একটা ছোট্ট গ্রামে থাকত আরিফ নামের এক ছেলেটি। দরিদ্র পরিবারের সন্তান, বাবা একজন কৃষক, মা গৃহিণী। অর্থের অভাবে ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারেনি, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই ওর মধ্যে ছিল এক অদম্য ইচ্ছাশক্তি—একদিন “কিছু একটা করবে”।
পড়ালেখা শেষ না করেই কাজ করতে শুরু করে আরিফ। সকালে চা দোকানে কাজ করত, বিকেলে মানুষের বাড়ি গিয়ে টিউশন পড়াত। রাস্তায় হেঁটে হেঁটে লাইব্রেরি থেকে বই আনত, পড়ত রাত জেগে। বন্ধুদের যখন ফোন, ফেসবুক, ঘুরতে যাওয়া নিয়ে ব্যস্ত, আরিফ তখন জীবনের মানে খুঁজে বেড়াত—নিজেকে খুঁজত।
একদিন সে সিদ্ধান্ত নেয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। সবাই হাসল—“তোর মতো গরিবের ছেলেও কি কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে?”
কিন্তু আরিফ হাল ছাড়ল না। সারাদিন কাজ করে, রাতে পড়ে, দিনের পর দিন নিজের সঙ্গে লড়ে গেল। অবশেষে, ভর্তি পরীক্ষা দিল এবং… সে মেধাতালিকায় স্থান পেল দেশের নামকরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে!
গ্রামের মানুষ তখনও বিশ্বাস করতে পারছিল না—চা দোকানের ছেলেটা এখন শহরের নামী ছাত্র!
বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সে থেমে থাকেনি। নিজের উপার্জনে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে, স্কলারশিপ পেয়েছে, একাধিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে, এবং শেষে একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছে।
গ্রামে ফিরে একদিন সেই পুরনো চা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিল,
“স্বপ্ন বড় দেখো, পথ কঠিন হলেও ইচ্ছা থাকলে অসম্ভব বলে কিছু নেই।”