### মায়া গন্ডি
**পর্ব : ২
.
মোহাম্মদ নূর
বাড়ির মাঝখানে ছিলো উঠন, উঠনে একটি কুয়া। বাড়ির সামনে বড় করে লেখা — **"রহমান বাড়ি"**।
আশেপাশের এলাকায় তাদের ছিলো খুব নামডাক, কারণ ঐশ্বর্যের বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, আর ঐশ্বর্যের দাদা ছিলেন মেজর।
সংসারের হাল ধরতে এখন ঐশ্বর্যের বাবা, সরকার থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে বড় মাছের কারখানায় ব্যবসা শুরু করেছেন। তাই তাদের সংসারে কোনো দিন অভাব-অনটিও আসে নি।
ঐশ্বর্যের বাবার নাম রবি রহমান, দাদার নাম নুরুল রহমান। তার দাদার বাবা ছিলেন ব্রিটিশ কালের সামরিক বাহিনির একজন সৈনিক, সেই সূত্রে তিনি চাকরি পেয়ে নিনের যোগ্যতায় মেজর হয়েছিলেন। এখন অবসর সময়ে জীবনের শেষ দিনগুলো গুনছেন।
হঠাৎ, ঐশ্বর্যের মা চেঁচিয়ে ডাকলো— **"ঐশ্বর্য! ইউসুফ কোথায় তোরা? তোদের না বললাম হাত-মুখ ধুয়ে খেতে আয়!"**
সান্তি খাতুন—ঐশ্বর্যর মা তিনি একজন খুবই নরম মনের মানুষ, কিন্তু যখন কথা সন্তানের ভালো মন্দের হয়, তখন ছাড় দেন না।
ইউসুফ দৌড়ে এসে মেঝেতে বসলো, ঐশ্বর্য বললো, **"জি আম্মা, আসছি!"**
সে ঘর থেকে বের হতেই, বাড়ির দরজায় কেউ কড়া নাড়ে। শান্তি চোখে ইশারা করে ঐশ্বর্যকে থামতে বলল, **"কে? কে বাইরে?"**
পুরুষ কণ্ঠ ভেসে এলো— **"জি, আমি এস.পি আকাশ, এখানকার লোকাল পুলিশ স্টেশনের দারোগা।"**
শান্তির কপাল কুঁচকে গেলো, সে ভয়ভীতি লুকিয়ে ঐশ্বর্যকে ভেতরে যেতে বললো।
ঐশ্বর্য ভয়ে কেঁপে উঠলো, ভাবলো—তার বাবার সাথে তো আবার কিচু হলোনা? ভেতরে চলে এলো।
কিছুক্ষণ পর, সান্তি বললো— **"ঐশ্বর্য, বাইরে আয়। দাঁড়া আগে মাথায় হিজাব পরে বের হ।"**
ঐশ্বর্যের মনে হলো—পুলিশ বাড়ির ভিতরে এসেছে। হিজাব পরে মাথা নিচু করে বের হলো সে।
আকাশ এক নজরে সবাইকে দেখে বললো, **"আপনি কে?"**
ঐশ্বর্য ভয় পেয়ে গেলো।
সান্তি বললো, **"এটা আমার মেঝো মেয়ে, আপনারা আপনাদের কাজ করুন।"**
আকাশের চোখগুলো ঐশ্বর্যের দিকে টলমল করতে লাগলো, সে বললো, **"আপনার মেয়ের মুখ দেখতে চাই। আমরা তবেই সুস্থি ফিরে পাবো।"**
শান্তি রেগে গিয়ে বললো, **"এত কথা আর শুনতে চাই না অনেক হয়েছে!"**
আকাশ বললো, **"আমার ডিউটি, বাধা দিবেন না।"**
অবশেষে, শান্তি রাগে ফুসফুস করতে করতে, একটানে ঐশ্বর্যের হিজাব খুলে দিলো।
ঐশ্বর্য সাদা রঙের থ্রি-পিস পরে ছিলো। হঠাৎ হিজাব খুলায় চুল এলোমেলো হয়ে গেলো।
আকাশের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। মনে হলো তা জ্ঞান হারাবার উপক্রম সে ভালো করে দেখ্র চেষ্টা করছে।
সে মনে মনে কবিতা ভাবলো, **"এই চোখ এখানেই থেমে যাক… একি মানুষ না এই মহিলা জিন পরি পালে।"**
ঐশ্বর্যের গাল লাল হয়ে উঠলো, চোখগুলো মাটির দিকে নামছে না।
শান্তি একটু ধমকের সুরে বললো, **"এখন আসেন আপনারা। এটা ভদ্রলোকের বাসা। পুলিশ দেখলে মানুষ বাজে কথা ছড়াবে। আপনারা আসতে পারেন।"**
আকাশ হকচকিয়ে গেলো। ঐশ্বর্য কিছু বলতে পারলো না।
সান্তি বললো, **"ঐশ্বর্য, নিজের ঘরে যা।"**
ঐশ্বর্য দৌড়ে ঘরে গেলো।
আকাশ বললো, **"কিছু মনে করবেন না। আমাদের দায়িত্ব পালন করছি। আপনি শিক্ষিত, তাই বুঝবেন। ভাল করে তল্লাশি না করলে চাকরিও চলে যেতে পারে।"**
সান্তি বললো, **"আমি কিছুই মনে করিনি। আপনারা আসতে পারেন।"**
আকাশ চলে গেলো। সান্তি এখনো রাগে ফুসফুস করছে। ঐশ্বর্য ভয় পেয়ে আছে।
সে ভাবলো, **"মা কে এর আগে এভাবে কখনো রাগতে দেখিনি…"**
সান্তি পেছন থেকে বললো, **"এর আগেও রেগেছি তুই দেখিসনু।"**
ঐশ্বর্য বললো, **"আম্মা, তুমি কেন রেগে গেলে?"**
আর আমি কি ভাবছি সেটাও বুঝে গেলে?
সান্তি মিষ্টি কণ্ঠে বললো, **"আমি তো তোমার মন থেকে মাথার মগজ পর্জন্ত সব খবর জানি।"**
ঐশ্বর্য আরও কৌতূহলে জিজ্ঞেস করলো, **"আম্মা, কালি ঘাটের ঘটনা কি সত্য? ওখানে কি সত্যিই ভূত আছে?"**
**ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।** **পর্ব ৩ জলদি আসবে পাশে থাকবেন ধন্যবাদ।
77
View
Comments
-
Kazi Eshita
3 months ago
গল্প তো ভালো, তবে বহু বানান ভুল যে