
পর্ব- ৮: চিঠি কেনো আসে না
পৌষ মাসের শেষ সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। আজকে থেকে রাত এগারোটায় শুরু হয়ে প্রতিদিন ভোর পর্যন্ত কারফিউ চলবে। তিন চার মাস ধরে নানা কারণে দেশটা অস্থির হয়ে আছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সংঘর্ষ সহিংসতা চলছেই। দশ-বারো দিন পর আমাদের জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, এতো সব বিবাদের উদ্ভব সদ্য বাতিল হওয়া সেই অমীমাংসিত নির্বাচন ঘিরেই।
আমাদের হোস্টেলে জরুরি অবস্থার তেমন কোনো প্রভাব পড়লো না। আমাদের সবাই তখন পরীক্ষা নিয়ে ভয়ানক ব্যস্ত। আমার নিজের অবস্থা ছিল সবার চেয়ে করুণ। জৈব রসায়ন আর ক্যালকুলাসের কিছুই বলতে গেলে শিখি নাই। টেস্ট পরীক্ষায় দুই বিষয়ে ফেল করলে, কলেজ থেকে ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি পাবো কিনা এই দুশ্চিন্তায় আমার মাথা খারাপ অবস্থা। বিগত কয়েক মাস আমার কেটে গেছে মূলত গল্প আর গানের নেশায়।
ছুটির দিন বাদে বিগত বিকেলগুলো পাবলিক লাইব্রেরিতে বসে একরকম আনন্দেই কেটে যাচ্ছিল। দুপুরে খাওয়ার পর প্রায় প্রতিদিনই একলা হেঁটে চলে যেতাম। লাইব্রেরির ভবনটা একতলা হলেও আয়তনে বিশাল। চারিদিক সবুজ গাছে ছাওয়া। বামদিকের সদর দরজা দিয়ে ঢুকলে সুপরিসর ম্যাগাজিন কর্নার। সাজিয়ে রাখা লম্বা টেবিলগুলোতে জাতীয় স্থানীয় মিলিয়ে দৈনিক পত্রিকা থাকে প্রায় ডজনখানেক। পত্রপত্রিকার সাথে ঘণ্টা খানেক কাটিয়ে এক দৌড়ে চলে যাই গল্প পড়তে। ইতিহাসের বইও টানে খুব। আর ভালো লাগে স্মৃতিকথা পড়তে। কতো বিচিত্র উপায়ে মানুষ ভুলে ফেলে আসা অতীতকে স্মরণ করে। কোনো কোনো আত্মজীবনীকেতো রীতিমতো আত্মঘাতী মনে হয়, যেন স্মরণের সমুদ্র সেচে ঝিনুকের বিষ তুলছে একজন কোমল মানুষ, সজ্ঞানে ও স্বেচ্ছায়।
তবে পরীক্ষার দুশ্চিন্তায় আজকাল আর পুস্তক পত্রিকায় মন বসাতে পারছি না। টেস্ট পরীক্ষা শেষ হলে খবর আর সাহিত্যের কাছে ফিরে যাওয়া আরও দুরুহ হয়ে গেল। শখ বলতে টিকে থাকলো শুধু গান। ঘোরাফেরা, বইপড়া, সিনেমা দেখা বন্ধ করে আসলে কতখানি লাভ হলো বলা মুশকিল। এখন দুপুর থেকে সন্ধ্যা আরও আয়েশ করে বিভিন্ন ভাষার গান শুনি। আগে শুনতাম কেবল ক্যাসেট প্লেয়ারে। গত কয়েকদিন থেকে যুক্ত হয়েছে আরো আধুনিক এক যন্ত্র। সিডির চাকতিতে গান যেহেতু ভিন্ন প্রযুক্তিতে ধারণ করা হয়, শুনতে অন্য রকম আরাম লাগে।
গান শোনার এই মুগ্ধকর যন্ত্র কিন্তু আমার নিজের না। আধুনিক কলের গানের আসল মালিক আমাদের হোস্টেলের নতুন রাঁধুনি। চলতি মাসের দুই তারিখ কাজে যোগ দেয়ার পরদিন আসার সময় দেখলাম তার হাতে বড় একটা চটের ব্যাগ ঝুলছে। আমাদের হোস্টেলের রান্নার জায়গাটা ছিল দক্ষিণমুখী। সেই দরজার একপাশে একটা চেয়ার পেতে সিডি প্লেয়ারটা আস্তে করে রাখলেন আমাদের নতুন খালা। একটা পুরোনো হিন্দি গানের চাকতি খুলে আঁচল দিয়ে মুছে বসিয়ে দিলেন। গান শুরু হলে সুখ-উপচানো হাসিমুখে তিনি কাজে নেমে পড়লেন।
দুই তিন দিন খালার ওই অ্যালবামের গান একটানা চললো, একেক গান কয়েকবার করে। তৃতীয় দিন বিরক্ত হয়ে আমি একটা রবীন্দ্র সঙ্গীতের অ্যালবাম নিয়ে আসলাম। চতুর্থ দিন বাউল আব্দুল করিমের গান। দিনে দিনে আমার সংগ্রহ বাড়তে লাগলো। খালাও দেখলাম আমার উপর খুশি। দিন দশেকের মধ্যে তো একরকম অলিখিত চুক্তিই হয়ে গেল যে খালা এখন তাঁর গান শোনার যন্ত্র আমার ঘরে রেখে মন দিয়ে কাজ শেষ করবেন। মাগরিবের আজানের আগে আগে আমার কেনা নতুন অ্যালবামসহ তিনি ঘরে ফিরবেন।
পরেরদিন তাঁর গলায় থাকে নতুন শেখা সুর। গানের কথা খালা খুব একটা মনে রাখতে পারেন না। এদিকে আমার পরীক্ষা প্রস্তুতির একটা বড়ো সময় চলে যাচ্ছে ত্রিকোণমিতি আর ক্যালকুলাসের পেছনে। অনেক কষ্টে একজন নতুন টিউটর পাওয়া গেছে। কোর্ট স্টেশন পার হয়ে তাঁর বাড়ি। হোস্টেল থেকে বের হয়ে রিকশায় গেলেও চল্লিশ মিনিট লেগে যায়। ফেরার সময় নানা কারণে আরো বেশি। টেস্ট পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন তো ঘরে ফিরতে ফিরতে প্রায় কারফিউর সময় হয়ে গেল। শেষ কৈশোরের মনে পরিপূর্ণ জীবন সমান দুঃখ নিয়ে ঐদিন আমি হাঁটা শুরু করেছিলাম সোজা উত্তর দিকে। রসায়ন নিয়ে ভয় ছিল, কিন্তু ফলাফলে দেখা গেল পদার্থ আর প্রাণিবিদ্যাতেও পাশ করতে পারি নাই।
কোর্ট স্টেশনের পরের রাস্তা এমনিতেই একটু অন্ধকার তার উপর কুয়াশায় পথে ছড়ানো আলোগুলো ঘোলা হয়ে গেছে। পেছনে আবছা শহর ফেলে নিরুদ্দেশ হয়ে হাঁটলাম বহুক্ষণ। মনের মধ্যে শত রকমের ভবিষ্যত খেলে যাচ্ছে। বেশিরভাগ আগামীর গল্পেই আমি দিশাহীন ছুটছি। জীর্ণ পোশাক, ভাঙা শরীর নিয়ে বছর তিরিশের আমি অসহায়, অস্পৃশ্য হয়ে কার যেন ঠিকানা খুঁজে হয়রান। আমার ভবিষ্যতের পৃথিবীতে প্রেমের কোন আভাস নাই। বন্ধু বলেও কাউকে খুঁজে পাচ্ছি না। কাল্পনিক একাকীত্বের ভার ধীরে ধীরে আমার পদক্ষেপের গতি কেড়ে নিচ্ছে। জনশূন্য ফেরার পথকে মনে হচ্ছে অন্তবিহীন।
পরের পুরো দিন বলতে গেলে নির্বাক গেল। কারো সাথে কথা বলতে ভালো লাগছিল না একদম। দুই একজন এসে কোনো একটা জরুরি আলাপ শুরু করতে চেয়েছিল, আমি বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখাই নাই। নাওয়া খাওয়াও বন্ধ। ঘর ছেড়ে বের হতে হতে বিকেল গড়িয়ে গেছে। রাত থেকে খাদ্যহীন থেকে আমার পেট ক্ষুধায় চৌচির। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম আজকে হোস্টেলে কোনো রান্না হয় নাই। বাইরে খেতে বের হলাম। হাত পা চলছিল না, তাই দুই মিনিটের পথ যেতেও রিকশা ডাকতে হলো। শিক্ষাবোর্ডের উল্টোদিকের গলিতে কয়েকজন সৈনিক সটান দাঁড়িয়ে আছে। জিপের ভেতরেও দেখলাম কয়েকজন, ভারী অস্ত্র হাতে মুখ গম্ভীর করে বসে আছে। আজকে ব্যাপার কী? মাত্র একটা দিন যোগাযোগ বন্ধ রেখে ঘরে বাইরে বারবার শুধু অবাক হতে হচ্ছে। হোটেলে খেয়ে ফেরার পথে ভবিষ্যতের দুঃস্বপ্নটা আরো একবার ফিরে আসল।
প্রতি পদক্ষেপে অন্য বয়সের বিষণ্ণতার স্বাদ পাচ্ছিলাম। আমার মনের বয়স হঠাৎ মনে হচ্ছিল অন্তত এক দশক বেড়ে গেছে।
তখনো কিন্তু দিনের সবচেয়ে বড়ো চমক দেখা বাকি!
সন্ধ্যার পর ঘরে ঢুকে দেখি খালা ময়লা মেঝেতে মাথা নিচু করে বসে আছেন। বড়ো ঘোমটা টেনেছেন, তাই স্পষ্ট করে তাঁর মুখ দেখতে পেলাম না। রান্নাঘর, ডাইনিং রুম কোথাও আলো জ্বলছে না। তার মানে রাতেও রান্না হচ্ছে না। আমাকে দেখে সবাই একটু নড়েচড়ে বসলো। হয়তো অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে এই সালিশি বৈঠকের। খালা তেল মশলা আলু চাল চুরি করেন এমন গুরুতর অভিযোগে সালিশ ডেকেছেন আসলে তিনতলার এক বড়ো ভাই, উনি নার্সিং পড়ছেন দুই বছর হলো। তারো আগে রাজশাহীতে ছিলেন একেবারে শৈশবে। কলিজিয়েট স্কুলেও নাকি পড়েছেন কিছুদিন। এরপর তার পরিবার চলে যায় নাটোরের সিংড়া। আর আমাদের এই খালার বাড়ি সিংড়া-তাড়াশ সীমান্তে। হোস্টেলের ছোট ঘরে একই এলাকা থেকে আসা দুইজন মানুষের মধ্যে আজকে হঠাৎ করেই যেন অমোচনীয় ব্যবধান তৈরি হয়ে গেছে। অথবা বৈষম্যের এই দরিয়া-দীঘল দূরত্ব সবসময়ই প্রবল ছিল, আজকের আগে ওভাবে কখনো খেয়াল করা হয় নাই।
আসলে এতোদিন খেয়াল করার প্রয়োজনও পড়ে নাই। আমাদের গানপাগল খালা সবসময় চলতেন, বলতেন, কাজ করতেন একেবারে স্বাধীন ভঙ্গিতে। রান্নার ব্যাপারে আমাদের মতামত তিনি খুব একটা পাত্তা দিতেন না- বড়ো ভাইয়ের এই অভিযোগটা সত্য। কিন্তু যে যত্ন আর সময় নিয়ে প্রতিদিন কাজ করতেন, আমার কাছে তাঁর আন্তরিকতা সত্যিই বিরল মনে হতো।
খালাকে কিছু বলার সুযোগ দেয়া হইছে তো?
আমার এই এক বাক্যের প্রশ্নে অভিযোগকারী বড়ো ভাই রীতিমতো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।
তুই যে এইসব বলবি জানতাম তো! খালার আদরের তুমি, তোমাকে কাঙ্খে করে সিডি আইনা গান শুনায় প্রতিদিন! কী ঢঙ এই চোর মহিলার। জীবনে শুনি নাই পরের বাড়ি কাজ করার টাইমে কেউ গান শোনে। তাও আবার হিন্দি উর্দু!
খালা মোটেও সারাদিন হিন্দি উর্দু শুনতেন না। তাঁর সবচেয়ে প্রিয় অ্যালবাম হয়ে গিয়েছিল মূলত একটা বাংলাদেশি ছবির ক্যাসেট। আমি তাঁর সিডি প্লেয়ার নিয়ে মাঝেমধ্যে, আমার আধভাঙা ওয়াকম্যানটা খালাকে দিতাম।
মামা, ইয়ার ফোন কানে দিলি সুরসুরি নাগে। শরমও করে। মাইনষে কী কবো!
তিনি এরপর হঠাৎ করেই কথা থামিয়ে গানে ডুবে যেতেন। আশেপাশের সবকিছু তখন তাঁর কাছে তুচ্ছ। একদিন যেমন আমার দেয়া ছবির গানের অ্যালবামটা খালা পূর্ণ মনোযোগে শুনছিলেন। চুলায় বসানো মসুর ডাল উপচে পড়ে আগুন নিভে গেছে সেদিকে তাঁর খেয়াল নাই। দুই চোখ থেকে বরং গড়িয়ে পড়ছে স্মৃতিকাতর গীতল জলের ধারা। ওয়াকম্যান ফেরত দেয়ার সময় আমাকে জিজ্ঞেস করলেন একেবারে শেষ গানটার গায়িকার নাম তিনি ঠিক ধরেছেন কিনা। এই একটা গান খালা নাকি আজকে দশবার শুনেছেন, তবু মন ভরে নাই।
শিল্পীডোর গলায় কী দরদ গো, মামা! হুনলি পারেই আমার জনম-দুঃখী বুইনডোর কতা মনে আসে খালি। আমরা দুইজন পিটাপিটি। আমার জন্ম অয় যহুন তার দ্যাড় কি দুই বছর বয়স। আইজ প্রায় আট বছর অইলো দেহা নাই!
কেন কই থাকেন উনি? আপনাদের গ্রামের বাড়ি আসেন না ঈদে?
ঈদে আইসা কী কইরবো? কেউ তো নাই বাড়িত। আমার দুই ভাই বউ পোলাপাইন নিয়া বাপমায়ের ঘর দুয়ার ভাইঙ্গা চুইরা ভাগ কইরা নিছে নিজেগোর মতো। যাইয়া থাইকপো কই?
তাইলে রাজশাহী আসতে বলেন।
মামা, কম দুঃখে তো আর বুইনডো আমার দেশান্তরি অয় নাই। কুমিল্লা যায়া থাহে হেই আটানব্বইয়ের বন্যার আগ থাইক্যা। আমগোর কারুর হাথে ইচ্ছা কইরাই যোগাযোগ রাহে না।
গানেরও তো গল্প থাকে। সেই আখ্যানগুলো আবার অনেক সময় এতো তরল যে যেকোনো বাস্তবতার যেকোনো মানুষ দুনিয়ার যেকোনো প্রান্তে বসে চাইলেই গীতিকাহিনীগুলোর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে উঠতে পারে। অল্প কথার ছন্দ তালে গানের কবিরা কখনো কখনো উপন্যাস বা মহাকাব্যের মতো বিচিত্র অনুভূতি সৃষ্টির ক্ষমতা রাখেন। খালার বোনের কঠিনতম জীবন অভিজ্ঞতা আর তাঁর প্রিয়তম গানটার সহজ সরল বাণী আমাকে আরও একবার সিনেমার গানের শক্তি ও পরিধি নিয়ে ভাবতে বাধ্য করলো।
সুখ যদি পাও তুমি দিয়ে বেদনা
দূরে থাকো ফিরে এসো না
খালার বোনের বিয়ে হয় এক প্রবাসী পাত্রের সাথে। ঐ বছর দেশে দুই ইলেকশন হয়েছিল খালার স্পষ্ট মনে আছে। দ্বিতীয় ইলেকশনের ফল ঘোষণার সময় তারা বাড়ির সব বোনরা মেহেদিওয়ালা কাঁচা হাতে বসেছিল বাহির বাড়ির সিঁড়িতে। বিয়ের বাকি আয়োজনও এতো সুন্দর ছিল!
অর বিয়ার তুলনায় আমার বিয়ায়, কসম কইরা কই মামা, কিছুই আসলে আয়োজন করে নাই।
খালার চোখেমুখে আফসোসের চেয়ে আনন্দ বেশি। তবে মুহূর্তেই টের পেলাম সহোদর বোনের জন্য তাঁর আরো একবার হাহাকারে বুক ভেঙে যাচ্ছে। বিয়ের পর মাত্র আড়াই মাস টিকে ছিল বড় বোনের সুখের সংসার। এরপর নতুন বউ মাত্র এক মৌসুমে বলতে গেলে সবকিছু হারালো। স্বামী চিরতরে নিরুদ্দেশ হলো। মা মরে গেল। বাবা তো ছিলই না সেই শৈশব থেকে। শেষমেশ শ্বশুরবাড়ির আশ্রয়টুকুও গেল।
শ্যাষ সম্বল আমার ভাই দুইডোও খোঁজখবর নেয়া বন্ধ কইরা দিল। তাছাড়া অগোরও খুব ট্যাহা পয়সার টানাটানি, সংসার চলেনা।
এর মধ্যে বৈশাখ মাসে খালার বড় বোন একমাত্র কন্যা সন্তানের জন্ম দিল। অভাব অসহায়ত্বের একলা সংসারে সদ্যজাত ফুটফুটে মেয়েকে নিয়ে পিতা-মাতা-স্বামী-সংসারহারা বিরহকাতর বোন, সেই দিনগুলোতে তীর্থের কাকের মতো একটা চিঠির অপেক্ষায় থাকতো। রাত জেগে লেখা নিজের অতিদীর্ঘ পত্রের বদলে যদি এক বাক্যের জবাবও আসতো কোনদিন! বোনের ভাঙা শরীর আর শুকিয়ে যাওয়া চোখ দেখে খালা লুকিয়ে লুকিয়ে কতোবার যে কেঁদেছেন। এমন কেন হয় যে পৃথিবীর কিছু নির্দিষ্ট মানুষের দুঃখের কোন কূলকিনারা থাকেনা? খালার এতিম বড়ো বোন জীবনে একবারই কাউকে মনপ্রাণ সঁপে ভালোবেসেছিল। স্বামীর হাসিমুখ, প্রেমের অবুঝ আলাপ, ভবিষ্যতের স্বপ্ন-সুখ, শান্ত প্রতিশ্রুতি সব এক নিমেষে কেমন মিথ্যা হয়ে গেল!
যাবার আগে বলেছিলে হাতটি ধরে
প্রতিদিন চিঠি দেবে একটি করে
আজ কেন সেই কথা মনে রাখো না?
আমারে কি মনে পড়ে না?
চিঠি কেন আসে না?
চলবে…