অন্তস্পর্শ
writer_choity_moni
আম্মু সবজি বাজি নেই। রিনিকে বলো কিচেন থেকে এনে দিতে।
রিনি এই রিনি (চিৎকার দিয়ে আরিশী)।
-জ্বি আরিশী আপা,কিছু লাগবো।
-আম্মু বলল কিচেন থেকে সবজি বাজির বাটিটা এনে টেবিলে রেখে দিতে ।
রিনি সবজির বাটি এনে রাখতেই আরিশী সবজি বাজি দিয়ে খাওয়া শুরু করল।
আরিশী শোন। জ্বী ছোট মামি বলেন। খাবার খাওয়া শেষ হলে তুমি তোমার তুষি আপার রুমে আইসো। আচ্ছা ছোট মামি।
আপি আমাই রেখে একা একা খাওয়া হচ্ছে ।হে রে,আমার বেশি খুদা লাগছিলো, তুলি তুই তিহানকে ডেকে খেতে বস, না হলে তিহান আবার রাগ করবে। আচ্ছা আপি বলে তুলি যেতে যাবে, তিহান এসে পড়েছে।
- আরিশীর বাচ্চা আমাই রেখেই খাওয়া হচ্ছে ।
-আরে ভাই মাএ বসলাম, তুলিকে বলছিলাম তোকে ডেকে আনতে, এর মধ্যে তুই এসে পড়লি।
-আজকে তো তুই কলেজে যাবি না,আমিও তোকে নোট দিবনা।
-তুই তিহান না দিলে কত তিহান আছে।
- ওকে দেখা যাবে, ঘুরে ফিরে আমার কাছেই চাবি।
ফাহমিদুলকে আসতে দেখে সবাই খাবারে মন দিল।
ফাহমিদুল এতখন ওদের কথা শুনেছেই...
-খাবার টেবিলে বসে কি লাগাইছিস তোরা , আর বড়রা কোথায়।
কেউ কিছু বলল না,আপন মনে খেয়ে যাচ্ছে, রিনি বলল..
- ভাইজান বড় সাহেবরা তো সকালেই বেড় হয়েছে,তুষি আপার বিয়ার লাগি গ্রামের হগ্গলরে নাকি দাওয়াত করব।
★★
তুষি-এটা তোর আরিশী, গায়ে হলুদের দিন পরিস, কেমন।
তুষি আপু আমরা সবাই তো কাল শপিং যাচ্ছিই,এটা বরং তুমি রেখে দাও, তুষার ভাইয়া না জানি কত শখ করে তোমাই কিনে দিয়েছে।
তুলি- আপি এ দেখো এটা আমার, তুষি আপু বাসার সবার জন্য নিয়ে এসেছে। দেখো এটা তিহান ভাইয়ার,এটা ফাহমিদুল ভাইয়ার৷ আর ঐটা তোমার ( আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে)
তুষি আলমারি থেকে প্রয়োজনীয় কাপর গুলো লাগেজ এ ঢুকচ্ছে।
-তুষি আপু তোমার কল এসেছে।
-দেখো তো কে কল দিলো, আরিশী।
-আপু তুষার ভাইয়া।
তুষি আপু ভাইয়ার সাথে কথা বলছে।তুষি আপুর প্রাইভেসির জন্য, আমি আর তুলি রুম থেকে বের হয়ে আসি,
- চলো আপি ভাবির কাছে যাই।
- তিহান মনে হয় কলেজে চলে গেছে।
-হুম আপি,।আজকে না ফুফিরা আসবে, আর হোস্টেল থেকে ফাহিমা আপু আসবে।
-কে বলল।
-আম্মু বলছে আপি।
- ওহ।
রিনি..
- আপা মনি কাকে খুজো।
- ভাবিকে খুজতেছি, কোথায়ও পাই নি।
তুলি..
- রিনি ভাবি কই।
-ভাবি তো বাগানে।
দুজনে চলে এলাম বাগানে,
-ভাবি তুমি এ গরমের মধ্যে বাগান পরিষ্কার করছ, তুলিকে আর আমাকে ডাকলে পারতে।
-আমি পারব তাই আর তুমাদের ডাকি নি।
তুলি
-ভাবি আম্মু কই।
-ছোট মা তো তার অতিথিদের দাওয়াত করতে গেছে।
আরিশী
-হেল্প লাগবে তোমার ভাবি।
-না আরিশী, আমার শেষই।
তুলি
-শেষ হলে রুমে এসো আড্ডা দেওয়া যাবে।
- আচ্ছা।
_______
তিহান কলেজে গিয়ে...
-রুপা আর নিহা আসেনি আজকে কলেজে, ফুয়াদ।
-আসছে মনে হয় আমি ইকটু আগে দেখলাম ক্যান্টিনের দিকে গেলো।
তিহান আর ফুয়াদ কেন্টিনে চলে আসলো, তিহান রুপার কাছে গিয়ে ব্যাগ থেকে তিনটা কাড একটা চিঠি যেগুলো আরিশী দিতে বলেছিল তা দিলো।রুপা বোঝতেই পারছে আরিশী দিছে এগুলো, তাই আর কিছু বলেনি।
ফুয়াদকে কাড দিল তিহান।
-কাল সময়মতো চলে আসিস দোস্ত,।আজ আর ক্লাস করব না, বাসাই চলে যাব।
তিহান বাসাই ফিরার সময় রাস্তায় হাওয়ায় মিঠাই দেখতে পেয়ে পাঁচটা কিনে নিল, প্রতি পিস দশ টাকা। হেটেই বাড়ি ফিরছে ফোন এলো রিসিভ করে কানে দিতে ফোনের ঐপাশ থেকে,
-কালকে ফিরছি আর যা যা বলব সব ঠিক ঠাক করে রাখবি, মেসেজে জানিয়ে দিব কি কি করতে হবে, যেমনটা বলব মনে থাকে যেন।
এটুকু বলে কল কেটে দিল তিহানকে কিছু বলতেই দিল না। তিহান মনে মনে ভাবছে " সব এখন আমাকে করতে হবে নাইলে হাড্ডি একটাও আস্ত রাখবে না"।
_______________________________________________
পরের দিন শপিংয়ে যাওয়ার সময়..***
তিহান আরিশীর দিকে তাকিয়ে..
-শপিংয়ে যাবি ভালো কথা এতে সাজা লাগে কেনো তোদের, তুই কি বিয়ে করতে যাচ্ছিস, সবাই কখন থেকে নিচে দাড়িয়ে, তাড়াতাড়ি আয় না বাপ।
আরিশী শান্ত ভাবে তিহানকে বলল...
- আর ইকটু, শুধু উড়নাটা একচেন্জ করব ভাই।
তিহান আর কিছু বলল না।
তুলি, ভাবি, রিনি, গাড়িতে উঠে পড়েছে ,তিহান ড্রাইভিং সিটে আর পাশে আরিশী বসেছে।
-আমি যাব,আমাই রেখে চলে যাচ্ছিস তোরা।
-আপু কখন এলে হোস্টেল থেকে।
-ইকটু আগে।
ফাহিমা সামনে বসত চাইল।কিন্তু এখানে আরিশী বসা। আরিশী উঠে পিছে আসতে নিলে তিহান...
-আপু গাড়িতে উঠে বসবা, না চলে যাব, তুমি ফিরার সময় সামনে বসো এখন রিনির পাশে বসে যাও।
ফাহিমা আর কথা বাড়ালো না, রিনির পাশে বসে পড়লো।
গন্তব্য স্টেশন টিসি সুপার শপ। এখানে অনেক ভালো ভালো কালেকশন পাওয়া যায়। শপিংয়ে ডুকে যে যার পছন্দ মতো কাপড় চয়েজ করছে টায়েল দিচ্ছে পছন্দ হচ্ছে কিনে নিচ্ছে। আরিশীর একটা কাপড় ও পছন্দ হয়নি, অতি কষ্টে তিহান একটা পছন্দ করে দিয়েছে।
-ভাবি আরিশীরে জামা চয়েজ করে দাও।
-তুলিকে চয়েজ করে দিলাম, রিনিকে চয়েজ করে দিলাম, কই কেউ তো আমাই চয়েজ করে দিলো না।
-ভাবি এ শাড়িটা দেখ তুমার ফর্সা গায়ে এটা দারুন মানাবে কিরে তিহান বল।
- হুম ভাবি আরিশী ঠিকই বলছে।
-হয়ছে হয়ছে আর পাম দিতে হবে না।
জামা কাপড় কেনা শেষে সবাই তুষির জন্য গিফ্ট নিয়ে নিলো। শপিংয়ের সব বিল তিহান প্লে করল। টাকাটা তিহানের কাছে দিয়ে রাখছিল বড় আব্বু।
_______________________
শশি সবাইকে শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে বাড়িতে ডুকতে দেখে....
-আমাদের রেখে, তোমরা আজ শপিংয়ে চলে
গেলে।
তুলি আরিশীদের দিকে তাকিয়ে....
-আমার তো ভাবছিলাম তোমরা আসার সময় শপিং করেই আসবা। তাইনা আরিশী আপি,ভাবি, তিহান ভাই।
-তিনজন একএে হুম, তাই তো রেখে চলে গেছি।
আরিশী তিহানের দিকে তাকিয়ে ….
-সমস্যা নাই শপিং যেতে চাইলে তিহান নিয়ে যাবে, নারে তুলি।
তিহান- না না আমি আর শপিংয়ে যাব না।
তিহানে ফোনে মেসেজ এলো, সে উঠে চলে গেল।
-_____________________
বিকেলে...
ড্রয়িং রুমে সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে আর চানাচুর খাচ্ছে। সবাই মিলে প্ল্যান করল সব ছেলে মেয়েরা এক কালার পাঞ্জাবি আর শাড়ি পড়বে।
তাই কিছু শাড়ি/ পাঞ্জাবি কিনে আনতে বলা হলো তিহানকে।
আহসান মঞ্জিল ভিলার ছাদে হলুদ সন্ধ্যার আয়োজন করা হবে,এতে সবাই এক মত।
এতো বেলা পরে আহসান সাহেব বাসাই ফিরে এলেন, নিজের কয়েকজনকে দাওয়াত দিতেই গেছিলেন। বাবাকে দেখে রিদি দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরল,
- বাবা তোমাই কে বলল দাওয়াত দিতে যেতে অন্য কাউকে পাঠাতে।
- তা হয় নারে মা তোর মুতাব্বর চাচা তাকে আমি গিয়ে না বলল জীবনে আসত না তেমনি এমন অনেক লোক আছে যাদের আমি না বললে আসবে না। কখন এলি।
-অনেক হ্মন।
নাতিরা কই আয় বুকে আয়। শশী শরিফুল, শোহাদ তিনভাই বোন গিয়ে নানাকে জড়িয়ে ধরলো।
-এবার আমাদের ভাগ দাও নানান।
পিছনে ফিরতেই দেখল তোহা,আইফা সাথে ওদের মা রিদ।
-কেমন আছ সবাই।
-একে একে সবাই বলল ভালো আন্টি,ফুফি, আপনি, তুমি।
আহসান মঞ্জিল- আরুশের মা শুনছ। রান্নাঘর থেকে তাড়াতাড়ি বেড়হয়ে আসলেন..
-জ্বি বলুন
-আমি আজকে দুই মেয়ও তিন ছেলের সাথে একসাথে রাতের খাবার খেতে চায় বুঝলে।
-জ্বি।
রিদ- কি জ্বি জ্বি কর ভাবি তুমি, বিয়ে হয়ে আসার পরে তোমাই একদিনও বাবাকে বাবা বলে ডাকতে শুনিনি।
রিদি- তুই ঠিকই বলেছিস,বড় ভাবির দেখাদেখি, ছোট দুজনও এখন এরকম করে।
আহসান মঞ্জীল- আমি বউ মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, বউমা বলল নিজের বাবা ছাড়া কাউকে বাবা ডাকা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম।
রিদ- শুন ভাবি শ্বশুরকে বাবা ডাকা যায়,হাদিসে আছে নিজের বাবার মতো কাউকে বাবা মনে করা হারাম,আর শ্বশুরকে তো তুমি বাবা মনে করে বাবা ডাকবে না সম্মান দেখাতে বাবা ডাকছ, তো বাবা ডাকা যাবে।
_____________
রিনি ছোট আর মেঝকে ইকটু ডেকে আন রাতের খাবারটা তৈরি করে ফেলি আজকে ইকটু বেশি রান্না করতে হবে,বুঝতেইত পারছিস।
রিনি-খারান খালামা আমি ছোট খালা আর মেঝ খালারে এখনই ডেকে আনছি।
তুলি চিল্লাইতে চিল্লাইতে ……
-ভাবি দেখ কে আইছে তোমার আদুরি সোহাগী ফুল আসছে।
ইকটু রাগ দেখিয়ে ভাবি....
-তুলি তুমি জানো না সব ব্যাপারে মজা আমার পছন্দ না।
আরিশী-ভাবি তুলি সত্যি বলছে, ফুল আসছে,চলো নিচে গিয়ে দেখবে।
আরিশী পরির হাত ধরে নিচে নিয়ে আসল।পরী নিচে নেমে দেখলো ফুল সোফায় বসে শরবত খাচ্ছে,বোনকে দেখে ফুল দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো অনেক দিন পর বোনকে কাছে পেয়েছে।
তিহান- আরিশী, তুলি আমি তোদের ভবিষ্যত দেখছি।
আরিশী-এহ বয়ে গেছে। তিহান, তুই যে কি সব ভাবিস।
আরিশী-তিহান চল তুষি আপার রুমে যায়।
তিহান- নারে আমার একটা দরকারি কাজ আছে, তোর হেল্প লাগবে।
আরিশী-ওহ, তাইলে তিহান মন্জিলের ও আরিশীর হেল্প লাগে।
তিহান- খেয়ালী করিস না বাপ আমি সিরিয়াস......
______________________________
~~সন্ধ্যা বেলা...
আপি কাদছো কেনো, আজকে কি তোমার বেশি ব্যাথা করছে। ,তুলি তুই তিহানরে ডেকে দেয়, যা,। তুলি তিহানকে ডেকে আনল। তুলি আর তিহান এসে দেখলে আরিশী দুই হাত দিয়ে চুল টানছে আর কাদছে ওদের আর বুঝতে বাকি নেই আরিশীর যে মাইগ্রেনের ব্যাথাই এমন করছে।।
তিহান- কিরে আরিশী তুই আজকে ঔষধ খাসনি।
আরিশী-শেষ হয়ে গেছে কাল, তোকে না বলাম।
তিহান-সরি রে, আমার ইকটুও খেয়াল ছিল না।
তুলি-এখন কি করবা ভাইয়া, আপিকে এ মহূর্তে ঔষধ দিতে হবে।
তিহান-ফুল না আসছে, ভাবির কাছে শুনেছি ওর নাকি মাইগ্রেনর ব্যাথা, ওর থেকে ঔষধ এনে খাওয়ে দে আরিশীকে , আমি সকালে এনে দেব।
--------------------------------------------------------
ডায়নিং টেবিলটা বড় কিন্তু সবাই এক সাথে বসতে পারবে না, তাই সিদ্ধান্ত নিল ছোটরা পড়ে বসবে। আহসান মঞ্জিল সাহেবের এক পাশে তার বড় ছেলে রূদ্র,অপর পাশে বড় মেয় রিদি বসেছে। রুদ্রর পাশে রুহিন, পাশে রিদ। রিদির পাশে তার ছোট ভাই তকিব পাশে ফাহমিদুল,ফাহিমা, তুষি,শশী,শরিফুল,তোহা,, ১২ জন মিলে খেতে বসল টেবিলে আর জায়গা নেই। তিন জা আর রিনি মিলে টেবিলে খাবার সার্ভ করছে।
চার বছর পর আহসান মঞ্জিলে সুখের বন্যা বয়ছে। সব সুখ যেন আজ আহসান মঞ্জিলে বন্ধি হয়েছে। সবাই তৃপ্তি করে খেলো।বড়রা খাওয়ার পর ছোটরা এসে বসলো, ফুল, তুলি, তিহান,শোয়াদ, আইফা,পরি। তিন জা ও রিনি সবাই খেতে বসে গেলো।
বড় আম্মু
-তুলি আরিশী কোথায়।
তুলি- বড় আম্মু আপি তো খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। ইকটু আগেই আপির মাইগ্রেন ব্যথা উঠছিল।
খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই ঘুমতে চলে গেছে।
আহসান মঞ্জিল ভিলাই ১৪ টা রুম। নিচে সাত উপরে সাত দুতালা বিশিষ্ট বাড়ি এটা। নিচে আহসান সাহেব রুমে তিনি আর শরিফুল থাকলেন। তিহানের সাথে শোয়াদ ঘুমিয়েছে। আরিশী ফুল তুলি আরিশীররুমে। তুলির রুমে শশী তোহা। তুষির সাথে আইফা। আরও অনেক রুম পরিষ্কার করাই হয়নি, কালকে পরিষ্কার করা হবে অনেক মেহমান আসবে।
★★
পরের দিন সকালে...
তুলি আরিশী উঠছে। হুম ভাইয়া। তিহান আরিশীর কাছে গিয়ে……
- এনেয় তোর ঔষধ। শুন ঐযে পাশের তিনটা রুম ভালো করে পরিষ্কার করে রাখবি, এ দর চাবি।
-এহ পারব না, ধুলো যাবে মুখে।
-বইন তুই কইছিলি হেল্প করবি।
-তো,আমি কি জানতাম তুই আমাই দিয়ে এসব করাবি।
তিহান হাত জোর করে
-করে দে বাপ, যা বলবি তাই করব।
আরিশী না শুনার বান করে...
-ওহ সর, এখন আমি মুখে ফেস পেক লাগবো।
বলেই ওয়াশরুমে গিয়ে দেখল ফেস প্যাক নেই রুমে এসে নরম কন্ঠে. …
- তিহান তুই ফেস প্যাক কিনে নিয়ে আই, এসে দেখবি আমি তোর কাজ করে ফেলেছি।
তিহান একটা হাসি দিয়ে..
- ডান।
-------
রিনি এক গাদা রুটি বানিয়ে রাখল যে যার মতো খাচ্ছে। আরিশীর ইকটুও রুটি খেতে ইচ্চে করছিল না। আম্মু আমি রুটি খাবো না। কি খাবি বল বানিয়ে দেই। নুডলস।
শশী তোহার কানে কানে বলছে দেখো কতো আদিখ্যেতা যেখানে আমরা রুটি খাচ্ছি ও কিনা নুডলস খাবে। তোহা প্রতি উত্তরে, হুম, খেয়ে খেয়ে আমাদের অন্য ধংস করছে।
রিনি এটা আরিশীকে দিয়ে আই, আর বলবি পুরোটা যেন শেষ করে। জ্বি খালাম্মা। আরিশী আপা তোমার নুডলস খালাম্মা কইলো পুরোটা শেষ করতে।
তিহান এসে ফেস প্যাক টেবিলে রেখে আরিশীর দিকে তাকিয়ে.....
- কি খাচ্ছিস তুই আরিশী।
আরিশী নুডলসের বাটি হাত দিয়ে ডেকে...
-কিছু না, তুই এনে আবি না।
তিহান মাথা উচু করে বাটির দিকে দেখার চেষ্টা করে..
-খামু না বইন তোর খাবার।দেখমু, দেখা।
আরিশী এবার নুডুলসের বাটি দুই হাত দিয়ে ডেকে...
- না,তুই সব সময় মিথ্যা বলে খেয়ে নেছ সর, কাছে আসবি না।
_________
সন্ধ্যায় হলুদের অনুষ্ঠান তাই সবাই সাজের জিনিস গুলো আলাদা করল, আরো আতিথী এলো গ্রামের এক সমান মেয়েরা এলো, ছেলেরা এলো এক কালর শাড়ি পাঞ্জাবি নিয়ে গেল তারা ওতো সন্ধ্যায় পড়ে আসবে।
তিহান কয়েকটা কাপাল সেট এনেছিল এর মধ্যে শাড়ি গুলো আরিশীর খুব পছন্দ, তাই একটা শাড়ি নিলো। , তিহান ও এখানথেকেই একটা পাঞ্জাবি নিলো পড়ার জন্য। ফাহমিদুল আর পরি জন্য একটা কাপাল সেট। আরো আত্মাীয় রা তাদের অনেকে মেরিড তাদের জন্য কাপল সেট।
তুষিকে তুষারদের বাড়ি থেকে গায়ে হলুদের তথ্য দিয়ে গেছে ঐসবই পড়বে।
ফোয়াদ এসেছে। রুপা,নিহাও,আসছে। রুপা থাকবে। নিহা চলে যাবে ওর মায়ের শরীর খারাপ। আরিশীর সাথে দেখা করেই চলে গেল নিহা।
আজকে আর দুপুরের খাবার কেউ একসাথে খেল না, সবাই রেডি হতে ব্যাস্ত। আবার ছেলের বাসা থেকে লোক আসবে সন্ধ্যায়। রুপা তুলীর সাথে রেডি হচ্ছে।
---
বেলকনির দরজার মেঝেতে বসে একাকি আনমনে কথা বলছে আরিশী...
আম্মুনি তুমি আর আসবে না,বাবাইকেও নিয়ে গেলে। হে বড় আম্মু ভালোবাসে কিন্তু তুমি থাকলে বেশি ভালো হতো।
জানো আম্মু ইকটু আগে তুষি আপা যখন সাজা শেষ মেঝ মামি আপুকে জড়িয়ে দরে কানের নিচে টিপ দিয়ে দিলো, তখন আমার ফাহমিদুল ভাইয়ার বিয়ের কথা মনে পড়লো ঐদিন আমিও সেজে ছিলাম তুমি আমাকে টিপ দিয়ে দিলে,এটা বলে আরিশী কান্না করে দিলো।
এক অদৃশ্য ছায়া কাদিস নারে মা, এভাবে ভাংচুর করিস না নিজেকে, এদিকে তাকা আমি আর তোর বাবাই সব সময় তোর পাশে। আরিশী চোখ মুছতে মুছতে " এখনত আবার চলে যাব, আরেকটু থাক মা, থেকে গেল কি হয়"। এহয় নারে মা,এবলে অদৃশ্য ছায়া বাতাসে মিশে গেল।
__
আরিশী এয়ার ড্রপ খুলে ফাহমিদুল ভাইয়ার বিয়ের দিন পড়া শাড়িটা বের করে পড়ে নিল, আয়নায় সামনে দাড়িয়ে নিজেকে একবার দেখে নিল , কানের নিছে টিপ দিল।
-কিরে কয়টা বাজে এখনও খাবার খেয়ে ঔষধ খা।
-হুমরে, তুই এত ফরমাল ড্রেস পরলি কোথায়ও যাচ্ছিস নাকি।
-হুম।
-,কই।
-তোর বর আনতে বাপ।
ফুল, তুলি, রুপা, শশী,তোহা,আয়িফা নীল শাড়ি পড়েছে,সাথে কাচা ফুলের সেট।তুষি হলুদ শাড়ি। আরিশী লাল পাইর সাদা শাড়ি ইয়া বড় আচল চুলে খোপা কাচা ফুলের সেট পড়েছে।
★★★
তুষিকে বসানো হলো স্টেজের সোফায়। বাসার সবাই এসে হাজির হলো। ফাহমিদুল আর পরী মেরুন কালারের কাপল সেট পরলো , ডেকেরশনের প্রায়ই সবই পিংক তুষি আপুর প্রিয় রং পিংক।গ্রামের সব অতিথি এসেছে।ফটোসোট এর দুজন এসেছিল তারা সবাইকে ছবি তুলে দিচ্ছে। মেয়েরা মেহেদি তুল গিয়ে মেহেদী তুলে আনলো। মেহেদী আর হলুদ বেটে নিয়ে, তুষিকে হলুদ লাগাল, ফল খাওয়াল।
তুলী ,ফুল, রুপা মিলে কালকে কি কি করবে প্ল্যান করছিল আয়িফাও ওদের সাথে যোগ দিছে। গ্রামের অনেক ছেলে মেয়েরা আসছে সবাই অনুষ্ঠানটি উপভোগ করছে।
হলুদ সন্ধ্যায় বিরিয়ানির আয়োজন করা হয়েছে। সবাই নিজের মতো করে খাচ্ছে। আরিশী মাটান বিরিয়ানি ছাড়া খেতে পারে না তাই ভাত আর রোস্ট খেয়ে ঔষধ খেয়ে নিলো।
তিহান আরিশীর কাছে এসে...
-আরিশী দে তোরে ছবি তুলে দেই।
- কইছিলি এতখন।
- তোর বর আনতে।
-বারে বারে এক কথা কবি না।
-কি করবি।
-দেখবি,
এবলে হাতের গ্লাসের পানি ছিরে মারল তিহানের দিকে, -দেখ কেমন লাগে।
-এটা কি করলি আরিশী এখন আমি কি পরবো।
-আরো তিনটা আছে না এখান থেকে পর।
-নারে আর নাই।
সব অনুষ্ঠান শেষ হতে প্রায়ই ১:৪৪ সবাই ক্লান্ত।তিহান মাইক হাতে নিয়ে এখনই ক্লান্ত হলে চলবে, আবেত পার্টি শুরু নাচ হবে এখন নাচ.......