ঝিরিঝিরি বৃষ্টি থেমে আসছে সন্ধ্যা গরিয়ে রাত হবার উপক্রম সব কিছু কেমন ঝাপসা মনে হচ্ছে। আশে পাশে তাকিয়ে বুঝতে পারলো সে কোনো নদীর ঘাটে পরে ছিলো। ঠিক তখনি তার শরির জমে বরফ হয়ে গেলো জ্ঞান হারানোর আগে সে যা দেখেছিলো তা মনে করতেই তার ৬ষ্ঠ ইন্দ্রিয় আবার ইংগিত দিচ্ছে আরো বাজে কিছুর সম্মুখীন হতে হবে। তার পর সে আশে পাশে তাকিয়ে দেখতে পেলো চাদের আলোয় হাল্কা কিছু একটি প্রতিফলিতো হচ্ছে।
সে জিনিসটা ধরেই বুঝতে পারলো এটি একটি ডাবল ব্যটারি ওয়ালা টর্চ লাইট তখন সে আকাশ থেকে পরলো তবে কি সেই এই সব তান্ডব এর মূল। কিন্তু সে এতো কিছু না ভেবে টর্চটি জালিয়ে আশে পাশে দেখতে পেলো তার সাথে যতো গুলো মানুষ এসেছিলো সবার মাথা বিহিন ধর মাটিতে পরে আছে।
আর ত্রিশার ছিন্নভিন্ন দেহো দেখে তার জ্ঞান হারানোর আগের কিছু মুহুর্ত মনে পরলো। কেউ একজন এসে ধুয়ার মতো কিছু বাতাসে ছরিয়ে দেয় যার ফলে সবাই চখের জালায় আর্তনাদ করছিলো ঠিক তখন কেউ পেছন থেকে সামনে এগিয়ে গেলো শরীরে ধাক্কা দিয়ে হটাত কারোর চিৎকার আমি সামনে দৌরে গেলাম দেখার জন্য কে চিৎকারে দিলো।
সেই মুহুর্তে কেউ আমার মাথায় বাড়ি দেয় ফলে আমি আর চলতে পারছিলাম না কিন্তু জ্ঞান হারানোর ওই মুহুর্ত টুকু সে আপছা আপছা দেখতে পেলো ত্রিশাকে কিছু লোক কোপাচ্ছে। যার ফলে তার শরিরের অংশ গুলো এখানে ওখানে ছিটকে পরছে। এমন বীভৎসতা মনে পরতেই সে কল্পনা থেকে বের হয়ে কাপতে শুরু করে দেয় উন্মাদের মতো চিল্লাতে থাকে। তখনি কেউ পেছন থেকে বলে উঠলো তুই বেচে আছিস! সে আর পেছনে না তাকিয়ে বলল
আমি আবার আসবো তোর কাছ থেকে আমি আমার আপন জনদের ক্ষতি করার কৈফিয়ৎ আমি নিয়ে ছারবো।
এই বলে সে রক্ত মাখা শাড়ি পরা অবস্থাতেই ঢোলতে ঢোলতে দৌরাতে লাগলো সে ঘাটের গেইটের সামনে আসতেই আবার দেখতে পারলো ওই সব গুলো মানুষের মাথা ঝুলছে গেইটে চাঁদ এর আলোতে এতো টুকু দেখে সে আবার জ্ঞান হারালো,,,,,,,
,
(📌 পুরো উপন্যাসটি নিচে পড়ুন…)
🧨 রাক্তের খেলা, ধর্ষণ, প্রতারণা, প্রেম আর প্রতিশোধে মোড়ানো এক রহস্যময় কাহিনি
🏡 ঘটনা শুরু ময়মনসিংহের এক গ্রামে — ১৯৮৭ সালে...
🌪️ "ঐশ্বর্য" — এক অসাধারণ ও বুদ্ধিমতী মেয়ে, যার ভাগ্য নিজেই এক গল্প!
📌 বাকিটুকু পড়ে ফেলুন 👇👇
.
📖 মায় - গন্ডি
পর্ব - ১
✍️ মোহাম্মদ নূর
নজরুল সিগারেটটা নিভাতে নিভাতে ঠান্ডা কণ্ঠে বলল "এই মাইয়া এইভাবে কিছুই কইতো না।"
এটা বলেই নজরুল মেয়েটির মাথার এক খামচি চুল ধরে টেনে তুলল। তারপর আবার বলল,
— "ওই মাইয়া, তুই আমার ভাই দুইডারে কী করছস? আর আমার বিশ কুড়ি টেহার ব্যাগডা কই?"
মেয়েটি ঝাপসা চোখে ধীরে ধীরে তাকাল। চোখের নিচে কালি, মোমের মতো সাদা ত্বক যেন আগুনে ঝলসে গেছে। চুলগুলো এলোমেলো। কপালের এক কোণে কাটা দাগ থেকে রক্ত ঝরছে। তার লাল-সাদা শাড়িটা রক্তে মাখামাখি। সব মিলিয়ে আজ সেই কোমল হৃদয়ের সৌন্দর্যের ছাপ আর নেই — তাকে এখন ভয়ংকর সুন্দর লাগছে।
মেয়েটি কাপা কণ্ঠে বলল,
— "একটু পানি দিন… আমাকে… আমা…আমার তো… বাঁচতে হবে।
আমার শেষ… দুটো কাজ… বাকি আছে।"
সে যেন শ্বাসকষ্টের রোগীর মতো হাপাচ্ছে।
নজরুল বলল,
— "হ, তোর বাঁচতে হইবো। আমার ভাইয়ের খবর দে। তোরে তোর জায়গায় দিয়া আমু।"
সে চিৎকার করে উঠল,
— "কিরে! কেডা কই আছস? তারা তারি পানি লইয়া আ!"
সজল দৌড়ে পানি এনে দিল। মেয়েটি তা খেয়ে নিল।
তারপর নজরুল আবার বলল,
— "এই মাইয়া, এখন আমার ভাই কই? আমার টেহা কই?"
মেয়েটি এবার মাথাটা উঁচু করে তাচ্ছিল্যের হাসি দিল — মনে হলো যেন কোটি বছর পর কোনো অতৃপ্ত আত্মা প্রাণ খুলে হাসছে।
নজরুল কপাল কুঁচকে বলল,
— "এই মা***! আমারে তুই মজার পাত্র ভাবস?"
এটা বলা শেষ করার আগেই মেয়েটি তার মুখে থুতু ছুঁড়ে দিল।
নজরুল রেগে গিয়ে মেয়েটির গালে একাধিক চড় মারল — গায়ের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে। তবুও মেয়েটির হাসি থামল না। সে হেসেই যাচ্ছে।
রাগে গালিগালাজ করতে করতে নজরুল মেয়েটির গলা চেপে ধরল। মেয়েটির চোখ বড় বড় হয়ে গেল। এক সময় চোখে ঝাপসা দেখছিল…
ঠিক তখনই নজরুল পাশের দিকে ছিটকে পড়ে গেল — কেউ তার গালে জোরে একটা চড় বসিয়েছে।
মেয়েটি মেঝেতে পড়ে ছিল। হুঁশ প্রায় নেই — তবুও হাঁটুতে ভর দিয়ে ঘুরে বসল।
নজরুল চমকে বলল,
— "আম্মা?! তুমি এইহানে কী করো?"
সাহিনা খাতুন ধমক দিয়ে বললেন,
— "কি করতেছিলি তুই? বলছিলাম মেয়েটার কাছ থেকে আমার ছেলের খোঁজ নিতে — মারতে বলিনি। আরেকটু দেরি করে আসলেই তুই সব শেষ করে দিতি!"
নজরুল মাথা নিচু করে বলল,
— "হ আম্মা, আমার ভুল হইছে। কিন্তু এই নোরে সকাল থেইকাই জিগাইতাছি, কিছুই কইলো না — বরং আমার মুখে থুতু মেরেছে!"
মেয়েটি কাশতে শুরু করল।
সাহিনা খাতুন জোর গলায় বললেন,
— "পানি নিয়ে আয়! আর তুই এখন যা, আমি দেখতাছি।"
নজরুল পানি এনে দিয়ে চলে গেল। যাওয়ার সময় বলল,
— "মাইয়াডা কিন্তু অনেক চালাক। সাবধান।"
সাহিনা বললেন,
— "আমি জানি আমার কী করতে হবে। তুই তোর কাজে যা।"
নজরুল চলে গেল।
সাহিনা মেয়েটির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
— "মা, তুমি ঠিক আছো?"
মেয়েটি কাশতে কাশতে বলল,
— "জি… আমি ঠিক আছি।"
সাহিনা জিজ্ঞেস করলেন,
— "তোমার নাম কী মা?"
মেয়েটি চুপ।
সাহিনা বললেন,
— "আমাকে সব বলো, না হলে আমি কিভাবে তোমার সাহায্য করব? বলো মা।"
মেয়েটি বলল,
— "আপনি সাহায্য করবেন আমার?"
সাহিনা বললেন,
— "হ্যাঁ, সবটা খুলে বলো আমাকে। তোমার নাম কী?"
মেয়েটি উত্তর দিল,
— "আমার নাম... ঐশ্বর্য।"
🎞️ ঐশ্বর্য বলতে শুরু করল:
সাল ১৯৮৭, ময়মনসিংহের একটি গ্রাম — ছদ্মনাম চন্দনপুর।
১৯টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এই অঞ্চল কুসংস্কারে পূর্ণ। আজও গ্রামের বাজারের মাঠে বিচার চলছে। পাশের রাস্তা ধরে হেঁটে স্কুলে যাচ্ছে ঐশ্বর্য আর তার ছোট ভাই ইউসুফ।
ইউসুফ জিজ্ঞেস করল,
— "আপা, ওইনে কী হইতাছে?"
ঐশ্বর্য বলল,
— "পরে বলি, এখন চলো — তাড়াতাড়ি পা চালাও।"
ঐশ্বর্যের বয়স ১৭। সে খুব বুদ্ধিমতী ও ইবাদতগার মেয়ে — ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে।
সে অসম্ভব সুন্দর — রূপ দেখে মেয়েরাও তাকিয়ে থাকে। কোমর ছোঁয়া চুল, উজ্জ্বল গায়ের রং, টানা টানা চোখ — যেন ময়ূর পেখম তুলে নাচছে।
ঐশ্বর্য বাবা, ভাই, দাদা ও শিক্ষক ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে কথা বলে না। স্কুলে যাওয়ার সময় হিজাব পরে, এখন পুরোপুরি নিকাবেও ঢাকে।
তারা স্কুলের মাঠে ঢুকতেই বৃষ্টি পড়া শুরু হলো। দৌড়ে ক্লাসে ঢুকে গেল। ঐশ্বর্য নবম শ্রেণিতে পড়ে, ইউসুফ পঞ্চম শ্রেণিতে।
ক্লাসে ঢুকে দেখে সবাই প্রায় চলে এসেছে। তার প্রিয় বান্ধবী হুমায়রা (ডাকে হিমু) কাছে এলো।
হিমু বলল,
— "কিরে, তোর এত দেরি? হারায়া গেছিলি?"
ঐশ্বর্য বলল,
— "হিমু, তুই এখন নবম শ্রেণিতে পড়িস। শুদ্ধ ভাষায় কথা বল।"
হুমায়রা হেসে বলল,
— "আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। আর তুই তো জানিস, মানুষ অভ্যাসের দাস!"
ঐশ্বর্য বলল,
— "হুমম… কথা তো ভালো বলিস। আচ্ছা, গ্রামে আজ কী বিচারের বিষয়?"
হিমু বলল,
— "মনে হয় কেউ নদীর ধারে গেছিলো…"
ঐশ্বর্য বলল,
— "কালি ঘাটে নাকি?"
হিমু মুখ চেপে বলল,
— "আস্তে বল! এই ঘাটের নাম লইলে কেলেঙ্কারি হয়! তুই কি জানিস না?"
ঐশ্বর্য বলল,
— "এই সব কুসংস্কার!"
হিমু কপালে হাত দিয়ে বলল,
— "আল্লাহ! তোরে কে বলছে ওখানে কিছু নাই? আমার বাপে নিজে সাদা কাপড় পরা চারডা ভূত দেখছে!"
ঐশ্বর্য বিরক্ত হয়ে বলল,
— "ভূত বলতে কিছুই নাই। আমার আম্মুই বলেছে — জিন আছে, ভূত না।"
হিমু বলল,
— "আমি সত্যিই কইতাছি!"
ঐশ্বর্য হিমুর কান মুচড়ে বলল,
— "হুম, হইছে। আর বলতে হইবো না — স্যার আসতেছে, বসে পড়!"
ঐশ্বর্যদের স্কুলে ছেলে-মেয়ে আলাদা করে পড়ানো হয়, তাই সে কখনো বিব্রত বোধ করত না। স্কুল শেষে তারা বাসায় রওনা দিল।
যেতে যেতে ইউসুফ আবার জিজ্ঞেস করল,
— "আপা, তুই তো কইলা না বাজারের মাঠে কী হইতাছিল?"
ঐশ্বর্য বলল,
— "কিছু না। আম্মাকে জিজ্ঞেস করিস।"
বাড়ি ফিরে ঐশ্বর্য ডাক দিল,
— "আম্মা! আমি আসছি!"
ভেতর থেকে মিষ্টি গলায় ভেসে এলো,
— "হাত-মুখ ধুয়ে, কাপড় পাল্টে খেয়ে নে আগে!"
তাদের বাড়িটা গ্রামের অন্য ঘরগুলোর থেকে একটু দূরে। চারদিক দেয়াল দিয়ে ঘেরা, পেছনে ছোট বারান্দার মতো খোলা জায়গা।
তার সামনে একটি মেঠো পথ চলে গেছে হাতের ডানে নদীর দিকে। পথের এই পাশে রহমান বাড়ি আরেক দিকে বিশাল এক সুপারি বাগান। গ্রামের মানুষ বলে সুপারি বাগানে নাকি মানুষ দের জেন্ত কবর দেওয়া হয়েছে। আচ্ছা জাই হোক আমরা রহমান বাড়ির বর্ননায় ফিরে আসি।
📌 ভুলত্রুটি মার্জনীয়।
পর্ব–২ শীঘ্রই আসছে...
.
.
.
কমেন্টে জানিয়ে দিন কেমন হয়েছে এর পরের পর্ব আরো রহস্য দিয়ে ঘেরা।
#মায়াগন্ডি #পর্ব১ 📖📖📖