ভৌতিক গল্প:পোট্রেড রহস্য
..........................................
আমি অনিক ছোট্ট একটা কোম্পানিতে চাকরি করি সামান্য কিছু বেতনে।পরিবার বলতে আমি একা মা,বাবা কেউ বেচে নেই অনেক আগেই পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে।তাই আমার এই ফাকা বাড়িতে আমি একাই থাকি অফিস থেকে বাড়ি এভাবেই কেটে যাচ্ছিল আমার সময় অফিস থেকে ফিরে হাত মুখ ধুয়ে সব কাজ শেষ করে বসে যেতাম পোট্রেড আঁকতে এটা আমার পছন্দের কাজের মধ্যে একটা মানুষের ছবি আঁকতে আমার বেশ ভাল লাগে কিন্তু বর্তমান খেয়াল করে দেখলাম হাতে আকা ছবির চাহিদা বেশ বেড়েছে তাই আজকাল আর ফ্রিতে ছবি আকি না কিন্তু তবুও কেউ টাকা দেয় কেউবা দেয় না এদিকে পকেটের অবস্থাও গড়ের মাঠ সেদিন রাতে অফিস থেকে ফিরে খাওয়া শেষ করে রাতে শোয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি ঠিক তখনই ফোনটা বেজে উঠল ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম অদ্ভুত একটা নাম্বার থেকে কল এসেছে রাত তখন প্রায় ১:৩০ বাজে।আমি সচরাচর এধরণের ফোন কল রিসিভ করি না তবুও অপরেটোরের লোকজনদের সাথে ইয়ারকি করার উদ্দেশে ফোনটা ধরলাম ফোনটা ধরতেই বেশ অবাক হলাম ফোনের ওপাশ থেকে এক মেয়ে মিষ্টি কন্ঠে কথা বলছে...মেয়েটা:হ্যালো আপনি কি অনিক? আমি:হ্যা বলছি কিন্তু আপনি কে? কিছুটা অবাক হয়ে আর আপনি আমার নাম জানলেন কি করে?
মেয়েটি:সবই বলব আপনাকে তার আগে এটা বলুন আপনি কি পোট্রেড ফোটো আঁকেন?আমি:হ্যা কিন্তু সেটা শুধুই শখের বিষয় কেনো বলুন তো।মেয়েটি:আমার একটি ছবি একে দিতে পারবেন?আমি:হুম অবশ্যই আপনার চেহারার আকৃতির বর্ণনা দিন একে দিব।মেয়েটি:ওহ আচ্ছা আপনাকে কত টাকা দিতে হবে? আমি:এইতো মাত্র ১০০ টাকা মেয়েটি:ওহ আচ্ছা, আর শুনুন আকার জিনিস পত্রের মধ্যে আপনি শুধু আপনার কাগজ ব্যবহার করতে পারবেন আর আমার দেওয়া পেন্সিলটা দিয়েই আপনাকে ছবিটা আঁকতে হবে।আমি:আচ্ছা ঠিক আছে তারপর ফোনটা কেটে গেল আমার মাথায় হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মেয়েটি কে? আর আমাকে কি করে চিনলো এভাবে নিরঘুম একটি রাত কেটে গেল পরদিন যথাযথ অফিস থেকে রাতে বাসায় ফিরে ফ্রেস হয়ে সোফায় বসে টিভি দেখছিলাম হঠাৎ বেল বাজলো ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি মধ্যরাত সাত,পাচ ভাবতে লাগলাম এত রাতে আবার কে এলো।ভাবতে ভাবতে দরজা খুলে দেখলাম বাইরে কেউ নেই আর দরজার সামনে পরে আছে একটি অদ্ভুত ধরনের পেন্সিল আর একটা সুটকেস।কাউকে দেখতে না পেয়ে ভাবলাম এসব একখানে কে রেখে গেল। ভাবতে ভাবতে সুটকেস খুললাম।খুলে আমি পুরো অবাক পুরো সুটকেস ভর্তি টাকা।টাকাগুলো দেখে অবাক হবার পাশাপাশি ভয়ও পেলাম টাকা গুলো কার আর এখানে কেই বা রেখে গেল।ভাবতে ভাবতেই দেখলাম সেই অদ্ভুত নাম্বার থেকে আবার ফোন,ফোনটা রিসিভ করতেই মেয়েটা বলে উঠলো সুটকেস আর পেন্সিল পেয়েছেন?আমি ভয়ে ভয়ে বললাম হ্যা পেয়েছি তখন মেয়েটি বল্লো হুম টাকাগুলো আপনার জন্যই ছিল আপনি ওগুলো রেখে দিন। তখন আমি বললাম ভয় মিশ্রিত কন্ঠে আপনাকে শুধু ১০০টাকাই দিতে হত এতটাকা দিয়ে আমি কি করবো তাছাড়া আমি এতটাকা কখনো দেখি নি তাই ভয় ভয় করছে তার চেয়ে বরং আপনি টাকাগুলো নিয়ে যান।মেয়েটি:এইজন্যই আপনাকে আমি এত ভালবাসি আপনার এই সততা আমাকে মুগ্ধ করেছে তাই তো আমি আপনার কাছে এসেছি।আমি:মানে,ঠিক বুঝলাম না কি বলতে চাইছেন আপনি?মেয়েটি:কিছুনা আপনি ভয় পাবেন না টাকাগুলো আমারই আপনি সুটকেসটা ভেতরে নিয়ে যান আমি:কিন্তু? মেয়েটি:যা বলছি তাই করুন ধমকের সুরে...তারপর সুটকেসটা ভেতরে নিয়ে আসলাম।পরদিন রাতে একই সময়ে আবার সেই অদ্ভুত নাম্বার থেকে কল আসলো ফোনটা রিসিভ করতেই মেয়েটা বললো আমাকে টেবিল চেয়ারে বসতে আমি মেয়েটির কথা মত কাজ করলাম মেয়েটি তার চেহারার আকৃতির বর্ণনা দিতে লাগলো আমি সে বর্ণনা অনুযায়ী ছবি আকতে লাগলাম। কিন্তু কি অদ্ভুত ব্যাপার সাধারণত এসব পোট্রেড ছবি আঁকতে অনেক ধরনের পেন্সিল দরকার হয় কিন্তু কি আশ্চর্যের ব্যাপার ওই একটা পেন্সিলই যেন সব পেন্সিলের কাজ করছে আমার যখন যেমন দরকার তেমনই যেন হয়ে যাচ্ছে পেন্সিলটি।দেখতে দেখতে দশ দিনের মধ্যে পোট্রেড টি সম্পূর্ণ হয়ে গেল আমি দেখে চোখ ফেরাতে পারছিলাম না কারণ ছবিটির মধ্য সবচেয়ে আকর্ষনীয় যে বিষয়টি ছিল সেটা ছিল মেয়েটির চোখ কারন এত সুন্দর চোখ আমি আমার জীবনে কখনো দেখি নি দেখে যেন বলেই ফেললাম এ যেন সৃষ্টি কর্তার কুদরতি হাতে তৈরী দুনিয়াবী হুর পরী পৃথিবীর কোনো মেয়ে মানুষের চোখ যে এত সুন্দর হতে পারে না দেখলে হয়তো জানাই হত না আমার ছবিটা অনেকক্ষণ দেখার পর ভাবলাম কি যেন কে জানে কি নাম মেয়েটার যে কিনা এত সুন্দর চোখের অধিকারীনী।এই রমনী যে ব্যাক্তির স্ত্রী হবে সে কতই না ভাগ্যবান। ভাবতে ভাবতে কিছুটা প্রেমেই পরে গেলাম।ছবিটার।অবশেষে ছবিটি টেবিলের ওপর রেখে দিয়ে শুয়ে পরলাম কাল সকালে যার ছবি তাকে দিয়ে দিব এই ভেবে।কিন্তু সকালে উঠে আমি যা দেখলাম তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।হায়,হায় একি কাগজে কনো ছবি নেই একদম সাদা মনে হচ্ছে সেই কাগজে কনো ছবিই যেন আকা হয় নি।আর তার বদলে বড় বড় করে লেখা আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
- চলবে........।।