর্ক, কিছু ভাঙা কথা, আর নিজের মনের ভেতরে জমে থাকা অজানা ভয় থেকে।
ঘরটা যেখানে সে উঠেছে, তার নামই—সাদা ঘর।
একটা পুরনো দোতলা বাড়ি। সাদা রং অনেক আগেই মলিন হয়ে গেছে, কিন্তু নামটা রয়ে গেছে।
বাড়ির মালিক চাবি দিতে দিতে বলেছিল—
— "বাড়িটা পুরনো, একটু গা ছমছম করে। ভয় পাওয়ার কিছু নাই, তবে শুনবেন না বেশি কিছু।"
মেঘ হেসে বলেছিল,
— "আমি লেখক না। ভূতের গল্পে আগ্রহ নাই।"
ভেতরে ঢুকেই সে বুঝে গিয়েছিল, ঘরটা ফাঁকা না। আসবাব অল্প, বাতাস ভারী, দেয়ালে আঁচড়ের দাগ। যেন কেউ অনেক কষ্টে কিছু মনে রাখার চেষ্টা করেছে।
---
বিকেলবেলা
বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিল মেঘ, তখনই প্রথম তাকে দেখে—একটা ছোট মেয়ে, ছাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে। নড়ছে না, তাকিয়ে আছে সরাসরি তার চোখে চোখ রেখে।
পরদিন আবার। তারপরের দিনও। একই ছাদ, একই চাহনি।
চতুর্থ দিন, মেয়েটি এসে দাঁড়ায় সাদা ঘরের গেটের সামনে।
— "তুমি এসেছো, আমি জানতাম।"
মেঘ চমকে ওঠে।
— "তুমি কে?"
— মেয়েটির চোখ স্থির, গলা খুবই শান্ত।
— "আমার নাম কনা। তুমি আগেও এখানে ছিলে। ভুলে গেছো?"
মেঘ কিছু বলতে পারে না। সে তো এই প্রথম... তাই তো?
---
রাতে
ঘুমাতে যাওয়ার আগে আয়নার দিকে তাকায় মেঘ। তার চোখ পড়ে একটি খোদাই করা বাক্যে—আয়নার উপরে, একেবারে প্রান্তে:
"তুমি তুমি না। আমি মনে রাখি।"
---
📍 (চলবে...)