অনেক বছর আগের কথা। একটি রাজ্যে ছিল এক রাজা। তিনি ছিলেন খুব অলস এবং কিপটে। তবে তিনি যা কথা দিতেন তা রাখতেন এবং কথা মতো কাজ করতেন। তার রাজ্যের একজন কৃষক নাম তার কালু মিয়া। কালু মিয়া খুব গরীব। তার পূর্বপুরুষের কিছু জমি ছিল সেই জমি চাষাবাদ করেই তিনি তার সংসার চালাতেন। কালু মিয়ার দুই ছেলে এবং এক মেয়ে ও তার স্ত্রী নিয়ে তার অভাব অনটনের সংসার চললেছি মোটামোটি ভালোই। কিন্তু হঠাৎ এক বন্যায় তার জমিসহ তার অনেক প্রতিবেশী ভাইয়ের জমির ফসলও পানিতে ডুবে যায়। এখন সে কি করবে কিছু ভেবে পাচ্ছেন না। কিন্তু হঠাৎ সোনা যায় রাজার লোকেরা ঘোষণা করছিলেন যে, রাজাকে গল্প শোনাতে হবে কিন্তু গল্প শোনানোর জন্য রয়েছে এক কঠিন শর্ত। শর্তটি হল যে রাজাকে গল্প শোনাবে সে যদি গল্প বলতে বলতে রাত থেকে সকাল করতে না পারে তাহলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিবেন। আর যদি গল্প শোনাতে শোনাতে রাত থেকে সকাল করতে পারে তাহলে তাকে ১০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা পুরস্কার করা হবে। এমন কথা শুনে কৃষক কালুর মাথায় বুদ্ধি এলো এবং সে মনে করলো যে সে গল্প বলে রাত থেকে সকাল বানিয়ে দিতে পারবে। রাজার শত সাপেক্ষে সেই বুদ্ধিমান কৃষক রাজাকে গল্প শোনাতে গেল। বুদ্ধিমান কৃষক রাজার কাছে গিয়ে গল্প শোনাতে শুরু করলো। বুদ্ধিমান কৃষক রাজাকে বলল, এক জেলে নদীতে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হলো। তার হাতে এক বিশাল জাল ছিল। সে দেখল এক বিরাট মাঠে অনেক ভাত পড়েছিল। এবং সে আরো দেখতে পেল যে অনেক গুলো পাখি সেই ভাতগুলো খাচ্ছিল। জেলের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এক থেকে দের লক্ষ পাখি ছিল। জেলে পাখি গুলোর উপর তার বিশাল জাল ছুড়ে মারলেন। এবং সকল পাখি সেই বিশাল জালে আটকে গেলো। জেলে জানতো না যে তার জালের এক অংশে ছিল একটি ছিদ্র। এবং সেই ছিদ্র দিয়ে একে পর এক পাখি চলে যেতে লাগলো। তখন রাজা বললেন তার পর কি হলো? বুদ্ধিমান কৃষক কালু বলতে লাগলো যে তার পর একের এক পাখি ফুরুত ফুরুত করে চলে যেতে লাগলো। এভাবে বুদ্ধিমান কৃষক কালু ফুরুত বলতে বলতে রাত থেকে সকাল বানিয়ে ফেললো। সর্বশেষে রাজা তার শর্ত অনুযায়ী কৃষক কালুকে ১০ হাজার স্বর্ণ মুদ্রা তাকে পুরস্কার দেয়। এবং সেই পুরস্কারের স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে সে এবং তার প্রতিবেশী কৃষকদের পরিবারের লোকজন সুখে থাকেন। এবং বন্যার পানি চলে যাবার পর সেই স্বর্ণ মুদ্রা দিয়ে জমিতে সার দিয়ে জমি চাষাবাদ করে ভালোভাবে জীবন পরীচলনা করেন।