রিকশায় থাকা অবস্থায় অংশুমান হঠাৎ বলে উঠে আপনার নামটা তো যানা হলো না, কি করেন আপনি। আমি মাহমুদ। এখানে একটা এনজিও তে চাকরি করি তার পাশাপাশি রেস্টুরেন্টে কাজ করি । তারপর আর আমাদের মাঝে কথা হয় নি। আমি ও তাকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করিনি, সেও আমাকে কিছু আর জিজ্ঞাসা করেনি । অংশুমান একটা দু তলা বাড়ির সামনে দাঁড়াতে বলে রিকশাওয়ালা কে। আমরা নামলাম। ভিতরে ঢুকে দেখি একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। বাসার ভিতরে গিয়ে দেখি পুরা বাসা অন্ধকার। অংশুমান লাইট জ্বালিয়ে দেয়। লাইটের আলোয় দেখে আমার মনে হয় প্রান ফিরে পেলাম অংশুমান আমাকে আমার রুম দেখিয়ে দেয়, সে তার রুমে চলে যায়। আমি রুমে গিয়ে জামা কাপড় ব্যাগ থেকে বের করে গুছিয়ে রাখলাম।সব জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখে আমি ঘুমাতে গেলাম এর মধ্যে একবার ও অংশুমান আমার সাথে দেখা করতে আসেনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি টেবিলে নাস্তা রাখা আছে। অংশুমান কে ডাকলাম, কোন সাড়াশব্দ আসছে না ওর। ওর রুমে গিয়ে দেখি সে রুমে নাই। তারপর আমি নাস্তা করে অফিসে চলে যাই। রাতে বাসায় এসে দেখি বাসার দরজা খোলা ভিতরে গিয়ে দেখি অংশুমান ঘুমাচ্ছে। আমি ওকে না ডেকে ঘুমাতে চলে যাই। আমার ঘুম আসছে আসছে এমন সময় আমার কানে বাচ্চার কান্নার শব্দ আসে। আমি ভাবলাম পাশের বাসার হবে কারো বাচ্চা আছে। এই রকম পাঁচ দিন আমি কান্না শুনতে পাই। ছয় নাম্বার দিন আমার ঘুম আসছিলো না আমি রুমের মধ্যে হাঁটছিলাম তখন আবার বাচ্চার কান্না আমার কানে আসে, আমি যখন অংশুমান এর রুমের সামনে আসি তখন দেখি কোন বাচ্চা কান্না করছিলো না কান্না করছিলো অংশুমান। সে অদ্ভুত ভাবে বসে আছে। এটা দেখে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো। অংশুমান বুঝার আগেই আমি রুমে চলে যাই। দরজা বন্ধ করে দোয়া পড়তে থাকি। আর বারবার ঘড়ি দেখতে থাকি কখন সকাল হবে।আর আমার মাথায় শুধু চলছিলো যে কিভাবে একটা ছেলে ছোট বাচ্চার মত কান্না করতে পারে।এত বড় বাসায় সে একা থাকে কেন ওর কি পরিবার নাই।এই সব ভাবতে ভাবতে আমার ঘুম চলে আসে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি আমার দরজায় আওয়াজ হচ্ছে যখন আমি উঠে দরজা খোল তে যাই তখন আমার হাত পা কাঁপতে থাকে। দরজা খুলে দেখি অংশুমান দাঁড়িয়ে আছে আর বলে কি হলো আজকে ঘুম থেকে উঠতে এতো দেরি অফিসে যাবেন না। আমি বলি যাবো। এতদিন অংশুমান আমার সাথে নাস্তা করেনি আজ হঠাৎ এক সাথে নাস্তা করার জন্য ডাকছে। আমার ভিতরে কেমন জানি ভয় কর ছিলো। সে আমার সাথে অনেক কথা বলছিলো সব কিছুর উত্তরে আমি শুধু জি জি করছিলাম। আমি বলি অংশুমান আমাকে এখান থেকে যেতে হবে। মিনহাজ বলছে ওর বাসায় থাকার জন্য। তখন অংশুমান চাপা কন্ঠে বলে আমি তো তোমাকে যেতে দিব না।