শান্তিপুর গ্রামের শেষ প্রান্তে ছিল এক পুরনো কবরস্থান। দিনের বেলা জায়গাটা শান্ত হলেও রাত নামলেই সেখানে নেমে আসত এক ভয়াল নীরবতা। গ্রামের বয়স্ক লোকেরা বলত, “ওখানে এক অভিশপ্ত আত্মা বাস করে রহিম বেপারীর আত্মা।”
রহিম ছিল এক ধনী জমিদার, কিন্তু অত্যন্ত নিষ্ঠুর। জীবদ্দশায় সে গরিব মানুষের উপর অকথ্য নির্যাতন চালাত। মৃত্যুর পর কেউ তার দাফন করতে চায়নি। শেষে কবরস্থানের এক কোণে তাকে দাফন করা হয়, কিন্তু ভুল করে এক সাধু তার কবরের উপর এক তাবিজ পুঁতে দেন, যাতে আত্মা চিরতরে শাস্তি পায় না।
তারপর থেকেই শুরু হয় অদ্ভুত ঘটনা। রাত হলেই কবরস্থান থেকে শোনা যেত গোঙানির শব্দ, দেখা যেত আগুনের গোলা, আর অনুভব করা যেত শীতল হাওয়া। কয়েকজন সাহসী মানুষ কৌতূহলবশত রাতের বেলা কবরস্থানে গেলে তারা আর জীবিত ফেরেনি।
একদিন শহর থেকে রিজভী নামের এক যুবক আসে, যার কাজ ভূত-প্রেত নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা। সে গ্রামবাসীর কথা শুনে অবিশ্বাস করে, এবং এক রাতে সরাসরি চলে যায় সেই কবরস্থানে।
কবরস্থানে ঢোকার পর, হঠাৎ চারপাশে কুয়াশা ঘনিয়ে আসে, বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। রিজভী কবরটার সামনে যেতেই মাটি ফেটে বেরিয়ে আসে এক কালো ছায়া রহিমের আত্মা। চোখ আগুনের মতো লাল, গলা কাঁপানো, সে চিৎকার করে বলে, “আমায় মুক্ত করো, নয়তো তুমি আমার মতো চিরকাল এই কবরেই বন্দি থাকবে!”
রিজভী তাবিজটা খুঁজে বের করে ছিঁড়ে ফেলে। মুহূর্তে একটা আগুনের গোলা আকাশে উঠে গেল, আর কবরস্থানে ফিরে এলো নিস্তব্ধতা।
গ্রামের মানুষ বলে, সেই রাতের পর থেকে আর কেউ আত্মাকে দেখেনি...
কিন্তু কেউ কেউ এখনো রাতে কবরের পাশে ছায়া দেখতে পায়।