স্থান: ময়মনসিংহের এক গ্রাম — রঘুনাথপুর
চরিত্র:
আরিফ – গ্রামের ছেলে, ইন্টার পাশ করে ঢাকায় গিয়ে এখন ওয়ার্কশপে কাজ করে। শান্ত স্বভাবের, আত্মসম্মানবোধ প্রবল।
সুরভি – একই গ্রামের মেয়ে, কলেজে পড়ে, সহজ-সরল, চোখে স্বপ্ন অনেক।
রিমন – সুরভির বড় ভাই, শহরে ব্যবসা করে।
আরিফ আর সুরভি এক স্কুলে পড়ত। তখন শুধু দেখাশোনা ছিল। সময়ের সঙ্গে দুজনেই বড় হয়ে গেল। আরিফ ঢাকায় চলে গেল রোজগারের জন্য, আর সুরভি গ্রামের কলেজে ভর্তি হলো।
এক ঈদে আরিফ বাড়ি আসে। তখনই হঠাৎ এক বিকেলে রাস্তার মোড়ে দেখা হয়ে যায় দুজনের। চোখাচোখি হয়, অস্বস্তি লাগে — কিন্তু একটা অদ্ভুত টান কাজ করে।
এরপর শুরু হয় চুপিচুপি কথা বলা — মাঝেমধ্যে খালার বাসায় গিয়ে ফোনে কথা, মাঝে মধ্যে মাঠের ধারে দেখা। দুজনেই জানে, এই সম্পর্ক সমাজ মেনে নেবে না — বিশেষ করে সুরভির ভাই রিমন।
একদিন:
রিমন বিষয়টা আঁচ করতে পারে। সে সুরভিকে কড়া ভাষায় বলে দেয় —
“আরিফের সাথে কোনো সম্পর্ক থাকলে জীবনে আর বাড়ির মুখ দেখবি না।”
সুরভি ভয় পায়, আবার ভালোবাসাও ছাড়তে পারে না।
এদিকে আরিফ বুঝে যায়, তাদের পথ সহজ না। সে সুরভিকে একদিন বলে,
“তোর চোখে আমি স্বপ্ন দেখি, কিন্তু তোকে কষ্ট দিতে পারি না। তুই যদি পরিবারকে না বুঝাতে পারিস, আমি নিজে থেকে সরে যাবো।”
সুরভির চোখে পানি আসে। সে কিছু বলে না।
এরপর আরিফ আবার ঢাকায় চলে যায়। ফোন বন্ধ, কোনো যোগাযোগ নেই।
সুরভি কাঁদে, কিন্তু কিছু করার নেই।
দিন যায়, মাস যায়। হঠাৎ একদিন রিমন একটা দুর্ঘটনায় পড়ে। হাসপাতালে ভর্তি। গ্রামের সবাই পাশে দাঁড়ায় — আরিফও খবর পেয়ে ছুটে আসে, রক্ত দেয়, সবকিছু করে।
রিমনের চোখ খুললে দেখে, পাশে আরিফ। সে অবাক হয়।
তখন সে বলে,
“তুই এত কিছু করলি, অথচ আমি তোকে খারাপ ভেবেছিলাম।”
আরিফ শুধু বলে,
“আপনি আপনার বোনকে অনেক ভালোবাসেন, আমিও।”