প্রথম দিন: জামাই দেখে ঠকে গেল শ্বশুর!
নোয়াখালীর প্রত্যন্ত গ্রামে হাশেম চাচা ছিলেন একজন খাঁটি কৃপণ মানুষ। তিনি বিশ্বাস করতেন, "যতো কম খরচ, ততো বেশি সুখ!" মেয়ের বিয়ের জন্য তিনি এমন ছেলে খুঁজছিলেন, যাকে রাখতে গেলে দুধ, মাংস, জামা-কাপড়—সব কিছুতেই খরচ কমবে। তখনই খবর পেলেন পাশের গ্রামের এক বোবা ছেলের কথা।
“বোবা জামাই? একদম সোনার খনি রে ভাই!” — হাশেম চাচা খুশি হয়ে উঠলেন। “কথা বলবে না মানেই ঝগড়া নাই, দাবি নাই, শুধু হাসি আর শান্তি।”
একটু দেখে-শুনেই বিয়ে হয়ে গেল। জামাইয়ের নাম বোরহান। দেখতে একেবারে ভদ্রলোকের মতো, কিন্তু মুখে কথা নেই। সারাদিন শুধু মাথা নাড়ায় আর ইশারা করে।
হাশেম চাচা এমন খুশি হলেন যে বিয়েতে ভাত না দিয়ে মুড়ি আর চিড়া পরিবেশন করলেন। আর গরুর মাংসের বদলে ডিম ভাজা।
গ্রামের লোকজন হাঁ করে তাকিয়ে থাকলো—“কি কৃপণ হাশেম চাচা! একেবারে বোবা জামাইয়ের মতো বোবা ভোজ!”
দ্বিতীয় দিন: বোবার চালাকি শুরু!
বিয়ের ঠিক দুইদিন পর, বোরহান একা বাজারে গেল। ফেরার সময় হাতে বিশাল এক থলে—ভরা ফল, দুধ, ডিম! লোকজন জিজ্ঞেস করলো:
“জামাই সাহেব, এত কিছু কিনলেন কিভাবে?”
সে মুখে কিছু না বলে পকেট থেকে একটা কার্ড বের করলো—“৩৩% ছাড়!”
বাজারদার হেসে বললো, “এ বোবা নয় ভাই, হাইলি ক্যালকুলেটিং জামাই!”
তৃতীয় দিন: ফ্রিজ ফাঁকা, পেট ভরা!
শ্বশুরবাড়ির ফ্রিজে রাখা ছিল ১০টা ডিম, ১ লিটার দুধ, আর কিছু ফল। পরদিন সকালে দেখা গেল ফ্রিজ ফাঁকা! আর জামাইমশাই বসে আছে সোফায়, ঠোঁটের কোণে দইয়ের গন্ধ!
শাশুড়ি চিৎকার দিয়ে উঠলো,
“আয় হায়, এই বোবা জামাই তো নিঃশব্দে সব গিলে নিচ্ছে! না চেয়ে খায়, না বলেই খায়!”
চতুর্থ দিন: নাটকে কান্ড!
গ্রামে তখন বড় নাটকের আয়োজন—‘বোবা রাজা’।
লোকজন বলল, “আরে আমাদের জামাইকেই নাও! একদম আসল বোবা রাজা!”
জামাই রাজি হয়ে গেল। নাটক শুরু হলো। প্রথমে ঠিকঠাক চলল। কিন্তু নাটকের ক্লাইম্যাক্সে হঠাৎ বোরহান দাঁড়িয়ে বলে উঠল,
“তুই মন্ত্রী না, তুই গাধা!”
পুরো মাঠ থেমে গেল।
গ্রামবাসী হাক দিল—“আহারে! বোবা কথা বলছে! ধরা খাইছে রে!”
পঞ্চম দিন: আসল রহস্য ফাঁস!
শাশুড়ি এবার সন্দেহে পড়ে গেলেন। এক রাতে ঘুমের ভান করে আড়ালে দাঁড়িয়ে দেখলেন জামাই আয়নায় দাঁড়িয়ে গান গাইছে:
“তুমি রবে নিরবে হৃদয়ে মোরে...”
শাশুড়ি চিৎকার দিয়ে পড়ে গেলেন খাট থেকে।
“ও মা! এই তো রেডিও জামাই!
ষষ্ঠ দিন: বউয়ের জবাবি অ্যাটাক!
লাবণী, জামাইয়ের বউ, এবার চুপ করে না থেকে মরিচ কুচি গুঁজে দিল জামাইয়ের মুখে।
জামাই লাফিয়ে উঠে চিল্লায়,
“মা গো পানি! গরম! মরিচ! ফু ফু!”
লাবণী টিপ্পনী কাটে:
“তো বোবা কই? তো দাদাগিরি করতেছ!”
সপ্তম দিন: আদালত বোমা!
বিষয়টি গড়ালো আদালতে। বিচারক বললেন,
“আপনি কি বোবা?”
বোরহান চুপ।
তখন বিচারক বললেন, “এই লাল মরিচ চিবিয়ে দেখুন!”
জামাই গলায় বললো,
“বস্, মাফ করেন! আমি আসলে একটু চুপচাপ মানুষ।”
আদালত কাঁপে হাসিতে!
শেষ অধ্যায়: বোবার বিজয়!
সব ফাঁস হলেও জামাইয়ের কর্মকাণ্ড এত বুদ্ধিদীপ্ত ছিল—সে ঘর গুছায়, বাজারদাম বোঝে, সব টাকায় সাশ্রয় করে, এমনকি মুরগিও পালে!
হাশেম চাচা একদিন বউকে বললেন,
“জামাই বোবা না, জামাই জিনিয়াস!”
শেষ কথা:
পুরো গ্রামে এখন একটা প্রবাদ চালু —
“বোবা জামাই মানে বোবা না, সে এক চলন্ত বোমা!”