নরকজীবন
জেগে উঠি প্রতিদিন এক মৃতঘণ্টার শব্দে।
ঘুম ভাঙে না—
শুধু চোখের ভিতর লুকোনো ঘোলা সমুদ্র
অবিরত ঢেউ তোলে,
যেখানে আর কোনো পাখি নেই।
এই শহরে মানুষ হেঁটে চলে,
কিন্তু কেউ কারো দিকে তাকায় না।
তারা জানে, চোখে চোখ পড়লেই
অন্ধকার ঢুকে পড়ে দেহের গভীরে।
চুলায় আগুন নেই।
ঘরের দেয়ালে কাঁপে
ছেঁড়া এক অরণ্যের স্মৃতি—
তবু আমরা খাই, কথা বলি,
প্রতিদিন একটু করে পচে যাই
জীবনের গভীর পাঁকে।
নরক যদি কিছু হয়,
তবে সেটি এই সকাল।
সূর্য ওঠে, কিন্তু তাপ দেয় না।
আলো ফোটে, তবু গন্ধ আসে না
ধূপের মতো।
তুমি একদিন জিজ্ঞেস করেছিলে—
এই জীবন কি বেঁচে থাকা?
আমি কিছু বলিনি।
কারণ তখনই বুঝেছিলাম
আমরা দুজনেই পুড়ছি নিঃশব্দে
ভেতর থেকে, ধোঁয়াহীন আগুনে।
এ নরকজীবনে আশ্বাস আসে না।
শুধু ঘূর্ণির মতো ঘুরে ফিরে আসে
একটি পুরনো দরজা—
যা কেউ খুলে না কখনো।