Posts

গল্প

কসাই ডাক্তার পর্ব- ১

July 18, 2025

Fijon Qurayish

Original Author ফিজন কোরাইশ

62
View

 পর্ব ১: হাসপাতালের রক্তগন্ধ

বিকেল ৪টা।
রাজধানীর একটি নামকরা প্রাইভেট হাসপাতাল—"মেডিপল ক্লিনিক অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার"
হাসপাতালের ভেতর চকচকে টাইলস, সুগন্ধি দেওয়া দেয়াল, সামনে অভ্যর্থনা ডেস্কে বসে চমৎকার হেসে কথা বলা নার্স।

সবকিছু দেখে মনে হয়, এখানে চিকিৎসা হয় না—জাদু হয়।

কিন্তু সেই সাজানো পর্দার আড়ালেই আছে এক অন্ধকার—রক্ত, লাশ, লোভ আর কসাইদের মতো ডাক্তার।

এই হাসপাতালের চিফ সার্জন,
ড. শওকত করিম—বয়স ৫৫, মাথাভরা সাদা চুল, জোরালো গলা, সবার চোখে ‘গড’।

কিন্তু তার হাতে অসংখ্য রোগীর মৃত্যু।

❝ যে অপারেশন করা যেত না, সেটাও করান।
যার ওষুধ লাগত না, তাকে ব্যাগভর্তি প্রেসক্রিপশন দেন।
যার রিপোর্ট ভালো, তাকেও ICU তে ঢোকান। ❞

এই হাসপাতাল একটা “মেশিন”—টাকা বের করার। আর মানুষের জীবন এখানে গিনিপিগ।

 এক গরীব মা আর তার সন্তান

ফারজানা, একজন দরিদ্র নারী। তার ছেলের নাম মারুফ। বয়স ৯। হঠাৎ স্কুলে পড়ে গিয়ে মাথায় ব্যথা পায়। এক আত্মীয়ের পরামর্শে তাকে আনা হয় মেডিপল ক্লিনিকে।

সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার দেখে বলে:

"বাচ্চার ব্রেন স্ক্যান লাগবে, MRI করাতে হবে।"

MRI রিপোর্টে দেখা যায় মাথায় কিছুই হয়নি।

তবুও, ডাক্তার বলে:

"সেফ সাইডে রাখি, একটু মাথায় রক্ত জমেছে। এখনই অপারেশন দরকার। না হলে কমা হয়ে যাবে।"

মা কান্নাকাটি করে।
বলে, “স্যার আমার কাছে টাকা নাই।”

ডাক্তার শান্ত গলায় বলে,

"আমরা তো ভালো চিকিৎসা দিই, ফ্রি করতে পারবো না। দয়া দেখাতে হলে সরকারি হাসপাতালে যান।"

এক দোকানদার আত্মীয় ৫০ হাজার টাকা ধার দেয়।
মারুফকে নেয়া হয় ওটিতে।

 কসাইয়ের ছুরি

অপারেশন শুরু হয় রাত ৯টায়।

ভেতরে ঢোকে ড. শওকত করিম ও তার সহকারী ড. মানসুর।

ঘণ্টা দুয়েক পরে ড. শওকত বেরিয়ে বলেন—

"অপারেশন ভালো হয়েছে। ছেলেটা ঘুমাচ্ছে।"

কিন্তু সকালে যখন মা ছেলেকে দেখতে চান, তখন নার্স বলে,

"ওনার অবস্থা একটু ক্রিটিক্যাল… আইসিইউতে রাখা হয়েছে।"

মা চিৎকার করে কাঁদে,
কিন্তু ভেতরে ঢুকতে দেয় না কেউ।

দুপুরে ডাক্তার বলে:

"দুঃখিত। বাচ্চাটি ব্রেইন হ্যামারেজে মারা গেছে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম।"

মা জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়।

 সাংবাদিক শুভ

শুভ নামের এক তরুণ সাংবাদিক সেই হাসপাতালের বিরুদ্ধে আগে থেকেই তদন্ত করছিল।
তার কাছে ছিল ৭টি মৃত্যুর রিপোর্ট—যা সবই অপ্রয়োজনীয় অপারেশনের সময় হয়েছে।

শুভ গোপনে একজন নার্সের সাহায্যে দেখে নেয় মারুফের MRI রিপোর্ট—তাতে কোথাও কোনো সমস্যা ছিল না।

তবে কেন অপারেশন?

শুভ বুঝে যায়—এই মৃত্যু ইচ্ছাকৃত। ডাক্তাররা ফাঁকা অপারেশন দেখিয়ে টাকা কামায়। আর রোগীর মৃত্যু হলে দায় চাপায় ‘জটিলতা’-র ওপর।

 অদৃশ্য লাশ

মারুফের মৃত্যুর পর মা ফারজানা কফিন চাইলে হাসপাতাল বলে:

"লাশ হাসপাতালের নিয়মে আমরা হ্যান্ডওভার করবো না। প্রশাসনিক অনুমতি লাগবে।"

কিন্তু রাতে শুভ দেখে—একটি লাশ গোপনে গাড়িতে করে বের করা হচ্ছে।
সে অনুসরণ করে দেখে লাশ যাচ্ছে এক মেডিকেল কলেজের “রিসার্চ ইউনিটে”।

অর্থাৎ: রোগী মারা গেলে, পরিবারের অনুমতি ছাড়াই লাশ বিক্রি করে দেওয়া হয়!

 বিস্ফোরণ

শুভ সব প্রমাণ একত্র করে একটি রিপোর্ট বানায়—
"কসাই ডাক্তার: মেডিপল হাসপাতালের মৃত্যুকামরা"

ভিডিওতে থাকে:

MRI রিপোর্ট

গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত অপারেশন বিল

হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়া লাশ

শুভ রিপোর্টটি একটি বড় অনলাইন নিউজে প্রকাশ করে।

পুরো দেশ কেঁপে ওঠে।

 শেষ দৃশ্য (পর্ব ১)

ড. শওকত করিম টিভি দেখে চেয়ার ভাঙে,

“আমাকে কসাই ডাক্তার বলেছে? ওদের আমি ছাড়বো না।”

হাসপাতাল প্রশাসন শুভকে হুমকি দেয়।
পুলিশ ‘জিজ্ঞাসাবাদে’ ডাকে ফারজানাকে।

কিন্তু এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্জে ওঠে জনগণ।

হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড হয়: #কসাইডাক্তার #JusticeForMaruf

Comments

    Please login to post comment. Login