আজকের বাংলাদেশে ইসলামী চেতনা আর ইসলামি রাজনীতির গ্রহণযোগ্যতা যে উচ্চতায় পৌঁছেছে, তা কোনো হঠাৎ ঘটে যাওয়া পরিবর্তন নয়। এটি দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ ও আদর্শিক শিক্ষা-চর্চার ফল—যার নেতৃত্বে ছিলো জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির।
একসময় এই দেশের আলেমদের বড় অংশই “ইসলামে রাজনীতি আছে”—এই কথা উচ্চারণ করতেন না। অনেকেই বলতেন, “রাজনীতি নাকি নোংরা জায়গা, ইসলাম এখানে নেই।”
কিন্তু সেই প্রাচীর ভেঙে দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তারা মানুষকে শিখিয়েছে—ইসলাম কেবল মসজিদে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা।
আজ যখন সাধারণ মানুষ পর্যন্ত বোঝে “ইসলামে রাজনীতি আছে”, তখন সেটার পেছনে দীর্ঘকালীন যে আদর্শিক আন্দোলন, তা স্বীকার না করাটা হবে ইতিহাস বিকৃতি।
🔸 ওয়াজ মাহফিলের ভাষা ও কাঠামো বদলেছে জামায়াতের প্রচেষ্টায়।
একসময় যেখানে মাহফিলে শুধুই অলৌকিক কিচ্ছা-কাহিনী থাকতো, সেখানে আজ তাফসীরুল কুরআন, সিরাতুন নবী, ইসলামী রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আদর্শের আলোচনা হচ্ছে। এর বড় কৃতিত্ব জামায়াতপন্থী দাঈ ও মুফাসসিরদের।
🔸 জেল-জুলুম, খুন-গুম, নিষেধাজ্ঞা—সবকিছু মোকাবিলা করে টিকে আছে এই দল।
যখন ইসলামী আদর্শের নামে রাজনীতি করাই ছিলো "রাষ্ট্রদ্রোহ", তখনই জামায়াত ছিল ভারত ও ইসলামবিদ্বেষী চক্রের মূল টার্গেট।
ভারতে কুরআন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে বাংলাদেশে জীবন দিয়েছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বামদের বর্বর হামলায় জীবন দিয়েছিলেন শহীদ আবদুল মালেক, যিনি ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার দাবি তুলেছিলেন।
🔸 বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নাস্তিক্যবাদী, নোংরা রাজনৈতিক সংস্কৃতি রুখে দিয়েছে ছাত্রশিবির।
তারা ছাত্রদের শুধু রাজনীতিতে নয়—নামাজে, দ্বীনদারিতে, দায়িত্বশীলতায় ফিরিয়েছে।
আজ যেই ক্যাম্পাসে ইসলামি চেতনা দেখা যায়, সেখানে এই প্রচেষ্টার ছাপ রয়েছে।
এখন দেখা যাচ্ছে—অনেকেই ইসলামের কিছু বই পড়ে কিংবা কিছু অনুবাদ পোস্ট পড়ে জামায়াতকে ইসলামের শিক্ষাদাতা হয়ে উঠতে বলছে!
যারা ফেসবুকে খেলাফত কায়েম করে ফেলছেন, তাদের প্রতি বলি—
আপনি সমালোচনা করতেই পারেন, তবে তা যেন হয় উন্নতির জন্য, হিংসা কিংবা ইতিহাস অস্বীকার করে নয়।
জামায়াতে ইসলামী কি নিখুঁত? না।
কিন্তু তারা ইতিহাসের পরীক্ষিত দল—যারা দেশের ইসলামপন্থীদের মধ্যে প্রথম কাঠামোগত আদর্শিক ও সাংগঠনিক রাজনীতির ভিত্তি গড়েছে।
📌 সমালোচনার আগে ইতিহাস জানুন। রক্তের ইতিহাস, ত্যাগের অধ্যায়, আদর্শিক প্রেরণার গল্পগুলো বুঝুন।
তারপর বোঝা যাবে—কে ইসলাম চর্চা করে, আর কে ইসলাম দিয়ে শুধু ফেসবুক ঝড় তোলে।