শহর থেকে অনেক দুরে এক গ্রামে ছিল এক পুরনো বাড়ি। জলিল সাহেব বাড়িটি কম দামে পেয়ে কিনে নিলেন। শহরে থাকতে গেলে অনেক টাকা পয়সা খরচ করতে হয়। তিনি অনেক কৃপণ মানুষ।জলিল সাহেবের বউ রেহানা বড় বাড়ি পছন্দ করেন। তাই তিনি এই বাড়িটি কিনেন। জলিল সাহেবের দুজন জমজ ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। তাদের নিয়ে তিনি নতুন বাড়িতে চলে আসেন।কিন্তু এ কি কান্ড!বাড়ি যে অনেক নোংরা। তো সব কিছু বাদ দিয়ে উনি পরিবারসহ কাজ করতে শুরু করেদেন। তিনি টাকা পয়সা খরচ করতে চান না বলে একজন কর্মচারীও আনেন নি।অনেক কাজ করার পর তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তারা রাতের খাবার শেষ করে যে যার ঘরে চলে যায়।রাতে যখন জলিল সাহেবের ঘুম ভাঙে তখন তিনি দেখেন তার মেয়ে তার পাশে নেই।মেয়েটির নাম রুমি। জলিল সাহেব রেহানাকে জাগাতে চাইলে সে উঠে না পরে জলিল সাহেব নিজেই খুজতে লাগলেন মেয়েকে।
তিনি খুঁজতে খুঁজতে দোতলায় চলে যান। দোতলায় জলিল সাহেবের দুই ছেলে ঘুমাচ্ছিল। ছেলেদের নাম কবি ও রবি।ছেলেদের ঘরে না পেয়ে যখন আবার নিচে যাবেন তখনই তিনি ছাদের সিড়ি থেকে হাসির আওয়াজ পান। তিনি ভয়ে কিছুক্ষন সেখানে দাঁড়িয়ে রইলেন। পরে ধিরে ধিরে তিনি ছাদের সিড়ি তে উঁকি মেরে দেখেন রুমি পুতুল দিয়ে খেলছে আর হাসছে।এটা দেখে তিনি রুমি কে বললেন, তুমি এখানে কি করছো? আমি তোমাকে কোথায় কোথায় খুঁজেছি। তুমি একা একা এখানে কিভাবে আসলে?মেয়েকে জরিয়ে দরে তিনি যেন একটা শান্তি পেলেন। জলিল সাহেব বললেন, তুমি জানো বাবা কতটা ভয় পেয়েছি। রুমি বলে ওঠে, বাবা আই এম সরি। তুমি রাগ করে না। আমি একা আসিনি। আমিতো আমার বন্ধুদের সাথে খেলা করছিলাম।তুমি রাগ করলে তারা ভয় পাবে। তারপর জলিল সাহেব রুমিকে কোলে করে আনার সময় তার মনে হতে লাগলো তার পিছে কেউ আছে।তিনি চুপচাপ সিড়ি দিয়ে নামতে লাগলেন। নামার সময় মনে হচ্ছিল ওই জিনিসটা ওনার অনেক কাছে। এমনকি ওনার ঘারের উপর শ্বাস ফেলছে। কিন্তু তিনি পিছনে তাকানোর সাহস পেলেন না। পরে তিনি ধিরে ধিরে ঘরে ঢোকেন। কিন্তু একি রুমি যে খাটা শুয়ে আছে। তাহলে তার কোলে কে।তিনি দেখলেন তার কোলে একটা পুতুল। জলিল সাহেব চিৎকার করে উঠলে রেহানা ও রুমি দুজনেই উঠে যায়। রেহানা জলিল সাহেবকে শান্ত করলে তিনি সব ঘটনা খুলে বললেন। রেহানা বলে, তুমি আজ অনেক কাজ করেছো তাই তোমার এমনটা মনে হচ্ছে। ঘুমোলে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু জলিল সাহেব বললেন,আমি এতোটা ভুল দেখলাম। সকাল হলে সবাই ঘুম থেকে উঠে নাস্তা খেয়ে আবার কাজে লেগে পরে। আজ কবি ও রবি ছাদ পরিস্কার করবে। কবি অনেক চালাক ও শান্ত ছেলে। অন্য দিকে রবি অনেক বাচাল ও বোকা। তারা কথা বলছিলো। রবি বলতে থাকে কবি তুই জানলে অবাক হবি নতুন বাড়িতে আসার সময় আমি একটা বাড়ি দেখেছি। কবি বলে, এতে অবাক হবার কি আছে।রবি বলে, আরে এটা না আমি বলেছি মাত্র একটা বাড়ি। কবি বলে, তারাতাড়ি কাজ কর নাহলে রুমি আমাদের আইসক্রিম খেয়ে ফেলবে। এই বলে তারা তারাতাড়ি কাজ শেষ করে। পরে ছাদ পরিস্কার করার পর তারা দেখে যে তাল গাছটাতে কি যেনো একটা কালো জিনিস।রবি বলে,কবি দেখ ওইটা কি যেনো কালো কালো।কবি বলে, ঠিকতো ডালমে কুচ কালা হে।রবি বলে, চল দেখি। এই বলে তারা লাঠি দিয়ে ওইটা টানাটানি শুরু করে। পরে বাবা ডাক দিলে তারা দেখে ওই জিনিসটা আর নেই।রবি বলে, পাখি হবে হয়তো।এই বলে তারা তারাতাড়ি নিচে নামে। জলিল সাহেব তার স্ত্রী কে নিয়ে শহরে যাচ্ছেন। বাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কিনতে।রুমিকে তারা রবি কবির কাছে রেখে যান।তারা চলে গেলে রুমি বায়না ধরে সে লুকোচুরি খেলবে। কবি ও রবি খেলতে বাধ্য হয়। কিন্তু শর্ত একটা বাড়ি ছারা অন্য কোথাও লুকোতে পারবে না।রবি গুনতে শুরু করে কবি আর রুমি তারাতাড়ি করে লুকিয়ে পরে। রবি এবার খুজতে শুরু করলো। রবি অনেক খোঁজে কিন্তু তাদেরকে খুঁজে পায়না।
পরে সে দোতলায় চলে যায়। এদিকে কবি আর রুমি খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে।রবি দোতলায় একটা আওয়াজ পেয়ে তাদেরকে খুজতে থাকে।পরে তার পিছন দিয়ে মনে হলো রুমি দৌড় দিয়ে চলে গেলো।সে ছুটতে শুরু করে রুমির পিছনে। রবি বলতে থাকে, রুমি অনেক হয়েছে আমি তো তোমাকে দেখে ফেলেছি তাও তুমি দৌড়াচ্ছ কেন? তারপর সে রুমির পেছনে দৌড়ানো বাদ দিয়ে কবি কে খুজতে থাকে। কবি মনে হয় ছাদে।কারন আমি ছাদ খোলার আওয়াজ পেয়েছি। সে ছাদে ছুটে যায়। দেখে এক কোনায় কবি লুকিয়ে আছে। রবি বলে, দেখে ফেলেছি।আর লুকিয়ে লাভ নেই।হঠাৎ পিছন থেকে কবি রবিকে ডাক দিলে রবি কবির দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে। কবি বলে,তোর মুখেতো ইদুর ডুকে যাবে।তুই এইখানে কি করিস?আমরা কখন থেকে লুকিয়ে আছি। রবি বলে, তুইতো ওই কোনায় লুকিয়ে ছিলি। কবি ওর ঘারের মধ্যে একটা ঠাস করে দেয় বলে,তুই পারিসনি বলে এখন এই কথা বলছিস।হয়েছে আর খেলা লাগবে না তোর জন্য লুকিয়ে থাকতে থাকতে রুমি ঘুমিয়ে পরেছে। এখন চল নিচে।